Incredible India monthly contest of August #1|My own story!
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলেরই আছে দিনটি অনেক ভালো কেটেছে। অনেকদিন বাদে আজ আমি অংশগ্রহণ করতে চলেছি, আমাদের কমিউনিটি কর্তৃক আয়োজিত আগস্ট মাসে প্রথম সপ্তাহের কনটেস্টে, যার বিষয়বস্তু অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
কারণ জীবন যাপনের ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যেককেই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়, এ কথা বোধহয় কেউই অস্বীকার করতে পারবেন না। যাইহোক বিষয়বস্তু সম্পর্কিত নিজস্ব মতামত আমি অবশ্যই নিম্নলিখিত প্রশ্ন গুলোর মাধ্যমে উপস্থাপন করবো, তার আগে আমি এই কনটেস্টে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানাতে চাই আমার তিনজন বন্ধু @tanay123, @mou.sumi ও @isha.ish কে। আশা করছি আমার মত তারাও নিজেদের অভিজ্ঞতা ও মতামত অংশগ্ৰহনের মাধ্যমে শেয়ার করবেন।
|
---|
অবশ্যই আমি বিশ্বাস করি চ্যালেঞ্জ ছাড়া আমাদের বেঁচে থাকা একেবারেই অসম্পূর্ণ। শুধু অসম্পূর্ণ বলাটা ভুল হবে, তার থেকেও সঠিক শব্দচয়ন হবে অসম্ভব। কারণ এই পৃথিবীতে এমন কোনো ব্যক্তি নেই যার জীবনে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। হ্যাঁ কারোর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ বেশি, আবার কারোর ক্ষেত্রে হয়তো কম, কিন্তু প্রত্যেকের জীবনেই চ্যালেঞ্জ রয়েছে।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আর্থিক দিক থেকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়, কেউ বা আবার মানসিক দিক থেকে, অনেকে আবার শারীরিক দিক থেকে। পরিস্থিতি এবং কারণ এক একজনের ক্ষেত্রে এক এক রকম হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, যারা আর্থিক দিক থেকে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়, তারা ভাবে হয়তো বিত্তশালীদের জীবনে কোনো চ্যালেঞ্জ নেই।
ঠিক একই রকম ভাবে যারা মানুষের দিক থেকে বিভিন্ন সময় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়, তারা উল্টো দিকের মানুষগুলোকে নিয়ে একই কথা ভাবে। কিন্তু জীবনের বাস্তবতা এটাই যে, প্রত্যেকের জীবনে কোনো না কোনো বিষয়ে, কোনো না কোনো পর্যায়ে চ্যালেঞ্জ থাকবেই।
|
---|
সত্যি কথা বলতে এই প্রশ্নটি পড়ে জীবনে কাটানো এতোগুলো বছরের মধ্যে অনেকগুলো ঘটনার কথা মনে পড়লো। সবগুলো হয়তো একটা প্রশ্নের মাধ্যমে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে না, তবে দুটো ঘটনার কথা আমি অবশ্যই বলতে চাই, যে দুটো ঘটনা বা পরিস্থিতি আমি একার হাতে সামাল দিয়েছি।
প্রথম ঘটনা:-
আমার জীবনের সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জের রাত ছিল সেদিন, যেদিন আমার দিদির মিসক্যারেজ হয়েছিলো। তখন আমি এবং দিদি কলকাতার একটা ভাড়া বাড়িতে থাকতাম। দিদি বিএসসি নার্সিং করতো এবং আমি তখন বর্ধমান ইউনিভার্সিটিতে এম এ পড়তাম।
মা তখন বেঁচে নেই। আমাদের বাড়িতে বাবা আর ঠাকুমা থাকতো। কলকাতায় আমরা দুজন থাকতাম, যাতায়াতের সুবিধার্থে। যাইহোক সেই সময় দিদি প্রেগন্যান্ট ছিলো, তাই ওর কলেজের একদম পাশেই আমরা রুম ভাড়া নিয়েছিলাম, যাতে ওকে খুব বেশি ধকল নিতে না হয়। কারণ শুরু থেকেই ওর একটু সমস্যা ছিলো।
সবকিছুই ঠিকঠাক ছিলো। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যাবেলা থেকেই ও বলছি ওর পেটব্যথা করছে। যা প্রয়োজনীয় ওষুধ সেগুলো সব সময় আমরা ঘরেই রাখতাম, কিন্তু ওষুধ খাওয়ার পরেও কোনো পরিবর্তন হয়নি।
ইতিমধ্যে রাত অনেকটা বেড়ে গিয়েছিলো, যখন আমি মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি ওকে নিয়ে হসপিটালে যাবো, সেই মুহূর্তে দিদি আমাকে বলল এখন আর হসপিটালে যাওয়ার সময় নেই। বিষয়টা আমি সত্যিই বুঝতে পারিনি, কারণ তখন আমার নিজেরও বিয়ে হয়নি।
এরপর দিদি আমাকে যে যেভাবে বলে যাচ্ছিলো আমি শুধু সেই কাজগুলো করছিলাম। যেহেতু ও নিজে একজন নার্স ছিলো, তাই সবটা বোধহয় বুঝতে পারছিলো, যাইহোক একটা সময় পরে দেখলাম সবটাই শেষ হয়ে গেছে।
দিদির কথা মতন সমস্ত কাজ করলেও বালতির ভেতরে যখন পাঁচ মাসের একটা নিথর দেহ দেখলাম, যার হাত, পা, মুখ সবটাই বোঝা যাচ্ছিলো। আমি একেবারেই হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম। অন্যদিকে বিছানায় দিদি শোয়া। কলকাতার দিকে ভাড়া বাড়িতে বাড়ির মালিক খুব বেশি সহযোগিতা করে না, আর তখন ঘড়িতে রাত প্রায় দেড়টা। তাও কয়েকবার ওনাদের দরজার নক করলাম, কিন্তু কোনো সারা শব্দ না পেয়ে আবার দিদির কাছে ফিরে এলাম।
ফোনের ওপরে ফোন করে চলেছি আমার বড়দি থেকে মামিকে, কিন্তু কেউ আমার ফোন তোলেনি। বাবাকে ফোন করে কি বলবো সেটা ভেবে প্রথম ফোনটা বাবাকে করিনি। তবে শেষমেষ বাবাকে বাধ্য হয়ে ফোন করলাম, আর অদ্ভুতভাবে বাবা প্রথম রিং এই ফোন তুললো। বাবাকে বিষয়টা মোটামুটি বলাতেই তৎক্ষণাৎ আমার বড় দিদিদের বাড়িতে গিয়ে, গাড়ি ঠিক করে বেরিয়ে পড়লো। তবে আমাদের গ্রাম থেকে কলকাতা পৌঁছাতে ভোর হবে এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত ছিলাম।
রাস্তায় মামা বাড়ি থেকে আমার মামীকেও তুলে নিলো, কারণ একজন মহিলা থাকা জরুরী ছিলো। যাইহোক কিভাবে রাতটা কাটিয়েছিলাম, আজকে ভাবলেও গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। তবে বাবারা এসে পৌঁছানোর পরেই আমাকে যেন সমস্ত ভয় চেপে ধরেছিলো। দিদিকে সকলে হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিলো, আমি বাড়ির সকল কিছু পরিষ্কার করেছিলাম।
তারপর থেকে ওই বাড়িতে আমরা যে কয় মাস ছিলাম, আমি একটা রাতও ঘুমাতে পারিনি। একটা অদ্ভুত ভয় ঘিরে ধরেছিলো আমাকে, যেন চারপাশ থেকে আমি শুধু ওই বাচ্চাটিকেই দেখতে পেতাম। আজকে যখন লেখাটা লিখছি, একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে। কিন্তু বিশ্বাস করুন অমন চ্যালেঞ্জ আমি জীবনে আর কখনো ফেস করিনি।
দ্বিতীয় ঘটনা:-
একই রকম ভয় আমাকে ঘিরে ধরেছিল বাবার অসুস্থতার সময়। বাবা মূলত গ্রামের বাড়িতেই থাকতেন। ফোনে কথা বলে বুঝতে পেরেছিলাম ঠান্ডা লেগেছে, কিন্তু শরীর যে অতটা খারাপ, সেটা কিন্তু উনি কখনোই বলেনি। হঠাৎ করে আমার বড়দি একদিন ফোন করে বলল বাবার শরীর অনেক খারাপ, নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছে। তাই দিদি ডাক্তার দেখিয়েছে, আর তার পরামর্শ মতোই আমার জামাইবাবু ওনাকে নিয়ে এক্সরে করাতে গেছেন।
সে কথা শুনে আমিও দিদি বাড়িতে গিয়ে পৌঁছালাম সন্ধ্যা নাগাদ। এক্সরে রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ছবিটা তুলে ছোটদিকে পাঠালাম। ও রিপোর্টটা দেখে সাথে সাথে বাবাকে ওর ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়ার কথা বললো। বাবার অবস্থা তখন বেশ খারাপ। বরদের কাছ থেকে একটা প্যারাসিটামল এবং ডাক্তারের দেওয়া কাশির সিরাপ খাইয়ে বাবাকে নিয়ে রওনা করলাম দিদির ফ্ল্যাটের উদ্দেশ্যে।
ট্রেনের মধ্যে সিট ছিল না। একজনকে বলে বাবাকে কোনো রকমে বসালাম। সেই সময় বাবার নিঃশ্বাস নিতেও কষ্ট হচ্ছিলো। গোটা রাস্তাটা শুধু এই প্রার্থনা করছিলাম যাতে ঠিকভাবে দিদির ফ্ল্যাট পর্যন্ত আমি বাবাকে পৌঁছে দিতে পারি। কারণ আমি জানতাম তারপর থেকে যাই সমস্যা হবে, সেটা আমার দিদির সামলে নেবে। ট্রেনের ওই সময়টুকু আমার জন্য ভীষণ চ্যালেঞ্জিং ছিলো। তবে ঈশ্বরের কৃপায় আমি ঠিক মতন বাবাকে পৌঁছে দিতে পেরেছিলাম।
রাতটুকু কোনোমতে পার হয়েছিলো বটে। ভোরবেলা হতে না হতে বাবাকে ভর্তি করতে হয়েছিল আইসিউতে। তারপর থেকে টানা ১৯ দিনের জীবন মরণ লড়াই লড়ে, তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন। অথচ তার ৩ দিন বাদে আমরা ঠাকুমাকে হারিয়েছিলাম। তাই এই সময়টা খুব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছিলো আমাকে।
বাকি যদি বলি মায়ের অসুস্থতা,মাকে হারানো, জীবনে প্রথমবার নিজের কাউকে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া, সেখানে তার দেহকে পুড়তে দেখা, শশুর মশাইয়ের অসুস্থতা জামাইবাবুর অমন ব্রেন সার্জারি, এগুলো জীবনের একটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিলো। তবে এই চ্যালেঞ্জগুলো মানসিকভাবে আমি একা সামলালেও, সেখানে শারীরিক উপস্থিতি ছিলো অনেকেরই।
তবে উপরে উল্লেখিত দুটো ঘটনায় সবটা আমাকে সামাল দিতে হয়েছিলো বলে আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। নিজের প্রত্যেক দিনের জীবনে অনেক রকম চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। বিবাহিত জীবন আমাকে জীবনের অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে শিখিয়েছে ঠিকই, তবে সে বিষয়ে না হয় অন্য কোনো পোস্টে আপনাদের সাথে কথা বলবো।
|
---|
সত্যি কথা বলতে আমি জীবনে যে যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গেছি সেই অনুযায়ী আমি হয়তো কিছু সাজেশন দিতে পারি। তবে প্রত্যেকের জীবনের পরিস্থিতি ভিন্ন হয়, তাই সমস্ত সময় যে আমার দেওয়া সাজেশনে কাজে লাগবে এমনটা নয়, তবে আমি যেটা বলতে পারি,-
কঠিন পরিস্থিতিতে কখনোই হঠকারিতা করা উচিত নয়। হয়তো সেই সময় আমাদের বোধবুদ্ধি ততটা কাজ করে না, কিন্তু তবুও একটু হলেও ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
নিজের বিপদের সময় নিজেদের চিন্তা ভাবনা গুলো খুব একটা কাজ করে না। তাই আপনি যাকে বা যাদেরকে নিজের শুভাকাঙ্ক্ষী ভাবেন এবং বিশ্বাস করেন যে, তারা আপনাকে ভুল পথে চালিত করবে না, তাদের বলা কথাগুলো মন দিয়ে শোনা এবং সেগুলো মেনে চলা উচিত।
যেকোনো চ্যালেঞ্জ আমাদের জীবনে পরিবর্তন নিয়ে আসবে, এটা মাথায় রাখা উচিত এবং সেই পরিবর্তনগুলো মেনে নিতে আমরা প্রত্যেকেই বাধ্য, এটা মনে রাখতে হবে। তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী আমাদের প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত, কারণ পরিস্থিতি বদলানোর মতন ক্ষমতা আপনার বা আমার কারোরই নেই।
যারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করেন, কঠিন সময়ে অবশ্যই ঈশ্বরকে স্মরণ উচিত কারণ, ঈশ্বরই একমাত্র আমাদেরকে কঠিন পরিস্থিতিতে সঠিক পথ দেখান।
আমাদের জীবনে যাই চ্যালেঞ্জ আসুক না কেন, কোনো পরিস্থিতি এক মুহূর্তেই ঠিক হয় না। তাই সেই পরিস্থিতিতে অবশ্যই ধৈর্য্য রাখতে হবে।
|
---|
যাক এই ছিল আমার নিজস্ব কিছু চিন্তা-ভাবনা এবং অভিজ্ঞতা, যেগুলো আমি আপনাদের সাথে পোস্টের মাধ্যমে শেয়ার করলাম। পোস্টটি পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো, এ কথা জানাতে ভুলবেন না। সকলে ভালো থাকবেন। শুভরাত্রি।
Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟
Thank you for your support 🙏.