"Debonair Restaurant"- এ কাটানো কিছু মুহূর্তের কথা

in Incredible India17 days ago
IMG_20250708_205048.jpg

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের আজকের দিনটি বেশ ভালো কেটেছে। আজ আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো উল্টোরথ থেকে ফেরার পথে সকলে মিলে রেস্টুরেন্টে ডিনার করতে যাওয়ার মুহূর্তের কথা।

আগের পোস্টেই আমি জানিয়েছিলাম, আমার দিদি বর্তমানে নিরামিষ খাবার খায়। আলাদা করে তেমন কোনো ব্যাপার নেই, তবে ডিম, মাছ, মাংস কোনোটাই এখন আর ওর খেতে ভালো লাগে না। জোর করে খেলে বরঞ্চ ওর আরও অসুবিধা হয়। যে কারণে ও নিরামিষ খাবারই খায়।

তবে যেমনটা আপনারা জানেন, আমাদের আশেপাশের বেশিরভাগ হোটেল বা রেস্টুরেন্টে কিন্তু বেশিরভাগ আমিষ পদ পাওয়া যায়। কিন্তু ওদের বাড়ির একেবারে কাছেই "Debonair Restaurant" নামক নতুন রেস্টুরেন্ট ওপেন হয়েছে যেখানে, আমরা সকলে মিলে সেদিন রাতে ডিনারে গিয়েছিলাম।

আসলে দমদমের গোড়াবাজরে Debonair Restaurant & Bar নামক বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট‌ আছে। এটা তাদেরই একটি শাখা। যেখানে শুধু নিরামিষ খাবার পাওয়া যায়। মোটামুটি ভালোই ভিড় হয় সেখানে। আর খাবার-দাবারের মানও খুব একটা খারাপ নয়।

IMG_20250705_210117.jpg
IMG_20250705_210949.jpg
IMG_20250708_205952.jpg

যাইহোক ওখানে ঢোকার সময় মেলা থেকে কিনে আনা আমাদের গাছগুলোকে বাইরে সিকিউরিটির কাছে রেখে গিয়েছিলাম। আসলে যাদের সাথে অনেক বড় ব্যাগ থাকে, বাজারের কোনো জিনিস থাকে, তারা চাইলে সেগুলো সেখানে জমা করে ভিতরে যেতে পারে। তাই আমরাও ভাবলাম গাছ গুলো ভিতরে নিয়ে গিয়ে লাভ নেই, তাই সেগুলো রেখে আমরা ভেতরে গিয়ে বসলাম।

রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে তিতলি ও‌ তাতান সবথেকে বেশি যেটা খেতে পছন্দ করে সেটা হল চাউমিন। আমরা গিয়ে বসার পর মেনু কার্ড দিলো, তার সাথে জলের বোতল। তিতলিদের জন্য এক প্লেট চাউমিন অর্ডার করা হয়েছিলো, কারণ দুজনের জন্য এক প্লেট যথেষ্ট। তার সাথে দাদার জন্য একটাও হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি, আর দিদি ও আমি মিলে নিয়েছিলাম ভেজ মাঞ্চুরিয়ান ও বাটার নান।

"খাবারের মূল্য"

নংখাবারের পদপরিমাণমূল্য
১.কফি১ কাপ৭০ টাকা
২.মিক্সড চাউমিন‌১ প্লেট২২০ টাকা
৩.হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি১ প্লেট২৮০ টাকা
৪.ভেজ মাঞ্চুরিয়ান১ প্লেট২৫০ টাকা
৫.বাটার নান৩ টে১৮০ টাকা

দিদি বারবার বলছিল কিছু স্টার্টার নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমরা খেতে গিয়েছিলাম প্রায় রাত সাড়ে দশটা নাগাদ। তখন স্টার্টার খেলে মেন কোর্সে আর কিছুই খাওয়া যেত না। তাই ইচ্ছাকৃতভাবেই আমরা সেটা স্কিপ করলাম।

IMG_20250705_210751.jpg
IMG_20250705_210708.jpg

তবে দিদির ততক্ষণের মাথা ধরেছিল বলে ও নিজের জন্য একটা কফি অর্ডার করেছিল। যদিও আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিলো, আমি নিজে কফি খেতে পছন্দ করি না,‌ আর দাদা খেতে চায়নি। তাই আমরা আমাদের খাবারের জন্যই অপেক্ষা করছিলাম।

IMG_20250705_211651.jpg

যাইহোক কিছুক্ষণের মধ্যে আমাদের সব খাবার একসাথে দিয়ে গেলো। তাই প্রথমে তিতলি ও তাতানের খাবার সার্ভ করে দেওয়া হলো। তারপর আমরা আমাদের খাবার শুরু করলাম। তবে আমি তিতলি ও তাতানের প্লেট থেকে এক চামচ চাউমিন টেস্ট করেছিলাম, সেটা খেতে বেশ ভালো ছিলো। চাউমিনের মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণের মাশরুম দেওয়া ছিলো। তিতলি মাশরুম খায় না, তবে তাতান আবার মাশরুম খেতে খুব পছন্দ করে। তাই তিতলি বেছে বেছে ভাইয়ের প্লেটে মাশরুম গুলো দিয়ে দিয়েছিলো।

IMG_20250705_211716.jpg

এবার যদি আসি বিরিয়ানির কথায় তাহলে বিরিয়ানিটা খেতে অন্য দুটো খাবারের তুলনায় খারাপ ছিলো। প্রথমত পনির আমি পছন্দ করি না, আর বিরিয়ানির মধ্যে অনেক বেশি পরিমাণে পনির ছিলো। হয়তো সেই কারণেই আমার খেতে আরও ভালো লাগেনি। তবে দাদার কাছে মোটামুটি ভালোই লেগেছিল বললো।

IMG_20250705_211647.jpg
IMG_20250705_211643.jpg

সৌভাগ্যবশত ভেজ মাঞ্চুরিয়ানটা খেতে খুবই টেস্টি ছিলো। তিতলি যদিও মাঞ্চুরিয়ান খায়নি, তবে তাতান কিন্তু একটা মাঞ্চুরিয়ান খেয়েছিলো। ঝাল কম ছিল এবং খেতে বেশ সুস্বাদু ছিলো বলে তাতানেরও বেশ ভালো লেগেছে। সত্যি বলতে বাটার নানের সাথে দিদি ডাল মাখানি নিতে চাইছিলো। কিন্তু আমি ডাল মাখানি খেতে ততটাও পছন্দ করি না, তাই ভয়ে ভয়ে এই ভেজ মাঞ্চুরিয়ান অর্ডার করেছিলাম। তবে টেস্ট এতো খানি ভালো হবে এটা সত্যিই ভাবিনি।

যাইহোক খাওয়া-দাওয়া সম্পন্ন করতে করতে আমাদের বেশ খানিকটা সময় লেগেছে। বাচ্চাদেরকে নিয়ে বাইরে খেতে যাওয়া আসলেই অনেক সমস্যার। তার উপরে আবার দুজনেই সমান। একবার‌ বলে ন্যাপকিন দাও, একবার জলের বোতল খুলে দাও, একবার খাইয়ে দাও, কতো কতো যে বায়না, কি আর বলবো।

তবে এরও এক আলাদা মজা আছে। বন্ধু বান্ধবীদের সাথে রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে এক ধরনের আনন্দ। আর ফ্যামিলির সাথে খেতে যাওয়ার আনন্দ অন্যরকম। আর আমি সাথে থাকলে তিতলি ও তাতানের বায়না যেন মায়ের থেকেও বেশি মাসির কাছে। আর আমিও বিষয় গুলো বেশ উপভোগ করি।

IMG_20250705_214750.jpg

যাইহোক নিরামিষ হলেও খাওয়া দাওয়াটা বেশ ভালোই হয়েছিলো। আর এই রেস্টুরেন্টটা নিজেদের বাড়ির কাছে হওয়াতে আরও একটু সুবিধা হয়েছে। কারণ খাওয়ার শেষে আমরা সকলে মিলে হেঁটে বাড়ি ফিরেছিলাম। ফিরতি পথে পাশেরই একটি মন্দির চোখে পড়লো। দিদিরা তখন পুজোর ফুল কিনছিলো। আর আমি রাস্তার উল্টোদিকে তিতলি ও তাতানকে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম, সেই সময় মন্দিরের ছবিটি তুলেছিলাম।

যাইহোক উল্টোরথকে কেন্দ্র করে একটা সুন্দর সময় কাটিয়েছিলাম সকলে মিলে। তবে আমি যখনই এই ধরনের ছবিগুলো পরবর্তীতে দেখি, তখন শুধু আমার দাদার অপারেশনের ওই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে। যখন এটা বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলাম যে দাদা আর আমাদের সাথে থাকবে না।

ঈশ্বর চাইলে কি না পারেন, দাদার অ্যাক্সিডেন্ট যেন বিষয়টিকে আরও বেশি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলো। আজ হয়তো দাদাকে একটু সাবধানে রাখতে হয়, তবুও মানুষটার উপস্থিতি আমাদের মধ্যে আছে এটাই যে আমাদের জন্য কত বড় পাওনা, সেটা বোধহয় আমার থেকেও বেশি অনুভব করে দিদি এবং তিতলি ও তাতান।

মাথার উপরে বাবার ছায়া না থাকলে জীবনটা ওদের জন্য কতখানি কঠিন হতো এটা ভেবে মাঝে মধ্যে আৎকে উঠি। যাইহোক প্রার্থনা করি পৃথিবীর সকল সন্তানেরা বাবার ছত্রছায়ায় সুষ্ঠুভাবে বেড়ে উঠুক।

ভালো থাকুক সকলে। ভালো থাকবেন আপনারাও। আর আজকের পোস্ট পড়ে আপনাদের কেমন লাগলো, মন্তব্যের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...

SPOT-LIGHT TEAM: Your post has been voted from the steemcurator07 account.

Thank you for your valuable efforts! Keep posting high-quality content for a chance to receive more support from our curation team.

1000006093.png