"মালাই চিকেন (MALAI CHICKEN RECIPE)"
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি খুব ভালো কেটেছেন।
যারা আমার গতকালের পোস্ট পড়েছেন তারা জানেন এই মুহূর্তে আমাদের বাড়িতে অশৌচ চলছে। তাই নিয়ম মাফিক আগামী আরও ১০ দিন আমাদের নিরামিষ খাওয়া দাওয়া চলবে।
নিরামিষ খাবার খেতে আমার খুব অসুবিধা হয় এরকম নয়। তবে একটানা এতোদিন নিরামিষ খেতে হবে, তাও কিছু সামাজিক কুসংস্কারের জন্য, এটাতেই একটু খারাপ লাগছে। তবে যাইহোক সমাজে থাকতে গেলে, কিছু নিয়ম নিয়ে বিতর্ক না করে সেটা মেনে নেওয়াই ভালো।
আমিষ খাওয়া হোক বা না হোক আজ আমি আপনাদের সাথে একটা আমিষের রেসিপি শেয়ার করবো, যেটা আমি কয়েকদিন আগে তৈরি করেছিলাম। রেসিপিটির নাম হলো মালাই চিকেন।
আসলে চিকেন কষা রান্না করলে শুভ একেবারেই খেতে চায় না। আর আমি যেহেতু মটন খাই না তাই বাড়িতে বেশিরভাগ সময় চিকেনই আসে। তাই সেটাকেই একটু অন্যরকম ভাবে রান্না করার চেষ্টা করি। এ রকমই একটি রেসিপি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, চলুন তাহলে শুরু করা যাক-
|
---|
প্রথমেই আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো মালাই চিকেন রান্না করার জন্য আমি কি কি উপকরণ ব্যবহার করেছিলাম,-
|
---|
প্রথমে মাংসগুলোকে ভালো করে ধুয়ে জল ঝরানোর জন্য রাখতে হবে। আমি সব সময় জল ঝড়িয়ে তারপর মাংস ম্যারিনেট করতে পছন্দ করি এই কারণে প্রথমে মাংসের যেকোনো রেসিপি করার সময় আমি মাংসগুলোকে একটা ঝুড়ির মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ রেখে তারপর বাদবাকি উপকরণ গুলো গুছিয়ে নিই।
এরপর আমি প্রয়োজন অনুসারে আদা রসুনের খোসা ছাড়িয়ে, প্রয়োজনীয় কাঁচা লঙ্কা তার মধ্যে দিয়ে একসাথে পেস্ট তৈরি করে নিলাম। আর বাদবাকি সমস্ত জিনিস যেমন পেঁয়াজ কুচিয়ে রাখলাম, বিরিয়ানি মশলা, টক দই, লবণ কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, হলুদ গুঁড়ো সবকিছু একটা জায়গায় নিয়ে নিলাম।
এরপর একটা বাটিতে জল ঝড়ানো চিকেনগুলো নিয়ে, তার মধ্যে পরিমাণ করে প্রথমে লবণ, হলুদ, কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো, বিরিয়ানি মশলা, আদা রসুন কাঁচালঙ্কা বাটা, আর সবশেষে টক দই দিয়ে খুব ভালো করে ম্যারিনেট করে রাখলাম। মাংস ম্যারিনেট করে যত বেশিক্ষণ রাখা যাবে ততই ভালো। তবে আমার কাছে খুব বেশি সময় না থাকার কারণে আমি ২০ মিনিট মতো ম্যারিনেট করে রেখেছিলাম।
ততক্ষণে আমি গ্যাস জ্বালিয়ে তাতে কড়াই বসিয়ে, কিছুটা পরিমাণে ঘি দিয়ে, তার মধ্যে কুচিয়ে রাখা পেঁয়াজ দিয়ে দিলাম এবং গ্যাসের ফ্লেমটা কমিয়ে পেঁয়াজ গুলোকে বেশ কিছুক্ষণ ভালো করে ভেজে নিলাম। পেঁয়াজের রং পরিবর্তন হওয়া শুরু করলে, তার মধ্যে কাজুবাদাম ও পোস্ত দানা দিয়ে আরো দু মিনিট এদিক ওদিক করে ভেজে, সমস্ত মিশ্রণটা আমি নামিয়ে রাখলাম। একটুখানি ঠান্ডা হওয়ার পর আমি মিক্সিতে সেটাকে ভালো করে পেস্ট করে নিলাম।
যে কড়াইতে আমি পেঁয়াজ গুলো ভেজেছিলাম, তার মধ্যেই বাকি যেটুকু ঘি ছিলো সেটা দিয়ে, ম্যারিনেট করে রাখা চিকেনের পিসগুলোকে এক এক করে ঘি এর মধ্যে দিয়ে দিলাম। এদিক ওদিক করে ভেজে নিলাম। এই ভাজার সময়ে চিকেনটা অর্ধেক সেদ্ধ হয়ে যাবে, কারণ যেহেতু টকদই দিয়ে ম্যারিনেট করা হয়েছিলো, তাই সেদ্ধ হতে খুব বেশিক্ষণ সময় লাগবে না। আরও যদি কিছুক্ষণ আপনারা ম্যারিনেট বেশি করতে পারেন, তাহলে আরও তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে।
এরপর আমি ম্যারিনেট করা পাত্রের মধ্যে যেটুকু মশলা ছিল সেটুকু দিয়ে দিলাম। আর তারপর আগে তৈরি করে রাখা ভাজা পেঁয়াজ, কাজুবাদাম ও পোস্ত দানার পেস্ট দিয়ে ভালো করে বেশ কিছুক্ষণ কষে নিলাম। এই সময় আরও বেশ কিছুটা কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো এবং হলুদ গুঁড়ো দিয়ে গ্যাসের ফ্লেম কমিয়ে খুব ভালোভাবে কষাতে হবে এবং ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ রান্নার রংটাও পরিবর্তন হতে থাকবে।
![]() |
---|
এইভাবে মাংসটা ততক্ষণ পর্যন্ত কষতে হবে যতক্ষণ পর্যন্ত রং পরিবর্তন না হয় এবং তেলটা উপরে না ভাসে। যেহেতু এতে ঘি ও টক দই ব্যবহার করা হয়েছে, তাই বেশ কিছুক্ষণ বাদে দেখা যাবে ওপরে তেল ভাসছে। তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে মাংসটা নিচে লেগে না যায়। তাই মাঝে মধ্যেই ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে। এই ভাবেই মাংসটা সম্পূর্ণ সেদ্ধ হয়ে যাবে।
এই পর্যায়ে রান্নাটা একেবারেই শেষ হয়ে আসবে। তবে নামানোর আগে বেশ কিছুটা পরিমাণ ফ্রেশ ক্রিম নিয়ে, সেটাকে খুব ভালো করে ফেটিয়ে, উপর থেকে দিয়ে গ্যাসটা বন্ধ করে ঢাকা দিতে হবে। পরিবেশনের আগে ফ্রেশ ক্রিমটা ভালোভাবে চিকেনের সাথে মিশিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মালাই চিকেন।
পরিবেশনের আগে যখন আপনারা ঢাকনাটা তুলবেন, তখন চিকেন থেকে এতো সুন্দর একটা গন্ধ পাবেন, যেটা লিখে হয়তো বোঝানো সম্ভব না। আমি আসলেই রেসিপিটা নিজের মতন করেই করেছি, তবে খেতে অসম্ভব ভালো হয়েছিলো। আপনারাও একবার ট্রাই করতে পারেন। আশা করছি চিকেনপ্রেমী মানুষদের এই রেসিপিটা বেশ পছন্দ হবে।
যাইহোক আপনাদের কেমন লাগলো রেসিপিটা পড়ে মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। প্রত্যেকে ভালো থাকবেন। আপনাদের সকলের সুস্থতা কামনা করে আজকের পোস্ট এখানে শেষ করছি। শুভরাত্রি।