"একে অপরের প্রতি বিশ্বাস বাঁচিয়ে রাখা, সম্পর্কে থাকা দুটো মানুষেরই দায়িত্ব"

in Incredible Indiayesterday
IMG_20250825_235017.jpg

Hello,

Everyone,

এই মুহূর্তে মনটা খুবই খারাপ। সন্ধ্যা থেকে অনেকটা সময় ইতিমধ্যে পার হয়েছে ঠিকই, তবে মন খারাপটা কিছুতেই যেন কমছে না। কিছু কিছু ঘটনা যখন আমাদের জীবনে ঘটে, তখন যেন পায়ের তলার মাটি সরে যায় আবার ঠিক সেই মুহূর্তেই যেন মনে হয়, আকাশ ভেঙে পড়েছে মাথার উপরেও।

নিজেকে দিশাহারা মনে হয়, নাকি অসহায়, ঠিক বুঝে উঠতে পারি না। কারোর জীবনের ঘটা কোনো ঘটনা নিজের জীবনের ফেলে আসা খারাপ দিনগুলোকে এমনভাবে নাড়িয়ে দেয় যে, চাইলেও সেই মুহূর্তে নিজেকে কোনো রকম ভাবেই বোঝানো সম্ভব হয় না।

এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মানুষ যে কোনো সম্পর্কের প্রতি শুধু যদি একটা অনুভূতি বাজিয়ে রাখতে পারে, তাহলে আর অন্য কোনো অনুভূতি সেই সম্পর্কে না থাকলেও বোধহয় সম্মানের সহিত সম্পর্কটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া যায় জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত।

বিশ্বাস এই শব্দটা খুব ছোটো হলেও এটা একটা সম্পর্কের মধ্যে বজায় রাখাটা যে কতটা কঠিন, তা বোধহয় এই মুহূর্তে আমার মতন করে আর একজনই উপলব্ধি করতে পারছে। আর আমার থেকেও শতভাগ‌ বেশি কষ্টে তিনি রয়েছেন এই মুহূর্তে।

বিশ্বাস ভাঙ্গার কষ্ট যে কোনো সান্তনা দিয়েই ভোলানো যায় না, এটা আমি খুব ভালো করে উপলব্ধি করতে পারি। আর যেমনটা বললাম, "বিশ্বাস" - এই অনুভূতিটা যদি একটা সম্পর্কে থাকে, সেখানে ভালোবাসা, ভালোলাগা, প্রেম,‌ এই সমস্ত অনুভূতি না থাকলেও সম্পর্কটাকে টেনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু বিশ্বাসটাই যদি না থাকে তাহলে শুধু সম্পর্কটা না, কোথাও যেন নিজেকেও অর্থহীন মনে হয়।

IMG_20250825_235100.jpg

অথচ বর্তমানে আমরা এমন একটা সময় দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে বিশ্বাসটাকে বজায় রাখার দায় বোধহয় কারোরই নেই। আর যারা সেটাকে বজায় রেখে চলার চেষ্টা করে, অদ্ভুতভাবে সেই মানুষগুলোই জীবনে সবথেকে বাজে ভাবে ঠকে যায়।

এমনভাবে ধাক্কা খায় যেটা, সামলে ওঠা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এটা আমি আমার জীবন দিয়েই উপলব্ধি করেছি। জীবনে এমন ধাক্কা খেয়েছি, যেটা আজীবন সামলে উঠতে পারবো না, এটা জানার পরেও নিজেকে বদলাতে পারিনি এতটুকুও।

একটা সম্পর্কে কখনোই একটা মানুষ থাকে না। সর্বদাই দুটো মানুষের দ্বারাই একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর সেই সম্পর্কটাকে সুন্দরভাবে চালনার দায়িত্ব দুটো মানুষের উপরেই থাকে। একজন নিজের সবটা দিয়ে সম্পর্কটাকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে চলে। তবে একটা সময় গিয়ে যখন উপলব্ধি করা যায়, উল্টো দিকের মানুষটা সামান্য চেষ্টাও করেনি, তখন চেষ্টা করে চলা মানুষটা এমন ভাবে হার মেনে নেয় যে, সম্পর্কটাই নিজের অস্তিত্ব হারায়।

আর অদ্ভুতভাবে যে মানুষটা কখনো সম্পর্কটাকে বাঁচিয়ে রাখার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করেননি, সে অবলীলায় সেই মানুষটার দিকে আঙ্গুল তোলে যে প্রাণপণ চেষ্টা করেছিলো সম্পর্কটাকে বাঁচিয়ে রাখতে।

কত সহজেই এই কাজগুলো মানুষ করে চলেছে। তবে ঈশ্বরের কি লীলা জানি না, অদ্ভুতভাবে এই মানুষগুলোই জীবনে ভালো থাকে। মানসিক দিক থেকে হোক, শারীরিক দিক থেকে হোক, কিংবা সামাজিক দিক থেকে। মান-সম্মান, সম্পর্ক, বন্ধু, আত্মীয়-স্বজন, আনন্দ-হাসি-খুশি সবকিছু ঘিরে থাকে এই মানুষগুলোকে।

অথচ যে মানুষটা একা হাতে একটা সম্পর্কে বিশ্বাস, ভরসা, সম্মান সমস্ত কিছু বজায় রাখার চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত হেরে গেলো, সেই মানুষটার পাওনা হয় অবিশ্বাস, কষ্ট, শারীরিক যন্ত্রণা, অসহায়তা,‌ অনিশ্চয়তা, টানাপোড়েন, সামাজিক অসম্মান, আর সব থেকে বেশি নিজের আত্মসম্মান বিসর্জনের অনুভূতি, যেগুলো অন্যান্য যন্ত্রণাকে ছাপিয়ে যায়।

IMG_20250825_235100.jpg

বিশ্বাস ভাঙার যন্ত্রণা কতটা সাংঘাতিক হতে পারে এটা যারা জীবনের উপলব্ধি করতে পেরেছে, তারা বোধহয় আজ আমার লেখার সাথে সহমত হবেন এবং নিজেদের জীবনের সেই মুহূর্তটাকে মনে করবেন, যে মুহূর্তে তারাও এই যন্ত্রণা অনুভব করেছিলেন। আজ খানিক নিজের জীবনের ফেলে আসা যন্ত্রণাগুলোকে অনুভব করে কষ্ট পাচ্ছি। আরো কষ্ট পাচ্ছি সেই মানুষটার কথা ভেবে, যে মানুষটার জীবনে পাওয়ার ঘর সবটাই শূন্য।

ঈশ্বর কি সত্যিই এতো নিষ্ঠুর হন? নাকি তিনি পরীক্ষা নেন?
তবে পরীক্ষা নেওয়ারও বোধহয় একটা সীমা থাকা উচিত। একটা মানুষের কাঁধে সমস্ত না পাওয়ার দায় চাপিয়ে দিলে, সেই মানুষটাই বা কতদিন সেই চাপ নিতে পারবে? সেটাও বোধহয় ওনার ভেবে দেখা উচিত।

বড্ড অসহায় লাগছিলো আজ নিজেকে। সত্যিই নিজেকে এতোটুকুও যোগ্য করে তুলতে পারলাম না, যাতে খুব কাছের মানুষের কষ্ট দূর করতে পারি। এটাও আসলে এক রকমের অসহায়ত্ব। হয়তো আমার মত করে এই মুহূর্তে এই অসহায়তা অন্য কেউ উপলব্ধি করতে পারবে না।

তবে ঈশ্বরের উপরে বিশ্বাস আজও অটুট। মানুষের মতো তিনি নিশ্চয়ই বিশ্বাস ভঙ্গ করবেন না। দেরিতে হলেও সত্যি যেমন সামনে আসে, তেমনি হয়তো ঈশ্বর ও সকলকেই তার কর্মফল মিলিয়েই দেবেন।

যাইহোক এইটুকুই আজকের মত থাকুক। মনের ভার অনেক, সবটা লিখে শেষ করতে পারবো না বোধহয়। তবে হ্যাঁ কিছু স্মৃতি বড্ড বেশি কষ্ট দেয়, কিছু অতীতের ধাক্কায় বর্তমানটা কেমন যেন নড়বড়ে হয়ে যায়।

ভালো থাকবেন সকলে। শুভ রাত্রি।

Sort:  
Loading...