"তিতলির এই বছরের জন্মদিনের আয়োজন - শেষ পর্ব""

in Incredible Indiayesterday
IMG_20250822_223817.jpg

Hello,

Everyone,

আজ তিতলির জন্মদিনের দ্বিতীয় পর্বের পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো, সন্ধ্যার পর থেকে কাটানো আনন্দের কিছু মুহূর্তের কথা। রান্না ঘরের কাজ শেষ হতে অনেকটা লেট হয়েছিলো, তাই অন্যদিকে সকলে বেলুন ফুলিয়ে ঘর সাজানোর কাজ শুরু করেছিলো। মাঝে মধ্যে রান্নাঘর থেকে বেলুন ফাটার আওয়াজ পাচ্ছিলাম, আমার আবার বেলুন ফাটার আওয়াজে বেশ ভয় লাগে, তবে তাতান বেশ মজা পায়।

IMG_20250820_170158.jpg
IMG_20250820_170146.jpg

যাইহোক মাঝেমধ্যে দুই একটা আওয়াজ শুনলেও কাজের ফাঁকে ঘর সাজানোর ছবি তুলতে ভুল হয়নি। বাচ্চাদের জন্মদিনে বাচ্চারা সবথেকে বেশি আনন্দ করলে, বড়দের হয়তো তার থেকে বেশি আর কিছুই কাম্য থাকে না।

সারাদিন মেঘলা আকাশ ছিলো। মাঝেমধ্যে বৃষ্টিও হয়েছিলো। তিতলি সকাল থেকে সকলের জন্য অপেক্ষা করছিলো, তবে বিকেল থেকে যখন সকলেই আসতে শুরু করেছে, তখন থেকে ও ওর জন্মদিনটা আরও বেশি করে উপভোগ করতে শুরু করেছিলো।

IMG_20250820_192746.jpg
IMG_20250820_193124.jpg

যাইহোক সন্ধ্যার পর নতুন জামা পড়ে তৈরি হয়ে সে কেক কাটার জন্য রেডি ছিলো।‌‌ সেই সাথে তাতানোও তাই আমরা সকলেই বাকি আয়োজনগুলো করে নিয়ে, কেক কাটার অনুষ্ঠান শুরু করলাম। হলুদ রঙের যে চকলেট গুলো আপনারা দেখতে পারছেন, যার ছবি গতকালও আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম।

IMG_20250821_224834.jpg

এই চকলেটগুলো দিদি স্পেশালি ওর বার্থডে এর জন্য অর্ডার দিয়ে বানিয়েছিলো। আসলে দিদির ওয়ার্ডেই, দিদির আন্ডারে কাজ করে একজন সিস্টার, নিজে বাড়িতে এই চকলেট গুলো তৈরি করেন। তাই দিদি ওনার কাছেই এই চকলেট গুলো অর্ডার দিয়েছিলো।

IMG_20250821_224847.jpg

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যাদের চকলেট তৈরি, কেক বেকিং এই জাতীয় কাজে খুব ইন্টারেস্ট আছে। তাই চাকরি করার পাশাপাশি অনেকেই এই ধরনের কাজগুলোও করে থাকেন। ওই দিদিও তেমনই খুব যত্ন সহকারে তিতলির জন্য এই চকলেট গুলো তৈরি করেছিলেন। আর অন্য যে চকলেট গুলো দেখেছেন, সেগুলো দিদি আলাদা করে তিতলির জন্য কিনে এনেছিলো।

IMG_20250822_224332.jpg
IMG_20250822_224351.jpg

কেকটা যদিও বা তিতলিই পছন্দ করেছিল। তবে মিও-আমোরের কেক খেতে খেতে আমরা এতটাই অভ্যস্ত যে, সুগার এন্ড স্পাইস এর কেক আমার অন্ততপক্ষে খুব একটা ভালো লাগে না। তবে দিদিদের বাড়ির কাছাকাছি যে মিও-আমোরের দোকানটা আছে, সেটা নতুন করে পুজোর জন্য সাজানো হচ্ছে। ভিতরের ডেকোরেশনও বোধহয় কিছু পরিবর্তন করবে, যে কারণে বেশ কয়েকদিন ধরেই দোকানটা বন্ধ রয়েছে।

তাই অগত্যা আমাদেরকে সুগার অ্যান্ড স্পাইস থেকে কেক আনতে হয়েছিলো। যেহেতু আমার ও দিদির সেদিন পারণের কারনে নিরামিষ ছিলো এবং সৌভাগ্যবশত তিতলি যে কেকটা পছন্দ করেছিলো সেটাও এগ লেস কেক ছিলো।

IMG_20250820_193239.jpg
IMG_20250820_193132.jpg

যাইহোক এরপর আমরা সকলে মিলে তিতলিকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানালাম। ওর কেক কাটা হলো। তারপর এক এক করে দিদি, দাদা, আমার বাবা, তিতলির জ্যেঠু জ্যেঠিমা সকলে মিলেই ওকে কেক ও‌ পায়েস খাওয়ালো। তারপর আমরা বেশ‌কয়েকটা ছবি তুললাম। তারপর তিতলিকে খাবার গুছিয়ে দিলাম। ওর খাওয়া দাওয়া হওয়ার পরে আমারও চলে গেলাম খাওয়া-দাওয়ার পর্বে।

IMG_20250820_195843.jpg

হ্যাঁ, একটু তাড়াহুড়োর মধ্যেই খাওয়া-দাওয়া শেষ করতে হয়েছিলো। কারণ সেদিন রাতে আমাকে বাড়িতে ফিরতেই হতো। আমার শ্বশুরমশাই ও শাশুড়িমা কেউ বাড়িতে ছিলেন না এবং পরদিন শুভকেও অফিসে যেতে হতো। তাই সকালে এসে সমস্ত কাজ শেষ করতে পারতাম না বলে, রাত্রেই বাড়িতে আসবো এমনটা ঠিক ছিলো।

আর আমি থাকবো না শুনেই আমার বান্ধবীরাও থাকবে না বললো। যদিও এটাই স্বাভাবিক। তবে বান্ধবীদের সঙ্গে যুক্ত হলো আমার বোনরাও। ওরাও আমার সাথে আমাদের বাড়িতে আসবে সেই প্ল্যান করে নিলো। সুতরাং সকলে খাওয়া-দাওয়া করে নিলো। আমি, দিদি এবং দাদা তিন জনে মিলে পরিবেশন করলাম। তবে আমি সেদিনের কিছু খাইনি।

IMG_20250820_193903.jpg

IMG_20250820_194051.jpg

IMG_20250820_194512.jpg

IMG_20250820_194315.jpg

IMG_20250820_194211.jpg

IMG_20250820_194132.jpg

কারণ সারাদিন রান্না ঘরে সমস্ত কিছু ঘাটাঘাঁটি করে কেমন যেন আমার একটা অস্বস্তি হচ্ছিলো। কতক্ষণে বাড়িতে ফিরে স্নান করে ফ্রেশ হবো সেই অপেক্ষাতেই ছিলাম। তবে হ্যাঁ বাড়ি আসার আগে দিদি টিফিন কারি করে সমস্ত কিছু গুছিয়ে দিয়েছিলো। যাতে রাতে শুভ খেতে পারে এবং পরদিন আমি খেতে পারি।

যাইহোক এর পর একটু তাড়াহুড়ো করে আমরা সকলেই দিদি বাড়ি থেকে রওনা হলাম। তিতলির মনটা একটু খারাপ হচ্ছিলো ঠিকই, তবে সত্যি কথা বলতে থাকার উপায় ছিল না বলেই থাকতে পারেনি।

আমরা সবেমাত্র ট্রেনে উঠেছি, তখনই শুভ ফোন করে জানালো তিতলির গিফটটা চলে এসেছে। আপনাদেরকে জানাতে ভুলে গিয়েছিলাম, তিতলির জন্য অনলাইনে একটা কালার পেন্সিলের বক্স অর্ডার করেছিলাম, কারণ ওর এই সকল জিনিসই বেশি পছন্দ।

IMG_20250822_225504.jpg

IMG_20250822_225525.jpg

IMG_20250822_225553.jpg

শুভ ছবিও পাঠালো, আমিও দিদিকেও হোয়াটসঅ্যাপে ছবিটা পাঠিয়ে রাখলাম, যাতে তিতলি দেখে অন্তত খুশি হয় এবং ওকে মেসেজ করে রাখলাম যাতে পরদিন বাবাকে পাঠিয়ে দেয়। ওর টিফিন কারি সহ তাহলে আমি তিতলির গিফ্টটাও পাঠিয়ে দিতে পারবো। কারণ পরদিন আমার পক্ষে যাওয়া আর সম্ভব ছিল না।

যাইহোক এরপর বাড়িতে ফিরে ওরা সকলে ফ্রেশ হলো। আমি শুভকে খাবার দিয়ে নিজে ফ্রেশ হয়ে নিয়ে, রাতে শুধুমাত্র একটু পায়েশ খেলাম। আর কোনো কিছুই খেতে ইচ্ছে করছিল না। তবে সবথেকে যেটা ভুল হয়েছে পায়েস খাওয়ার পরে আমি আবার আইসক্রিম এবং ফ্রিজে থাকা কোল‌ ড্রিংকস একসাথে খেয়েছিলাম।‌‌ আসলে আমার একটু বেশিই গরম লাগছিলো, তাই ঠান্ডা আইসক্রিম ও কোল ড্রিংকস খেতে খুব ভালোই লাগছিলো।

তবে দুর্ভাগ্যবশত অতো রাতে স্নান করার পর যখন ঠান্ডা গুলো খেয়েছি, তখন আমার মনে রাখা উচিত ছিল যে, এতে শরীরটা খারাপ হতে পারে। ব্যাস তেমনটাই হয়েছে সেদিন তো সকলেই তাড়াতাড়ি করে শুয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু পরদিন সকালে যখন উঠলাম, তখন আমার গলার অবস্থা ভীষণ খারাপ ছিলো। গলা এতো বেশি ব্যাথা‌ ছিলো যে, রীতিমত জল খেতেও কষ্ট হচ্ছিলো।

IMG_20250822_230051.jpg

যাইহোক সেই গলা ব্যথা নিয়েই চলছি এখনো। গতকাল অবশ্য বাবা এসে তিতলির গিফটটা এবং দিদি টিফিন কারি গুলো নিয়ে গেছে। আসলে আমার দিদি, তিতলি, ও তাতান প্রত্যেকেই টিফিন নিয়ে প্রতিদিন বাড়ি থেকে বেরোয়। তাই টিফিন কারি ওদের সকলেরই প্রয়োজন। সেগুলো আমার কাছে আটকে রাখলে ওদের রীতিমতো অসুবিধা হতো।

যাইহোক এইভাবে তিতলির জন্মদিনটা আমরা প্রত্যেকে ভীষণ আনন্দ করে কাটিয়েছি। সর্বোপরি আমাদের প্রত্যেকের প্রচেষ্টায় তিতলি যে নিজের জন্মদিনটা অনেক আনন্দে কাটাতে পেরেছে, এটাই আমাদের সবথেকে বড় আনন্দ।

আমি চেষ্টা করলাম প্রতিটা মুহূর্ত আপনদের সাথে শেয়ার করার। এর পূর্বেও আপনাদেরকে বলেছি আপনারা তিতলি ও তাতানকে আশীর্বাদ করবেন, যাতে ওরা একটু ভালো মানুষ হতে পারে।

খুব সত্যি কথা বলতে আজকালকার যুগের বাচ্চারা এতো বেশি আত্মকেন্দ্রিক হয় যে, কখনো কখনো আমারও ভয় লাগে এই দিনগুলো হয়তো ভবিষ্যতে তিতলি, তাতানও মনে রাখবে না। যাইহোক এটা শুধু আমার আশঙ্কা মাত্র, তবে উত্তর তো‌ সবটাই সময়ের কাছে।

ভালো থাকবেন আপনারা প্রত্যেকে।শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...

Congratulations!! Your post has been upvoted through steemcurator06. We encourage you to publish creative and quality content.

IMG_20250729_164321.png

Curated By: @fantvwiki

 13 hours ago 

Thank you for your support @fantvwiki. 🙏