"পুরোনো স্মৃতিচারণের মাঝে,নতুন পথচলার আনন্দের অনুভূতি"

in Incredible India25 days ago
IMG_20250428_022537.jpg
"কিছু পুরনো মুহূর্ত"

Hello,

Everyone,

অনেক খারাপ সময়ের মধ্যে থাকলেও কিছু কিছু খবর মনকে অনেক প্রশান্তি দেয়। আবার কখনো কখনো কিছু খবর পেয়ে অবাক হয়ে ভাবতে থাকি সময় কতো দ্রুত বয়ে যাচ্ছে। সবকিছুই যেন চলমান, শুধু আমি স্থির হয়ে আছি এক জায়গায়।

খারাপ সময়গুলো বড্ড দীর্ঘ মেয়াদী হয়, কিছুতেই যেন তার শেষ নেই। খানিকটা এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিনযাপন করছি গত কয়েক দিন যাবৎ। পাশাপাশি শরীর খারাপটা উপরি পাওনা বলতে পারেন।

বেশ কয়েকদিন আগে আমার পোস্টে শেয়ার করেছিলাম যে আমি আমার জামাইবাবুর সাথে বারাসাত ডিএম অফিসে গিয়েছিলাম। আসলে দাদা যেহেতু একজন এক্স আর্মি, তাই তিতলি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ভর্তি হয়েছে এবং তাতানকে সেখানে ভর্তি করার একটা প্রচেষ্ট চলছিলো। সেখানে ওর ভর্তির ফর্ম ফিলাপ করা হয়েছিলো এবং পরবর্তীতে তাতানের নাম সেখানের লিস্টে এসেছিলো।

তবে আর্মিদের যে কোটা থাকে সেখানে ভর্তি করতে হলে একটা পেপার এর প্রয়োজন ছিলো ,যেটা ডিএম অফিস থেকে পাওয়া যেতো, সেই পেপারটার জন্যই দুদিন করে বারাসাতে যেতে হয়েছিলো। তবে সর্বশেষ পেপারটি আনতে দিদি ও দাদা গিয়েছিলো বনগাঁয়।

IMG_20250428_021326.jpg
IMG_20250428_021110.jpg

এতো কষ্টের ফলাফল শেষ পর্যন্ত পাওয়া গিয়েছে। তাতান চান্স পেয়েছে সল্টলেকের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে, যেখানে তিতলি পড়ে। আসলে দিদি শুরু থেকে চাইছিলো যাতে দুই ভাই বোন একই স্কুলের ভর্তি হতে পারে। আর সৌভাগ্যবশত সেটাই হয়েছে। গত বছর দাদার অসুস্থতার কারণে ভর্তির বিষয়টি অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছিলো, তবে এ বছর সবটা সুন্দরভাবে হচ্ছে, এটাই ঈশ্বরের অসীম কৃপা।

IMG_20250428_022132.jpg

খবরটা পেয়ে বেশ খুশি হয়েছিলাম এবং খবরটা আমাকে তাতান নিজেই দিয়েছিলো হোয়াটসঅ্যাপের ভয়েস ম্যাসেজ করে। না ও এখনও ভয়েস ম্যাসেজ পাঠাতে পারেনা, দিদি ওকে বলে দিয়েছিল ও সেটাই আমাকে বলে পাঠিয়েছে।

শুধু তার একটাই ডিমান্ড ছিলো, সে সাথে করে আমাকে অনেকগুলো ইমোজি পাঠাতে চাইছিলো। তাই নিজে যে যে ইমোজি গুলো পছন্দ করেছিলো, সেই সবগুলো ও আমাকে পাঠিয়েছিল হোয়াটস অ্যাপের মাধ্যমে।

খবরটা শোনামাত্র যেন তাতানের জন্ম থেকে এতোগুলো বছর চোখের সামনে দিয়ে মুহূর্তের মধ্যে পার হয়ে গেলো। এই তো কদিন আগে তিতলিকে আমার কাছে রেখে দিদি হসপিটালে ভর্তি হয়েছিলো।

IMG_20250428_021140.jpg

তিতলি যখন দিদি হয়েছে, তখন তাকেই নিজের হাতে খাইয়ে দিয়েছি। তবে এখন তিতলি অনেকটাই বড় হয়েছে। ভাইয়ের ভালো-মন্দ সবটাই বোঝে, আমি মাঝে মধ্যে সত্যিই অবাক হয়ে ভাবি, কতো বড় হয়ে গেলো ওরা দুজন।

জীবনে কতো দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে, শুধু মাঝে মাঝে আন্দাজ করতে পারি যখন চোখের সামনে ওদের বড় হতে দেখি। শুধু যে ওরা বড় হচ্ছে এমনটা নয়, আমিও বুড়ি হচ্ছি। একটা সময়ে ওরাও আমাদের মত বড় হবে এবং আমরা বার্ধক্যের খাতায় নাম লেখাবো।

সত্যি জীবনটা কতো ছোটো, অথচ এই জীবনটাকে সঠিকভাবে বাঁচতে পারলাম না। জীবনের কত ছোট ছোট পাওয়া অপূর্ণ থেকে গেলো। সেগুলোকে আর পুনরায় পাওয়ার সুযোগ পাবো না, এ কথা ভাবলেই মন থেকে কেমন যেন দীর্ঘশ্বাস আসে।

জীবন কবে কোথায় কিভাবে থেমে যাবে সত্যিই জানিনা। কিছু কিছু ঘটনা তো চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দেয়, জীবনে মৃত্যুই আসল সত্যি বাকি সবটাই কল্পনা। অথচ এই কল্পনার জীবন নিয়েই মানুষের কত ঝগড়া, বিবাদ, অশান্তি।

শান্তিপূর্ণ জীবন আমরা প্রত্যেকেই আশাকরি, তবুও জীবনকে সুন্দরভাবে সাজানোর প্রয়াস করি না কখনোই। সব সময় না পাওয়ার হিসেবের খাতা খুলে বসে থাকি, আর পাওয়ার ঘরে শূন্য বসাই। কিন্তু সত্যিই কি তাই, এতো না পাওয়ার মধ্যে কিছুই কি পাওয়া হয় না আমাদের?

IMG_20250428_021657.jpg

যাইহোক আমার জীবনে অনেকটা জুড়ে আছে তিতলি ও তাতান এ কথা বোধহয় আপনারা অনেকেই জানেন। অনেকদিন ওদের সাথে সামনাসামনি দেখা হয় না। ওদের সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো বরাবর আমার জন্য অনেক বেশি স্পেশাল। বিশেষ করে ওদের ছোটবেলা।

বড় হওয়ার সাথে সাথে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে ওরাও বদলে যাবে, এ কথা সত্যিই। কিন্তু যা বদলাবে না তাহলো ওদের প্রতি আমার টান। এমনটাই বোধহয় হয়। যখন আমরা ছোটো ছিলাম আমাদেরকে নিয়েও নিশ্চয়ই আমাদের মামা মাসিরা এমনটাই ভেবেছিলো।

কিন্তু আমরাও বড় হওয়ার সাথে সাথে তাদেরকে আর সময় দিতে পারিনি। এখন আমাদের অবস্থান বদলেছে, আমাদের মাসিদের জায়গায় আমরা, আর আমাদের জায়গায় তিতলি ও তাতান। এমন ভাবে ভাবলে বোধহয় ওদের পরিবর্তনগুলো মেনে নিতে অনেকটাই সুবিধা হবে।

যাইহোক খবরটা শুনে সত্যিই খুব খুশি হয়েছি। দুই ভাই বোনের একসাথে এক স্কুলে জীবন শুরু। তিতলির কাছে স্কুলটা অনেক পরিচিত, তাই ভাইকে খুব সহজেই সেখানে সবকিছু সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে পারবে এ পাওনাই বা কম কিসের।

যাইহোক এই আনন্দের খবর পাওয়ার সাথে সাথেই খানিক নিজের কষ্ট ভুলেছিলাম। খবরটা পাওয়ার পর থেকে যেমন অতীতের স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসেছে, তেমনি খানিক অস্পষ্ট ভবিষ্যতের কল্পনাও করে নিয়েছি।এইভাবেই বাস্তব ও কল্পনার মাঝে অতিবাহিত হয়েছে আজকের দিনটি। ভালো থাকবেন সকলে। শুভরাত্রি।


1737773973212.gif

Sort:  
Loading...
 22 days ago 

তাতান ও তিতলির জন্য মন থেকে দোয়া ও শুভকামনা রইল তারা দুই ভাই বোন একই স্কুলে ভর্তি হতে পেরেছে এটা জানতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। এবং তাতান নিজে আপনাকে খবরটা দিয়েছে তাতে আরো বেশি আনন্দিত আপনি আপনার পোস্ট করে বুঝতে পারলাম। যাইহোক সুন্দর একটি খবর আমাদের মাঝেও ভাগ করে নেয়ার জন্য ধন্যবাদ এবং জীবনে খারাপ সময়ে থাকবে ইনশাল্লাহ এক দিন সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে চিন্তা করবেন না।

 14 days ago 

আসলে খারাপ সময় টা দীর্ঘ হয় কিনা আমার জানা নেই তবে হ্যাঁ এই সময়টা যেন ফুরিয়ে যেতে চায় না তবে ভালো সময়টা খুব দ্রুত চলে যায় আমরা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি এটা আসলে ভুল কারণ জীবন কখনো এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকে না বিভিন্ন রকম উত্থান পতনের মাধ্যমে আমাদের জীবনের সময়টা ঠিকই ফিরিয়ে দেয় তবে হাজারো খারাপ সময়ের মধ্যে কিছু ভালো সময় আমাদের মন ভালো করতে সাহায্য করে দোয়া করি আপনার বোনের ছেলে মেয়ের জন্য তারা বড় হয়ে যেন আপনার মনের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।