"দার্জিলিং ভ্রমনের প্রথম দিনের গল্প"

in Incredible India2 days ago
IMG_20250610_225029.jpg

Hello,

Everyone,

সুপ্রভাত সকলকে।
এই মুহূর্তে ঘড়িতে ৫.৫৪ মিনিট। সিটং এর একটি হোমস্টের রুমে বসে এই মুহূর্তে আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য পোস্ট লেখা শুরু করছি। যদিও জানি না পোস্টটা সম্পূর্ণ করতে পারবো কিনা, কারণ কিছুক্ষণের মধ্যে তৈরি হয়ে আমাদেরকে বেরোতে হবে পরবর্তী ডেস্টিনেশনের জন্য।

IMG_20250610_054708.jpg

পাশে আমার আরও তিনজন বান্ধবী তৈরি হচ্ছে। কারণ গতকাল রাতে প্ল্যান হয়েছে আমরা ভোর বেলায় চারিদিকে একটু ঘুরে দেখবো। মনেহচ্ছে সূর্যোদয় যেন আজ এখানে সময়ের পূর্বেই হয়ে গেছে। বর্তমানে বাইরে বেশ আলোকিত পরিবেশ।

তবে আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে এখানকার পরিবেশ নিয়ে নয়, বরং এখানে পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত যে অভিজ্ঞতা ছিলো সেই বিষয়ে গল্প করবো। আমার পূর্ববর্তী পোস্ট যারা পড়েছেন, তারা প্রত্যেকেই জানেন আমি বান্ধবীদের সাথে দার্জিলিং ঘুরতে এসেছি, তাও জীবনে এই প্রথমবার। আমাদের এখানে চলতি একটা কথা আছে বাঙালির প্রিয় ঘুরতে যাওয়ার জায়গায় সব থেকে কমন হলো, দি-পু-দা। অর্থাৎ দীঘা‌, পুরি‌ ও দার্জিলিং।

IMG_20250608_104143.jpg

তবে বেশ কয়েকবার দীঘা ঘুরে দেখা হলেও, পুরি কিংবা দার্জিলিং কোথাও যাওয়া হয়নি। তবে এটাও ভাবিনি যে পুরি যাওয়ার আগে দার্জিলিং আসতে পারবো। কিন্তু দার্জিলিং আসার পর সিদ্ধান্ত নিলাম, পুরীতেও তো একবার বান্ধবীদের সাথে যাবো। কারণ ইতিপূর্বে একসাথেই আমাদের দীঘা ঘুরে দেখা হয়েছে। আর এবার দার্জিলিং ও ঘুরলাম, তাই সকলের সাথে পুরিও উপভোগ করবো।

IMG_20250608_231717.jpg
IMG_20250608_231320.jpg
IMG_20250608_231311.jpg

যাইহোক গত পরশু রাতের বেলায় বাড়ি থেকে রওনা হয়েছি, কারণ আমাদের ট্রেন ছিলো রাত‌ ২.৩০ মিনিটে। আমাদের ওখানকার কলকাতা স্টেশন থেকে। দার্জিলিং এর মত কলকাতা স্টেশনটিও আমার এই প্রথমবার ঘোরা হলো। কারণ মূলত দূরপাল্লার বেশকিছু ট্রেন ওই স্টেশনের থেকেই যাতায়াত করে। তাই আমাদের ট্রেন অর্থাৎ দার্জিলিং মেল ধরার জন্য আমাদেরকেও ওই স্টেশনে যেতে হতো।

গোছগাছ মোটামুটি কমপ্লিট হয়েছিল দুপুরের মধ্যেই। এরপর বাড়ির প্রতিদিনকার সমস্ত কার্যাবলী সম্পন্ন করে, সন্ধ্যাবেলায় বুমিং এর কাজ শেষ করে, অল্প একটু ডিনার করে নিয়ে, শুভর সাথে বেরিয়ে পড়েছিলাম আমি লোকাল ট্রেন ধরার উদ্দেশ্যে।

IMG_20250608_231645.jpg
IMG_20250608_234332.jpg

কারণ তখন গন্তব্য ছিলো কলকাতা স্টেশন। বিধাননগর স্টেশনে নেমে প্রায় দশ থেকে পনেরো মিনিট পায়ে হেঁটে আমাদের কলকাতা স্টেশনে পৌঁছাতে হয়েছিলো। দুর্ভাগ্যবশত যেহেতু অনেকটা রাত হয়ে‌ গিয়েছিলো, তাই আমরা কোনো টোটো বা অন্য কোনো গাড়ি পাইনি। তাই লাগেজ নিয়ে হেঁটেই অতদূর আসতে হয়েছিলো।

IMG_20250608_232548.jpg
IMG_20250608_232810.jpg

সেই মুহূর্তে এতো বেশি গরম ছিলো যে, সেটা আসলেই আপনাদের লিখে বোঝাতে পারবো না। যাইহোক প্রথমবার কলকাতার স্টেশনকে দেখার সুযোগ হওয়াতে মুহূর্ত গুলোকে ক্যামেরাবন্দি করতে ভুল করিনি। এরপর শুরু হল দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষা কারণ, আমরা মোটামুটি ১১ টা নাগাদ স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলাম। আর আমাদের দার্জিলিং মেলের সময় ছিলো রাত আড়াইটা নাগাদ। এতটা সময় ওখানেই গল্প গুজবের মাধ্যমে কেটেছে। অনেক কিছু প্ল্যানিং ওখানে বসেই করা হয়েছে। আর সব থেকে যেটা বেশি হয়েছে, সেটা হলো ছবি তোলা।

IMG_20250609_011457.jpg
IMG_20250608_233431.jpg

তবে সমস্ত ছবি এই মুহূর্তে আমার কাছে নেই, কারণ যার যখন যেমন মনে হয়েছে, তার মোবাইলেই সকল মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করা হয়েছে। তাই সেই ছবিগুলো এই মুহূর্তে এক জায়গায় নেই। তবে আমার ফোন থেকে যে ছবিগুলো আমি তুলেছিলাম, সেগুলোই কেবলমাত্র আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।

প্রায় ১.৪৫ নাগাদ আমাদের ট্রেন দিয়ে দিয়েছিলো, তাই আবার লাগেজ নিয়ে শুরু হয়েছিল আমাদের ট্রেনের উদ্দেশ্যে যাত্রা। আমরা এসিতে টিকিট পাইনি, তাই স্লিপার ক্লাসে টিকিট কাটা হয়েছিলো। মোটামুটি বেশ কিছুটা হেঁটে গিয়ে আমাদের কম্পার্টমেন্ট পেলাম। সেখানে সিট নম্বর খুঁজে, লাগেজ গুলোকে সেট করে দিয়ে, নিজেদের মতো বসে পড়লাম।

অতো রাতে বাড়ির সকলকে আর ফোন করা হয়নি। আর ট্রেনও বেশ কিছুটা লেট করেই ছেড়েছিল। ট্রেন ছাড়ার পর বেশ ক্লান্ত লাগছিলো, কারণ দীর্ঘ সময় ওখানে বসে গরমের মধ্যে অপেক্ষা করতে হয়েছিলো। কিছুক্ষণ বাদে সকলেই শুয়ে পড়লো, তাই আমিও আর দেরি না করে শুয়ে পড়েছিলাম, তবে ঘুম তেমন হয়নি।

IMG_20250609_023729.jpg

গতকাল ট্রেনটা অনেক লেট করেছে। কোথাও কোথাও ১০-১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকেছে সিগন্যালের অপেক্ষায়। আর গতকাল এতো বেশি রোদ্দুর ছিল যে, ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়লে ট্রেনের ভেতরে বসে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ছিলো। তবে আসার পথে স্টেশন গুলোর নাম এতই বিচিত্র ছিলো যে সেটা নিয়ে হাসাহাসি করে আমরা অনেকটা সময় পার করেছি।

IMG_20250609_130000.jpg
IMG_20250609_114947.jpg

শুধু তাই নয় এর পাশাপাশি চলেছে আমাদের বিভিন্ন জিনিস খাওয়া, যেগুলো আমরা বাড়ি থেকেই নিয়ে এসেছিলাম। তবে ট্রেনের মধ্যে নেটওয়ার্কের এতো‌ সমস্যা হচ্ছিলো‌‌ যে, এনগেজমেন্টে রিপোর্ট পাবলিশ করতে আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। তবুও আমি চেষ্টা করেছি অন্যের কাছ থেকে হটস্পট নিয়ে কাজটি করার।

IMG_20250609_163107.jpg
IMG_20250609_152527.jpg

যাইহোক এইভাবে দিনটা অতিক্রম করার পর, দুপুর প্রায় ৩.২০ নাগাদ আমাদের ট্রেন এসে পৌঁছালো নিউ জলপাইগুড়ি। এরপর সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে আমরা রওনা দিয়েছিলাম এই সিটং এ আসার উদ্দেশ্যে। চলতি পথে বেশ কিছু জায়গা ঘুরে দেখেছিলাম। আর সব থেকে যা উপভোগ করেছিলাম, তা ছিলো প্রাকৃতিক দৃশ্য।

জীবনে প্রথমবার প্রকৃতিকে বোধহয় এতো কাছ থেকে উপভোগ করলাম। হাত বাড়ালেই মেঘেদের ছোঁয়া। গাড়ির জানালা দিয়ে হালকা ঠান্ডা বাতাস, আর তার সাথে পাহাড়ে ওঠার ভয় ও আনন্দ। সমস্ত কিছু মিলিয়ে এক অদ্ভুত অনুভূতি, যার গল্প আপনাদের সাথে পরবর্তী কোনো পোস্টে শেয়ার করবো।

আজ তাহলে এই পর্যন্তই থাক। বাকি জার্নির গল্পটা আপনারা অবশ্যই আমার পরবর্তী লেখা পোস্টের ও ছবির মাধ্যমে ঘুরে দেখতে পারবেন। খুব ভালো থাকুন সকলে। ধন্যবাদ।

Sort:  
Loading...
 yesterday 

Thank you for your support @shiftitamanna. 🙏

Thank you for sharing quality content on Steemit
You have been supported by the team:


Curated by: @dove11