Better Life With Steem | The Diary game ,May ,2, 2025।শ্রমিক দিবসের ছুটিতে নরসিংদীর মাঝের পাড়া গ্রামে বেড়াতে যাওয়া।
Edited by Canva |
---|
ক'দিন থেকেই আমার হাসবেন্ড নরসিংদী যাওয়ার কথা বলতেছিলো কিন্তু আমি চুপচাপ ছিলাম খানিকটা। কিন্তু গত রাতে খানিকটা জোর দিয়ে বলাতে শেষ পর্যন্ত বলেছি যে যাবো।
তাই সকালে ঘুম থেকে উঠেই প্রথমে নরসিংদী যাওয়ার কথাই মাথায় এসেছে। কেন যেন একদমই যেতে ইচ্ছে করতেছে না। অনেকটা অনুরোধে ঢেকি গেলার মতো অবস্থা আমার । সাধারণ নতুন কোথাও গেলে আমার ভালো লাগে কিন্তু এবার এমন লাগার কারণ খুঁজে পাচ্ছি না।
মূলত আমার অলসতার কারণেই বের হতে হতে এগারোটার বেশি বাজিয়ে ফেললাম। আমরা তিনশফিট দিয়ে কাঞ্চনব্রিজ পার হয়ে যাবো এমনই কথা ছিল। কিন্তু রাস্তার যে এমন বেহাল অবস্থা এটা আমাদের জানা ছিল না। রাস্তায় বিশাল কর্মযজ্ঞ চলতেছে। দেখে মনে হলো এক বছরেও ঠিক হবে না। কিন্তু কাজ শেষ হলে দেখার মতো রাস্তা হবে এতে কোনো ভুল নেই । ভাঙ্গাচুরা রাস্তা ধরে গাড়িসহ অনেকটা নাচতে নাচতে আমরা এগিয়ে গেলাম।
আসলে নরসিংদীর গাউসিয়াতে আমাদের ছোট্ট একটা দোকান আছে।সেই দোকান যে ভাড়া নিয়েছে তার বাড়িতে যাচ্ছি।
ভদ্রলোক এক বছরের বেশি সময় ধরে তার বাড়িতে আমাদেরকে যেতে বলতেছেন। যাবো যাবো করে যাওয়া হচ্ছে না। এবার তিনি জোর দিয়ে বলেছেন আমরা যেন অবশ্যই আজকের দিনে তার বাড়িতে যাই। তার আন্তরিকতার কাছে শেষ পর্যন্ত আমরা হার মানতে বাধ্য হয়েছি।
নরসিংদীর উপর দিয়ে অনেকবারই আমি গিয়েছি কিন্তু এই জায়গার কোনো গ্রামে যাইনি আগে। এই জায়গাটার বেশ বৈচিত্রময়। একদিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এলাকা আবার একই সাথে প্রচুর সবজিবাগান।
গাউসিয়াতে আসার পরে আমাকে আমার হাসবেন্ড একটা মার্কেট দেখিয়ে বললো যে এর ভেতরেই আমাদের দোকান। আমার শশুর ছিলেন সুতার ব্যাবসায়ী,আর তার সূত্র ধরেই এই দোকান। এখান থেকেই নাকি সারা বাংলাদেশে হোলসেল মার্কেটে শাড়ি ,লুঙ্গি ,গামছা ,বিছানার চাদর ইত্যাদি সাপ্লাই দেয়া হয়ে থাকে।
আর এই দোকানগুলোর একটা বৈশিষ্ট হলো এই দোকান শুরু হয় ভোরবেলা থেকে আর শেষ হয়ে যাই বেলা ১০/১১ টার মাঝে। আর সপ্তাহে দুইদিন এই দোকান খোলা থাকে। তবে এবারই প্রথমবার শোনলাম যে ,ইদানিং পুরো সপ্তাহ জুড়েই দোকান খোলা থাকে শুধুমাত্র একদিন বন্ধ থাকে।
আমার শশুর ছিলেন সুতার ব্যাবসায়ী,আর তার সূত্র ধরেই এই দোকান। গাউসিয়া পার হয়ে আমরা আড়াইহাজার এলাকাতে প্রবেশ করে এগিয়ে চললাম কালীবাড়ির উদ্দেশ্যে। আমার হাবি এই সময়ে দেখলাম বেশ স্মৃতিকাতর হয়ে উঠলো। কারণ আমার শশুর এই এলাকার অনেকের কাছে সুতা বিক্রি করতেন ও তার আসা-যাওয়া ছিল।তার মুখে অনেকবার এই এলাকার নাম শুনেছে আমার হাবি।
তবে শীগ্রই তার এই স্মৃতি কাতরতা কমে গেলো। কারণ আমাদের পুরাতন সমস্যা গ্রামের ভেতরে রাস্তা খুঁজে না পাওয়া। মানুষজনকে জিজ্ঞেস করতে করতে অবশেষে গন্তব্যে পৌছালাম। মামা আগে থেকেই রাস্তায় এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
তিনি আমাদেরকে তার বাড়িতে নিয়ে গেলেন।গ্রামের নাম মাঝের পাড়া। যাওয়ার পথে ছোট ছোট ঘরের ভেতরে দেখলাম কাপড়ের গ্রে তৈরী হচ্ছে। এগুলোই ব্যাবসায়ীরা নিয়ে ইচ্ছেমতো প্রিন্ট করে বা রং করে বিছানার চাদর ,সালোয়ার কামিজ ইত্যাদি তৈরি করে থাকেন। এখান থেকেই সারা বাংলাদেশে সাপ্লাই দেয়া হয়। মামার বাড়িতেও নাকি ডাইং এর কাজ হতো আগে।
মামার আন্তরিকতা দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গেলাম আমরা।১ ১ রকমের আইটেম দিয়ে খেতে দিলো আমাদেরকে। বছরের প্রথম কাঁঠালও এখানেই খেলাম আমরা। খাওয়ার পরে আমরা হাটতে হাটতে মামার বাড়ির পেছনের সবজি বাগানে গেলাম আমরা। একটা জিনিস দেখে ভালো লাগলো যে গ্রামে ঢাকার তুলনায় অনেক বেশি ঠান্ডা।
সেখান থেকে ফিরে আমরা ঢাকার পথে রওনা দিলাম। ঢাকার বাইরে কোথাও গেলে আমরা হাসবেন্ড পাগল হয়ে যায় জিনিসপত্র কেনার জন্য। এখানেও তাই হলো। দেখলাম বাজারের একমাথা থেকে আরেক মাথায় হাঁটাহাঁটি বললে ভুল হবে বলা যায় দৌড়াদৌড়ি করতেছে।
কল দিয়ে বললাম বেশি কিছু যেন না কিনে কারণ ফ্রিজে রাখার জায়গা হবে না। কিন্তু তারপরও অনেক কিছু কিনে আনলো কিছুটা মন খারাপ নিয়ে। কারণ আমি তাকে তেমন কিছু কিনতে দেই নাই। এরপর বাসায় ফেরত আসলাম।
অল্প সময়ের জন্য যাওয়া হলেও মামার এই আন্তরিকতা মনে থাকবে সবসময় ।
Camera | iPhone 14 |
---|---|
Photographer | @sayeedasultana |
Location | Dhaka,Bangladesh |
সত্যি কথা বলতে কি জানেন গ্রামীণ পরিবেশের সাথে কোন কিছুরই তুলনা হয় না, আমি শহরে থেকেছি কয়েকটা বছর কিন্তু আমার কাছে সব মিলিয়ে মনে হয় গ্রামের মত শান্তি কোন জায়গাতেই নেই, এই যেমন ধরুন বছরের প্রথম কাঁঠাল খাওয়া তার উপরে আবার অসম্ভব সুন্দর দৃশ্য ক্যামেরা বন্দি করা সেই সাথে এরকম টাটকা টাটকা সবজি এগুলো শুধু আপনি গ্রামেই পাবেন খুব ভালো লাগলো পোস্টটি পড়ে।
আসলে গ্রামে থাকার শান্তিটাই অন্যরকম একটা আলাদা অনুভব করা যায় আমরা শহরে থাকি কিন্তু হাতের কাছে আমাদের সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো পাওয়া যায় না আর গ্রামে শাকসবজি টাটকা সমস্ত সবকিছুই পাওয়া যায় আসলে এই বাজারটা সকাল দশটা এগারোটায় শেষ হয়ে যায় এ বাজারটা নাম আমিও শুনেছি এবং আমার আব্বা ওখান থেকে অনেক কিছু কেনে আনে কারণ আমাদেরও দোকান আছে নামটা আসলে বাজারের মনে নেই তো আপনার পোস্টটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো আপনার কাটানো মুহূর্তগুলো এবং কিছু গ্রাম ও দৃশ্য আমাদের মাঝে তুলে ধরবার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
ওইটা আসলে বাজার না বিশাল একটা মার্কেট।এটা নরসিংদির ভুলতা গাওসিয়াতে অবস্হিত। পাইকারি দামে জামাকাপড় ,বিছানার চাদরে ইত্যাদি জিনিস পাওয়া যায় । যেখান থেকে সারা বাংলাদেশের সাপ্লাই দেয়া হয়।।আপ্নার আব্বা ওই মার্কেট থেকে এগুলো কিনে ও কাপড় এর বিজনেস করে জেনে খুশি হলাম।
চমৎকার মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ।ভালো থাকবেন সবসময় ।