"অপরিকল্পিত ভাবেই সুন্দর কাটলো এই বছরের নবমীর রাতটা- শেষ পর্ব"

in Incredible India3 days ago
IMG_20251001_222853.jpg

Hello,

Everyone,

গতকালকের পোস্টে আপনাদেরকে জানিয়েছিলাম মামা বাড়িতে আমি এবং আমার দিদিরা একত্রিত হয়ে, রাতের দিকে মামাবাড়ির কাছাকাছি তিনটে পুজো দেখতে গিয়েছিলাম। যার মধ্যে গতকাল আমরা সবাই ক্লাবের প্যান্ডেল ও প্রতিমা দর্শনের অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম।

আজ পরবর্তী পর্বে শেয়ার করবো বাকি দুটো প্যান্ডেল ঘোরার অভিজ্ঞতা। আমরা সবাই ক্লাব থেকে বেরিয়ে কিছুটা হেঁটে আমরা পরবর্তী পূজা প্যান্ডেল দর্শন করতে গিয়েছিলাম। গোটা রাস্তাটা যেহেতু নো এন্ট্রি করা ছিলো, তাই সেইভাবে কোনো গাড়ির ভিড় ছিলো না। তবে মানুষের ভিড় এতোটাই ছিলো যে, তা চোখে পড়ার মতন ছিলো।

IMG_20251003_215616.jpg

IMG_20251003_215337.jpg

যাইহোক রাস্তায় লাইটিং গুলো দেখতে ও অসম্ভব সুন্দর লাগছিলো। বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়ে আমরা দ্বিতীয় প্যান্ডেলটি পরিদর্শন করলাম। প্যান্ডেলটা সাবেকি আনায় ভরা ছিলো। এটি কোনো থিম প্যান্ডেল ছিল না। আমার আবার এই সাবেকিয়ানা বিষয়টা খুবই ভালো লাগে।

IMG_20251001_212729.jpg
IMG_20251001_212931.jpg

যাইহোক এই প্যান্ডেলে মানুষের ভিড় তেমনটা ছিলো না। তাই এখানে ঢুকতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি। ভিতরে ঢুকে আমরা প্রতিমা দর্শন করলাম এবং সেই মুহূর্তে সন্ধ্যা পুজোর আরতি শেষ হয়েছিলো। তখনও যেন ধুপ ধুনোর গন্ধে মুখরিত ছিলো সম্পূর্ণ পুজো মন্ডপ।

যাইহোক এরপর সেখান থেকে বেরিয়ে আমরা পরবর্তী প্যান্ডেলে যাওয়ার উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করলাম। মাঝখানে তিতলি আইসক্রিম খাবে বলে বায়না করাতে আমরা সকলেই দাঁড়িয়ে একটা দোকান থেকে আইসক্রিম খেলাম। সাধারণত আমুলের আইসক্রিম গুলোই খেতে বেশি ভালো লাগে। আমার সব সময় চকলেট এর কোণ আইসক্রিম পছন্দ।

IMG_20251001_215706.jpg
IMG_20251001_215649.jpg

তবে এই দিন আমরা একটা নতুন আইসক্রিম ট্রাই করলাম। "শাহী কুলফি" আইসক্রিমটা তো অসম্ভব সুস্বাদু ছিলোই, তার থেকেও বেশি সুন্দর ছিল আইসক্রিমের কৌটোটা। তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য ছবিটা তুলে নিলাম। তবে স্বাদটা ভাগ করে নিতে পারলাম না। তবে যদি সম্ভব হয় অবশ্যই আপনারাও এই আইসক্রিমটা একবার ট্রাই করবেন, আশাকরি আপনাদেরও ভীষণ ভালো লাগবে।

IMG_20251001_222756.jpg
IMG_20251001_222659.jpg

যাইহোক এরপর আমরা রওনা করলাম একেবারে শেষ প্যান্ডেল দর্শন করার জন্য। এই প্যান্ডেলটিও বেশ সুন্দর করেছে। সমগ্র প্যান্ডেলটি তৈরি হয়েছিল লাল রঙের গামছা ও বাঁশি দিয়ে। প্যান্ডেলে ঢোকার মুখেই শিব ঠাকুরের একটা বড় মূর্তি ছিলো।

IMG_20251001_222921.jpg
IMG_20251001_222853.jpg

এদিন যতগুলো প্রতিমা দর্শন করেছি সব থেকে এই প্যান্ডেলের প্রতিমা আমার ভালো লেগেছে। কারণটা আমি আগের পোস্টেই আপনাদের জানিয়েছি, একচাঁলা ঠাকুর এবং শোলার সাজসজ্জা থাকলে সেই ঠাকুর আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। যাইহোক এখানে খুব একটা বেশি ভিড় ছিল না, তাই সকলে মিলে একটু ছবিও তুলে নিয়েছিলাম।

IMG_20251001_223241.jpg
IMG_20251001_223115.jpg
IMG_20251001_223110.jpg
IMG_20251001_223104.jpg

লাল গামছা ও বাঁশির সাথে সাথে প্যান্ডেলে ছিলো রাধাকৃষ্ণের খুব সুন্দর সুন্দর ছবি। যেগুলোর কিছু ছবিও তুলেছিলাম এবং সবশেষে দাদা এবং দিদিকে দাঁড় করিয়েও একটা ছবি তুলেছিলাম। সত্যি কথা বলতে দাদা এইভাবে আমাদের সাথে ঘুরে ঠাকুর দেখতে পারছে, এটা যে আমাদের কাছে কতখানি বড় পাওনা তা বলে বোঝানো যাবে না। আর এরজন্য ঈশ্বরের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। তার আর্শীবাদ ছাড়া এই অসম্ভব কখনোই সম্ভব হতো না, তাই একটা আলাদা রকমেরই ভালোলাগা ছিলো।

IMG_20251001_223401.jpg
IMG_20251001_223333.jpg

প্যান্ডেলে প্রবেশের দ্বারে দুপাশে দুটো লাইট লাগানো ছিলো, যেটা দেখতে খানিকটা গাছের মতন লাগছিলো। একটা পাশে ক্লাবের সকল মেডেল গুলো সুসজ্জিত অবস্থায় রাখা ছিলো। আর একটা পাশে সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ এই মেসেজটিকে সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য খুব সুন্দর একটা দৃশ্য প্রদর্শন করা ছিলো।

IMG_20251001_223415.jpg

যেখানে একটা বাইক এবং সাইকেলের অ্যাক্সিডেন্টের দৃশ্য দেখানো হয়েছে। সেখানে দুটো নকল মানুষ তৈরি করা আছে, যাদেরকে দূর থেকে দেখে মনে হচ্ছে যেন অ্যাক্সিডেন্টে মারা গিয়েছে, সারা শরীরে রক্ত চিহ্ন।

এই সচেতনবার্তাটা সকলের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার এই প্রয়াসটা সত্যিই প্রশংসনীয়। কারণ এই পূজোর সময়ে মানুষ এমন উদ্ধতভাবে বাইক বা গাড়ি চালায় যে, যে কোনো মুহূর্তে অ্যাক্সিডেন্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই ক্লাবের পক্ষ থেকে এইরকম একটা উদ্যোগ দেখে সত্যিই আমার ব্যক্তিগতভাবে খুবই ভালো লেগেছিলো।

যাইহোক এরপর আমরা সকলে মামা বাড়িতে ফিরে এসেছিলাম। হাবড়াতে আরো অনেক পুজো হয়েছে। তবে সেগুলো অনেকটা দূরে দূরে, যেগুলোতে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিলো না। তাই কাছাকাছির মধ্যেই তিনটা প্যান্ডেল দেখেই এবারের পুজোর সমাপ্ত হয়েছিলো।

এইটুকু যে দেখতে পারবো এমনটাও আশা করিনি। তবে ওই যে আমরা যা পরিকল্পনা করি, তা কখনোই হয় না। কারণ আমাদের হয়ে আমাদের জীবনের সমস্ত পরিকল্পনার দায়িত্ব নিয়ে রেখেছেন উপরের একজন। তাই তার ইচ্ছা মতোই আমাদের জীবন চলে।

যাইহোক এই ছিলো এই বছরের নবমীর রাতের কিছু আনন্দের মুহূর্ত, যা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। আশাকরি আপনাদের সকলের পুজো খুবই ভালো কেটেছে এবং আরও ভালো কাটুক লক্ষ্মী পূজো ও দীপাবলির দিনগুলো, এই প্রার্থনা করে আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন। শুভ রাত্রি।