"মা"- সম্বোধনের আজ পঞ্চম দিন!

in Incredible India8 days ago

1000066324.jpg

এর আগেও উল্লেখিত বাঙালির দুর্গোৎসব শুধু উৎসব নয়, একটি উদ্দীপনা সাথে আবেগ!
আমি অনেক ছোটো বয়স থেকেই "মা" ডাক থেকে বঞ্চিত!

আজকে ভারতীয় সময় চারটে নাগাদ একটু বাজারের দিকে গিয়েছিলাম। আজকে পঞ্চমী কাজেই মায়ের আগমনী হয়েছে বটে তবে তাকে সম্পূর্ণ অস্ত্রে সুসজ্জিত করা এখনও সম্পাদিত হয়নি।

যেহেতু এই সময় খানিক বেলা ছোটো হয়ে গেছে, তবুও দেখলাম যে বাড়িতে মায়ের পুজো হয়, সেখানে তালা!

এরপর এগিয়ে গেলাম একটি ক্লাবের পুজোর দিকে, সেখানে দেখলাম মা তার সন্তানদের নিয়ে বিরাজ করছেন বটে, তবে এখনো তার সাজ সজ্জা সম্পূর্ণ হয়নি।

যথারীতি, এক্ নিমেষেই মা শব্দ উচ্চারণের সাথে সাথেই চোখ ভিজে আসলো! এই সেপ্টেম্বর মাসের নয় তারিখেই আমার জন্মদাত্রী মা আমাদের জীবন থেকে চিরতরে হারিয়ে গিয়েছিলেন!

1000066320.jpg

কাজেই, শব্দটি উচ্চারণ করতেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলাম!
মায়ের সাথে তার সন্তানেরা সুরক্ষিত এটা ভেবে বড্ডো একলা বোধ করছিলাম।
তবে মা দূর্গা জগৎ জননী, তাই তিনি কেবল চার সন্তানের মধ্যে আবদ্ধ নন!

ইহজগতে সকল প্রাণীর তিনি মা! প্রণাম সেরে, ছবি নিয়ে এগিয়ে গেলাম বাজারের দিকে, কারণ আমি জানি ওখানের একটি ক্লাবেও পুজো হয়।

1000066322.jpg

সেখানে যেতে যেতে দেখলাম মোট একটি আলো প্রজ্জ্বলিত হয়েছে, সেটার ছবি নিয়ে ক্লাবের ভিতরে ঢুকে মায়ের ছবিসহ, ভিডিও করে নিলাম।

এই সময় ভিড় থাকবে না জানতাম, অতিরিক্ত ভিড়ে ছবি তোলা, ভিডিও করা দুষ্কর।
দেখি এবার যদি মায়ের ইচ্ছে থাকে, কলকাতার কয়েকটি পুজো দেখবার সৌভাগ্য যদি হয়।

1000066321.jpg

কলকাতার এটি সবচাইতে বড় উৎসব, কিছু পুজো নব্বই বছর ধরে চলছে, কিছু আশি বছরের উপরে, কাজেই এই পুজোকে কেন্দ্র করে কলকাতা বাসীর এক অন্য আমেজ!

সবচাইতে মজার বিষয় এই দুর্গা পুজোই এক্ একটি রাজ্যে এক্ এক্ ভাবে সম্পাদিত হয়, এই যেমন ধরুন উদাহরণস্বরূপ গুজরাটে নবরাত্রি!

ভাষা ভিন্ন ভিন্ন তবে উদ্দীপনায় কোনো খামতি এই সময় ভারতের কোথাও কমতি নেই!
তবে কলকাতাবাসীদের এই সময়টা একটা আলাদা আমেজ থাকে সকলের দৈনন্দিন জীবনে।

সেটা ধরুন এই আগামীকাল থেকে শুরু হবে অধিক পর্যায়ে। খাদ্যরসিক বাঙালির শুধু অজুহাত চাই।

আর এই পুজোর মরশুমে সকাল থেকে রাত চলবে বিভিন্ন স্বাদের খাবারের আয়োজন।
এমনিতেই মায়ের ভোগের আয়োজন চলে যারা বাড়িতে পুজো করে থাকেন।

কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজোর মধ্যে লাহা বাড়ি, মল্লিক বাড়ি ইত্যাদি বিখ্যাত।
লাহা বাড়ির পুজোর একটি ছোট্ট নিয়ম উল্লেখ করছি, জানিনা কলকাতা বাসীদের কতজন বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল!

1000066319.jpg

আমরা মোটামুটি সকলেই জানি গণেশ পুজো দিয়ে পুজোর আগমনী বার্তা শুরু।
তো এই বাড়ির চাতালে(বাড়িটি এখনও পুরোনো কলকাতার বাড়ির আদলেই রয়েছে) রেখে পূজিত হয়, যেটি মৃত্তিকা শিল্পী ছোটো আকারে গড়ে থাকেন।
এরপর মা দুর্গার প্রতিমা তৈরির সময় যখন তার পুত্র বড়ো গণেশ তৈরি হয়, তখন তার পেটের মধ্যে এই ছোট পূজিত গণেশ পুনরাস্থপিত করা হয়।

পূর্বেই উল্লেখিত, কলকাতায় বহু বছরের ইতিহাস সহ একাধিক ঐতিহ্যের গাঁথা লুকিয়ে রয়েছে।

কেউ তার খবর রাখেন, আর বেশিরভাগ এখন থিম পুজো নিয়ে পুরস্কার যেটার রেসে সামিল।
আমার কাছে বনেদিয়ানা শব্দটি বিশেষ অর্থ বহন করে।

আর ঠিক সেই কারণেই, আধুনিক অনেককিছুর সাথে আপোষ করে নিলেও, ইতিহাসের প্রতি টান অব্যাহত।
পরিশেষে সকলের জীবন মায়ের আশীর্বাদে মঙ্গলময় হয়ে উঠুক এই প্রার্থনা করি।

1000010907.gif

1000010906.gif

Sort:  

Congratulations! Your post has been supported by our team

InShot_20250801_084743252.jpg

Curated by @aviral123

Loading...