অনলাইনে মাছ কিনতে গিয়ে প্রতারনার শিকার হয়ে যেভাবে টাকা উদ্ধার করলাম ।-2
গতকালের পোস্টেই আমি লিখেছিলাম যে কিভাবে প্রতারকচক্রের পাল্লায় পড়েছিলাম। তারপর কি হলো আজকে সেটাই লিখবো।
আমার কাছে যে টাকা চাচ্ছিলো তাকে বলি যে ,আপনাকে টাকা দিলে আমাকে আপনি যে মাছ দিবেন তার গ্যারান্টি কি। সে আমাকে বলে যে তাহলে আপনি মাছওলার সাথে কথা বলেন। মাছওয়ালাকে কল দিলে সে জানায় ,যে টাকাটা দিলেই মাছ দিয়ে যাবে।
আমি দিবো কি দিবো না ভেবেও শেষ পর্যন্ত টাকাটা বিকাশের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেই।
পরমুহূর্তেই সে আমাকে কল দিয়ে জানায় যে আমি ১ টাকা বেশি দিয়েছি যার কারণে ওদের সার্ভার লক হয়ে গেছে। এখন ৫ মিনিটের মধ্যে সঠিক টাকাটা দিলে ওরা আমাকে আসল টাকাটা ব্যাক দিবে।
সত্যি বলতে আমি এধরণের কথা আগে শুনি নাই ,আর আমি সঠিক পরিমানে টাকা দিয়েছি।কিন্তু আমার কাছে তখন চিন্তা করার জন্যও সময় নাই। আমার মাথা আসলেই ওই মুহূর্তে কোন কাজ করতে ছিল না। তখন বাসায় আমার ছোট ছেলে ছিল ওকে এটা বলার পরে ও আমাকে বলে যে কখনো কখনো এরকম লক হয়।
কিছুদিন আগে 'বিআরটি ' তে টাকা দিতে গিয়ে প্রথমবার লক হয়েছিল যার কারণে দুবার টাকা দিতে হয়েছে। ওরা দ্বিতীয়বার টাকা দেয়ার পরে পরেরদিন টাকা ফেরত দিয়েছে।
ওর কথা শুনে আবার টাকা বিকাশ করি। পরমুহূর্তেই আমাকে জানায় যে ,আমি সময় পার করে টাকা দিয়েছি এখন ৫৮৯৯ টাকা ওদেরকে দিলে ওরা আমাকে টাকা ফেরত দিবে। তখন আমি পুরোপুরি নিশ্চিত হই যে ,আমি আসলে প্রতারকের পাল্লায় পরেছি।
এর পরে আমি আর কোনো টাকাই দেই নাই। এরই মাঝে আমার ছেলে খুব দ্রুত বিকাশের কাছে কমপ্লেইন করে। আসলে এরকম ক্ষেত্রে এটাই সবচাইতে বেশি জরুরি।
আপনি যদি কখনো কোনো প্রতারকের পাল্লায় পড়েন তাহলে আপনি যে ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করেছেন তাদেরকে উপযুক্ত প্রমান দিয়ে কমপ্লেইন করবেন যত দ্রুত সম্ভব। কারণ যদি একবার টাকা ক্যাশআউট করে ফেলে তাহলে টাকা ফেরত পাওয়ার আশা কম।
বিকাশ সাথে সাথে তার একাউন্ট ফ্রিজ করে ফেলে আমাকে জানায় যে ,আগামী ৪ দিনের মাঝে তারা তদন্ত করে আমার সাথে যোগাযোগ করবে।
দুইদিন পরে বিকাশ থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করে বলে যে ,আমি যেন থানায় একটা জিডি করে তাদের অফিসে যোগাযোগ করি। এরপর জিডি করে বিকাশের অফিসে গেলে তারা আমাকে বলে যে ,তারা ৫৭৫৭ টাকা উদ্ধার করতে পেরেছে এবং এই টাকাটা আমি আগামী ২৭ দিনের মাঝে পেয়ে যাবো।
এই ঘটনা আমার অভিজ্ঞতা হলো সাথে সাথে ব্যাংকে যোগাযোগ করতে হবে। আমার পরিচিত পুলিশ সদস্য আমাকে বলেছে জিডি করে আসলে তেমন কোনো লাভ হয় না কারণ এমন অসংখ্য জিডি তাদের কাছে পরে আছে।
সবচেয়ে বড় কথা এদের ধরা খুব একটা সম্ভব হয় না কারন এরা নিজের এনআইডি ব্যবহার করে না ।হয়তো দেখা যায় একজন কাজের বুয়ার কিংবা দরিদ্র কোন মানুষের সাথে চুক্তির মাধ্যমে একাউন্ট করে থাকে ।যার কারণে আসল অপরাধী ধরা ছোয়ার বাইরেই থেকে যায় ।
আমাকে এটাও বলেছে যে তুমিতো তবে দ্বিতীয়বার টাকা দিয়ে থেমে গেছো কিন্তু অনেক মানুষই আছে যারা কয়েক হাজার টাকার জিনিস কিনতে গিয়ে লক্ষ টাকাতেও পৌঁছে গেছে। এই ধরণের কথা আমি বিকাশের অফিসেও শুনতে পেয়েছি।
তাই আমার পরামর্শ হলো কখনোই ক্যাশ অন ডেলিভারি ছাড়া অনলাইনে কেনাকাটা করবেন না। আর যদি আমার মতো বোকামি করে প্রতারক চক্রের পাল্লায় পরেই যান তাহলে দ্রুত ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করুন। তাহলে আপনার টাকা ফেরত পাওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যাবে।
বিকাশ , সোশ্যাল মিডিয়া ও আমার ফোন থেকে নেয়া স্ক্রিনশট ।
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦
◦•●◉✿ Thanks Everyone ✿◉●•◦