"Better life with steem// The Diary Game// 23 rd May,2025 // অপরা একাদশী ব্রত পালন"
![]()
|
---|
Hello,
Everyone,
আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলেরই আজকের দিনটি ভালো কেটেছে। আজ রবিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনটি অন্যান্য দিনের তুলনায় একটু ব্যস্ততার মধ্যেই কাটে। তবে ব্যস্ততা থাকলেও দিনটা খুব বেশি খারাপ কাটেনি।
যাইহোক গত পরশু অর্থাৎ ২৩ শে মে ছিলো অপরা একাদশী। আমার গত দুটি পোস্টে আমি আপনাদের সাথে সে কথা শেয়ার করেছি। তবে ওই দিনটি আমি কিভাবে কাটিয়েছিলাম সেকথা আপনাদের সাথে শেয়ার করা হয়নি। তাই ভাবলাম আজকের পোস্টের মাধ্যমে সেটাই আপনাদের সাথে শেয়ার করি।
|
---|
![]() |
---|
একাদশীর দিন সকাল বেলা থেকেই কেন জানিনা আমার মনটা একটু অন্যরকমই থাকে। আসলে বিশেষ দিনগুলো নিয়ে আমাদের মনে অন্যরকম চিন্তাভাবনা থাকে বলেই আমার বিশ্বাস। এই দিন আমি চেষ্টা করি খারাপ কোনো চিন্তাভাবনা মনে না আনার, বরং দিনটিকে খুব শান্ত ও স্নিগ্ধ ভাবে কাটানোর।
ঘুম থেকে উঠে যথারীতি ফ্রেশ হয়ে নিচে এসে শুভর জন্য চা করে ওকে চা দিয়ে ছাদের গাছের ফুলগুলো সব তুলে নিয়ে এলাম। সেইদিনও গাছে প্রচুর জবাফুল ফুটেছিলো তার সাথে সাদাফুলও। ফুল তুলতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ বোধহয় খুঁজে পাওয়া যাবে না।
![]() |
---|
আর নিজের গাছের থেকে ফুল তুলে ঠাকুর পূজো দেওয়ার আনন্দ বরাবরই আলাদা। যাইহোক এরপর নিয়ম মাফিক নিচে এসে সকলের জন্য ব্রেকফাস্টের রুটি ও তরকারি রান্না করেছিলাম। শুভর মাসিও একাদশীর ব্রত পালন করেন, তাই আমি এবং মাসি তারা শাশুড়ি বাদে সকলে সমান মতন ব্রেকফাস্ট করে নিয়েছিলো।
আগের দিন রাতে একাদশীর জন্য ফল কেনা হয়নি। আমি ব্যস্ততার কারণে বাজারে যেতে পারিনি। তাই শুভ অফিসে বেরিয়ে যাওয়ার পর, তৈরি হয়ে বাজারে গিয়েছিলাম ফল কেনার জন্য। মোটামুটি ঘন্টা দেড়েক এর মধ্যে আমি বাজার থেকে বাড়িতে ফিরে এসেছিলাম।
|
---|
![]() |
---|
তারপর ঘরের কিছু কাজ গুছিয়ে নিয়ে ঠাকুরের বাসনপত্র নামিয়ে, ঠাকুরের ঘর মুছে আমি পুজো দিতে বসেছিলাম। পুজো দেওয়ার সময় আমি প্রতিদিন ইউটিউবে ভগবত গীতা চালিয়ে শুনি। এটা শুনলে সত্যিই মনের মধ্যে অন্য এক অনুভূতির সৃষ্টি হয়। অন্তত পুজোর সময়টুকু যেন শুধু নিজের হয় এই চেষ্টা আমি বরাবর করি।
![]() |
---|
একাদশীর দিন পুজো দিতে আমার একটু বেশি সময় লাগে কারণ, বাসনপত্র ধুয়ে, ফল ধুয়ে, সমস্ত কিছু গুছিয়ে নিয়ে পুজো সম্পন্ন করার পর, ভগবত গীতা পাঠ করে তারপর আমি ফল গ্রহণ করি। যে ফলগুলো ঠাকুরের সামনে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়, সেগুলোই পরবর্তীতে আমি ও মাসি শাশুড়ি গ্ৰহন করে আমাদের উপস ভঙ্গ করি।
![]() |
---|
অন্যদিকে ততক্ষণ শাশুড়ি মা রান্না শেষ করে নিয়েছিলেন নিজের ও শ্বশুরমশাইয়ের জন্য। শাশুড়ি মা স্নান করতে গিয়েছিলেন তাই ফলাহার করে আমিই শ্বশুর মশাইকে খেতে দিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর আমি একটু বিশ্রাম নিয়েছিলাম। শাশুড়ি মা ও মাসি শাশুড়ি দুজনে গল্প করছিলেন, কারণ শাশুড়ি মা একা একেবারেই খেতে পারেন না। তাই শাশুড়ি মা লাঞ্চ করছিলেন এবং মাসি শাশুড়ি দুজনে মিলে বসে ওনাদের ফেলে আসা দিন অর্থাৎ বাংলাদেশের গল্প করছিলেন।
|
---|
বিশ্রাম নেওয়ার মাঝে আমি কমিউনিটির কিছু কাজ শেষ করেছিলাম। তারপর আমার বান্ধবীরা ফোন করেছিলো, বিশেষ কিছু কারণে অনেকক্ষণ কথা বললাম। শুভ ফিরলে ওকে একটু ফল দিলাম আসলে ও ফল খেতে খুব একটা বেশি ভালোবাসে না। তবে একাদশীর দিন আমি চেষ্টা করি জোর করে একটু ফল খাওয়ানোর।
এরপর ও নিজের মতই সময় কাটালো। শাশুড়ি মা ও মাসি শাশুড়ি পাশের একটা বাড়িতে গেলেন। আর আমি বসলাম কমিউনিটির কাজ নিয়ে। একাদশীর দিন সন্ধ্যাবেলা আমি কিছু খাই না। তবে চেষ্টা করি সারাদিনই প্রচুর পরিমাণে জল খাওয়ার।
|
---|
![]() |
---|
একাদশীর দিন কখনো কখনো রাতে আমি শুধু আলু সেদ্ধ খেয়ে থাকি। তবে এদিন আর আলাদা করে আলু সেদ্ধ করতে ইচ্ছে করছিল না। তাই বাদবাকি ফলগুলো সুন্দর করে কেটে আমি এবং মাসি শাশুড়ি খেয়ে নিয়েছিলাম।
সত্যি কথা বলতে ফল আমারও খুব একটা পছন্দের নয়, কিন্তু শরীরের জন্য সেটা অবশ্যই জরুরী। একাদশী পালন করার ইচ্ছা যবে থেকে অনুভব করেছি, তবে থেকেই এটি পালন করছি। আমার মা মারা যাওয়ার পর আমি টানা এক বছর একাদশী পালন করেছিলাম, তবে সত্যি কথা বলতে সেই সময় এর মাহাত্ম্য ততটাও ভালোভাবে অনুভব করতে পারেনি।
তবে এখন যেন সেই বিষয়টি একটু ভালোভাবে অনুভব করি। জীবনে বেঁচে থাকা যেমন জরুরী, তেমনি যারা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাস রাখেন তাদের কিছু কার্যাবলী করাও প্রয়োজন। অবশ্যই এক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক বলে কোনো বিষয় নেই, সবটাই নিজের ইচ্ছা বা অনিচ্ছার উপরে নির্ভর করে। তাই এই বিষয়গুলো নিয়ে বিতর্ক না করে, শুধু নিজের মনের ইচ্ছে অনুসারে জীবন পরিচালনা করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
তবে এখন আফসোস করি একটানা একাদশীটা পালন না করার জন্য। মা মারা যাওয়ার পর থেকে যখন শুরু করেছিলাম, তখন থেকেই যদি এটা করে যেতে পারতাম তাহলে ভালো হতো। তবে যেটা হয়নি সেটা নিয়ে আফসোস না করে, যেটা হতে পারে এখন সেই চেষ্টায় ব্রতী হয়েছি।
![]() |
---|
প্রতিটি একাদশীর বিশেষ কিছু মাহাত্ম্য থাকে এবং আজকালকার দিনে আধুনিক প্রযুক্তির কারণে সে সম্পর্কে জানতে কোনো বই পড়তে হয় না। ইউটিউবের মাধ্যমেও সেটা শোনার অপশন আমাদের কাছে আছে। তাই আমিও প্রতি একাদশীতে একাদশী পালন করে মাহাত্ম্য শুনে থাকি।
এভাবেই কেটেছিল আমার দিনটা। সবশেষে বলতে পারি এটা আর কিছু না হোক আমার আত্মতৃপ্তি। সম্ভব হলে আপনারাও প্রতিদিন ইউটিউবে গীতা শুনবেন, দেখবেন আপনাদের আত্মাও এক অদ্ভুত কারণে তৃপ্তি পাবে, যার ব্যাখ্যা আপনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন না। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের লেখা শেষ করছি। ভালো থাকবেন।
পোস্টে ব্যবহৃত স্ক্রিনশট গুলি আজ নিয়েছি তাই তারিখ পরিবর্তিত দেখাচ্ছে।