মহালদিরাম টি গার্ডেন থেকে অভিরাজ হোমস্টের যাত্রাপথের অনুভূতি "

in Incredible India6 days ago
IMG_20250704_235228.jpg

Hello,

Everyone,

মংপুতে রবীন্দ্র ভবন ঘুরে দেখার পর সেখান থেকে আমাদের গাড়ি রওনা দিলো মহালদিরাম টি গার্ডেনের উদ্দেশ্যে। আসলে রাস্তায় যাওয়ার সময় এইরকম অনেক চা বাগান চোখে পড়ে। তবে বর্তমানে মহালদিরাম টি গার্ডেনে চা পাতা তোলা হয় না বলে, সকলের অবাধ বিচরণ রয়েছে।

IMG_20250704_233857.jpg

এখান থেকে কিছুটা চা পাতা তুললেও কোনো সমস্যা নেই, এমনটাই আমাদের ড্রাইভার দাদার কাছ থেকে জানতে পারলাম। যাইহোক দু তিন ঘোরার কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, কিন্তু যে বাহনে আমরা ঘোরাঘুরি করছিলাম তার সাথেই আপনাদেরকে পরিচয় করানো হয়নি। তাই আজকে আপনাদের সাথে তার একটা ছবি শেয়ার করলাম।এটি ছিল দার্জিলিং এ আমাদের ঘোরার সঙ্গী।

IMG_20250704_233925.jpg

আর এর যিনি চালক ছিলেন, তিনি ভীষন ভালো ছিলেন। তার কথা আলাদা করে কোনো একটা পোস্টে বলবো বলেই, আজ আর বেশি বিস্তারিত আলোচনা করলাম না। যাইহোক বেশ খানিকটা পাহাড়ি পথ পেরিয়ে এসে আমাদের গাড়িটি দাঁড়ালো ছোট্ট একটা বাঁকে। যেখান থেকে আমরা সকলে চারিদিকে চা বাগান ঘুরে দেখলাম।

খুব সত্যি কথা বলতে আমি আর নিচের দিকে নামিনি। গাড়ির সামনে দাঁড়িয়েই নিজের মতো করে চা বাগানের সৌন্দর্য্য উপভোগ করছিলাম। দার্জিলিঙে যতগুলো চা বাগান দেখেছি এটাই যে সব থেকে বেশি সুন্দর ছিলো এ কথা বলবো না। কারণ মিরিকে এর থেকেও অনেক সুন্দর চা বাগান দেখেছি আমরা সকলে। কিন্তু চা গাছ ছুঁয়ে দেখার অনুভূতি, চা বাগানের ভেতরে প্রবেশ করে ছবি তোলা, মিরিকের চা বাগানে তা কোনোভাবেই সম্ভব হয়নি। কারন সেখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ।

IMG_20250704_234313.jpg
IMG_20250704_234247.jpg

যাইহোক আমার বান্ধবীরা এক এক করে নিচের দিকে নেমে গেলো। ওরা নিজেদের মতো করে চা বাগানে ঢুকে ছবি তুলল, রিলস বানালো। তবে আমি আর নিচে নামিনি, কারণ নিচে নামাতা যতটা সহজ ছিলো, পাহাড়ি রাস্তায় ওপরে ওঠাটা ততটাই কষ্টকর। আমার খুব একটা ইচ্ছাও করছিল না। তাই আমি রাস্তার উপরে বেশ কিছুক্ষণ বসলাম। আর মোবাইলে নিজের পছন্দের গান চালালাম। পাহাড়, মেঘ, চা বাগান, সেখানকার নিস্তব্ধতা, সবকিছু সাথে পছন্দের গান মিলেমিশে যেন মুহূর্তটা একার মতন উপভোগ্য হয়ে উঠেছিলো।

IMG_20250704_234220.jpg
IMG_20250704_234156.jpg
IMG_20250704_234134.jpg
IMG_20250704_234113.jpg
IMG_20250704_234044.jpg
IMG_20250704_234001.jpg

গান শুনতে শুনতে রাস্তার পাশে ফুটে থাকা কতগুলো ছোট ছোট ফুল তুলে বেশ কিছুক্ষণ নিজেই পাগলামি করলাম। সকলে নিজেদের ছবি তুলতে ব্যস্ত ছিলো। আমিই বা পিছিয়ে থাকি কেন? তাই নিজের মতন করে পাহাড়ের ওই ছোট্ট ছোট্ট ফুলগুলো তুলে আঙ্গুলের ফাঁকে রেখ, বেশ কিছু ছবি তুলে নিলাম। ছবিগুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন। আর এর মধ্যে থেকে কোন ফুলটা আপনাদের সবথেকে ভালো লাগলো সেটা জানাতে ভুলবেন না।

আশেপাশের পরিবেশটা এতো সুন্দর ছিলো, যেটা আসলে আপনাদেরকে কিভাবে লিখে বোঝানো, আমি নিজেই বুঝতে পারছি না। কি যে অপূর্ব সুন্দর ছিলো সেই পরিবেশটা সেটা খানিকটা হয়তো আপনারা ছবিগুলো দেখে আন্দাজ করতে পারছেন।

IMG_20250704_233800.jpg
IMG_20250704_233718.jpg

যাইহোক সেখানে অনেকটা সময় কাটিয়ে, আমরা আবার পুনরায় রওনা করলাম। চলতি পথে মেঘগুলো যেন রাস্তায় এসে রাস্তা আটকে দেওয়ার চেষ্টা করছিলো। ঘন কুয়াশায় আটকে ছিলো দুপাশের পাইন বনগুলো। তবে সেই সৌন্দর্য্য জানিনা কতটা ছবিতে আপনারা বুঝতে পারছেন। গাড়িতে বসে বাইরের পরিবেশটা দেখার সময়, যেন এক স্বর্গীয় সুখ অনুভব করছিলাম।

IMG_20250704_234340.jpg

এই মুহূর্ত গুলির দু তিনটে ভিডিও বানিয়েছি, যা ফিরে আসার পর থেকে মাঝেমধ্যে দেখি। প্রকৃতির এত কাছাকাছি যাওয়ার সৌভাগ্য এর পরে আর কখনও হবে সত্যিই জানিনা। মেঘাচ্ছন্ন জায়গাটা পার করে পাহাড়ের কোলে লাল রঙের একটি বাড়ি চোখে পড়ল। ড্রাইভার দাদার থেকে জানতে পারলাম এটা কোনো একজন ব্যক্তির নিজস্ব প্রপার্টি, কোনো হোমস্টে নয়।

IMG_20250704_234436.jpg

মনে মনে ভাবলাম এই বাড়িটিতে যারা থাকে, তারা কতখানি সৌভাগ্যের অধিকারী, যে রোজ প্রকৃতিকে এতো কাছ থেকে অনুভব করার সুযোগ তারা পায়। যাইহোক দীর্ঘ পথ পেরিয়ে আমাদের গাড়ি এসে পৌঁছালো পরবর্তী হোমস্টেতে যার নাম ছিল অভিরাজ হোমস্টে। এটি তিনচূলে‌তে অবস্থিত।

IMG_20250704_234504.jpg

সেখানে থাকার অভিজ্ঞতা আমি আপনাদের সাথে পরবর্তী পর্বে শেয়ার করবো। তবে হোমস্টেটা এতো সুন্দর জায়গায় ছিলো, সেটা আশা করছি আপনারা আমার শেয়ার করা ছবিটা দেখে কিছুটা আন্দাজ করতে পারছেন। ভিতরের পরিবেশ, খাওয়া-দাওয়া সবটাই আপনাদের সাথে পরবর্তী পর্বে শেয়ার করছি। ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাদের আজকের ঘুরে দেখা জায়গা গুলো কেমন লাগলো, সে বিষয়ে মন্তব্য করতে ভুলবেন না। প্রত্যেকে খুব ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভরাত্রি।

Sort:  
Loading...