"বৃষ্টিমুখর একটি দিনের আনন্দঘন কিছু মুহূর্তের গল্প - দ্বিতীয় পর্ব"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরছি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলের আজকের দিনটি খুব সুন্দর ভাবে কাটছে। সকাল থেকে বৃষ্টির আবহাওয়া আমাদের এখানে। মনটাও বেশ ভালো লাগছে।
যাইহোক গত পরশু দিনের পোস্টে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম, বান্ধবীর বাড়িতে সকলে একত্রিত হওয়ার প্রথম পর্বের অংশটুকু। আজ দ্বিতীয় পর্বের গল্প আপনাদের সাথে এই পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করতে চলেছি।
প্রথম পর্বে শেয়ার করেছিলাম ফুচকা খেয়ে সঙ্গিতাদের বাড়িতে আসার পর, রান্নাবান্না শেষ করা পর্যন্ত। আসলে সেদিন খুব বেশি কিছু রান্না করা হয়নি। ফ্রাইড রাইস ও চিকেন কষা রান্না করা হয়েছিলো। রান্নাবান্না শেষ হতে হতেই বাইরে আবার প্রচন্ড বৃষ্টি শুরু হয়েছিল এবং প্রায় ১৫-২০ মিনিট পর্যন্ত এক নাগাড়ে মুষলধারে বৃষ্টি হয়েছিলো।
সেই সময় আমরা সঙ্গীতাদের বাড়ির বারান্দায় বসে বৃষ্টি উপভোগ করেছি। প্রত্যেকে নিজেদের মতো করে ছবি তুলেছে, ভিডিও বানিয়েছে, ওদের দলে আমিও যোগ দিয়েছিলাম। কিছু কিছু ছবি আমিও আপনাদের জন্য তুলেছিলাম।
সঙ্গীতার ফ্রিজে কাঁচা মিঠা আম রাখা ছিলো। আগেই আমগুলোকে কেটে রাখা হয়েছিলো কিন্তু খাওয়া হয়নি। হঠাৎ করেই রাখি আমগুলো নিয়ে এলো, যাতে বৃষ্টি উপভোগ করতে করতে আমরা আমগুলো খেতে পারি। সকলেই হাতে হাতে আমগুলো খেয়ে নিলাম, আর সেই সময় স্কুল জীবনের ফেলে আসা বৃষ্টির দিনের গল্প গুলো আলোচনা করছিলাম। দারুন কাটালো ঐ মুহুর্তটুকু।
কিছুক্ষণ বাদে বৃষ্টি কমে গেল এবং লাঞ্চের সময় হলে এসেছিলো, তাই সকলে মিলে একসাথে বসে লাঞ্চ সেরে নিলাম। সত্যি কথা বলতে সকলে মিলে এক জায়গায় বসে যে কোনো জিনিস খাওয়ার আনন্দই আলাদা। রান্নাটা সকলে মিলে মিশে করা হয়েছিল বেশ ভালো হয়েছিলো খেতে। আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম যে আরো একটা বিষয়ে সেদিন আমরা খুব খুশি ছিলাম।
বহু মাসের ধরে আমাদের প্ল্যান হচ্ছে সকলে মিলে একসাথে পাহাড় দেখতে যাবো। কিন্তু কিছু না কিছু সমস্যার কারণে তা কিছুতেই হয়ে উঠছিলো না। অবশেষে বহু আলোচনার পরে আমরা গতদিন ট্রেনের টিকিট কেটেছি।
যদিও জানিনা আমার শ্বশুর মশাইয়ের শারীরিক পরিস্থিতি তখন কেমন থাকবে। কিন্তু তখনো শরীর ভালো থাকলে চাইলেও আমি টিকিট পাবো না। সেই কারণে টিকিটটা কেটে রাখলাম, যদি খুব সমস্যা হয় তাহলে টিকিট ক্যান্সেল করবো, আর যদি তা না হয় তাহলে একসাথে বান্ধবীদের সাথে রওনা করবো দার্জিলিং, জীবনে প্রথমবার।
এই বিষয়ে আমরা মনে মনে ভীষণ আনন্দিত। আরও এতো মাসের একটা প্ল্যান শেষপর্যন্ত সফল হতে চলেছে এটা ভেবেই অনেক বেশি আনন্দ হচ্ছে। তাই যখন এটা সত্যি হবে, বোধহয় সেটা অবিশ্বাস্য লাগবে। শুধু একটাই প্রার্থনা করছি, যাতে শশুর মশাইয়ের শরীর যেন একটু ঠিক থাকে এবং আমরা সকলে মিলে দার্জিলিং ঘুরে আসতে পারি। প্ল্যান সফল হওয়ার প্রথম ধাপ, অর্থাৎ টিকিট কাটা হয়েছে বর্তমানে এটাই সব থেকে আনন্দের বিষয়। বাকিটা তো পরের ব্যাপার।
যাইহোক খাওয়া দাওয়া সম্পন্ন করে সকলে মিলে সংগীতার খাটের উপরে শুয়ে, বসে কাটালাম। আমি অবশ্য তখন বসে বসে পোস্ট ভেরিফাই করেছিলাম। অনেক অনেক প্ল্যান হলো সেদিন। কি কি ড্রেস নিয়ে যেতে হবে, কি ভাবে ঘুরবো, কোন কোন জায়গায় যাবো, কি খাবার নেবো এইসব আর কি।
এরপর পিয়ালী আমাদের সকলকে ভার্জিন মজিটো করে খাওয়ালো। পুদিনা পাতা, পাতিলেবু, জল জিরা, আর কোল্ড্রিংস(স্প্রাইট) দিয়ে তৈরি করা একটা ড্রিংস, যেটা খেতে সত্যিই সুন্দর লেগেছিলো। আসলে ও এইধরনের জিনিস তৈরি করতে পছন্দ করে, আর খুব ভালো তৈরিও করে।
সেদিনের ড্রিংসটাও খুব সুন্দর লেগেছিলো খেতে। যাইহোক সকলে মিলে বেশ এনজয় করলাম। বিকালের দিকে বৃষ্টি একেবারেই কমে গিয়েছিলো, তাই সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়ে আমরাও বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার প্রস্তুতি নিলাম। এরপর রাখি এবং পিয়ালী সাইকেল নিয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলো, আর আমিও টোটো ধরে রওনা হলাম স্টেশনের উদ্দেশ্যে।
প্ল্যাটফর্মে এসে খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি, কিছুক্ষণের মধ্যেই আমার ট্রেন চলে এসেছিলো। ট্রেন ধরে সোজা এসে পৌঁছালাম দত্তপুকুর স্টেশনে। সেখান থেকে ভ্যানে সোজা বাড়িতে। দিনটা খুব ভালো কাটিয়েছিলাম এবং মনটাও ফ্রেশ হয়ে গিয়েছিল।
যদিও উদ্দেশ্য ছিলো ডাক্তার দেখানো, কিন্তু তারপরেও সকলের সাথে খুব সুন্দর একটা দিন কাটিয়েছিলাম। তারই কিছু মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশাকরি বৃষ্টির দিন এরকম ভাবে বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর কিছু স্মৃতি প্রত্যেকের আছে।বিয়ের পরেও সেই পুরনো বন্ধুদের সাথে পুরোনো স্মৃতি রোমন্থনের সুযোগ, সত্যিই মনটাকে ভালো করে দিতে পারে।
যাইহোক আমাদের সকলের একসাথে কাটানো কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, আশা করছি আপনাদেরও সেগুলো পড়ে ভালো লাগবে। আপনাদের এরকম কোনো সুন্দর মুহূর্ত থাকলে, সেটা অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন। সকলের ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। আজকের দিনটি খুব ভালো কাটুক সকলের, এই প্রার্থনা করে আজকের লেখা শেষ করছি।