"ঘরোয়া উপায়ে তৈরি বাঁধাকপি ও‌‌ পেঁয়াজের পকোড়ার রেসিপি"

in Incredible India6 days ago
IMG_20250826_200005.jpg

Hello,

Everyone,

আশাকরি আপনারা সকলে ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আপনাদের সকলেরই আজকের দিনটা বেশ ভালো কেটেছে। অনেকদিন হয়েছে আপনাদের সাথে কোনো রেসিপি শেয়ার করা হয় না। তাই ভাবলাম আজ একটা রেসিপি শেয়ার করি।

আসলে গতকাল থেকে শুভর শরীরটা বেশ খারাপ। মাঝখানে বৃষ্টিতে ভিজে বেশ ঠান্ডা লেগেছে। গতকাল ও শরীরটা খারাপ ছিলো, তবে অফিস থেকে ফিরে রাত থেকে জ্বর ওর। তাই আজ আর অফিসে যায়নি।

আর আমরা সকলেই জানি, জ্বর হলে মুখে রুচি থাকে না। কোনো কিছুই খেতে ভালো লাগে না। দুপুরে বেশি ভাত খেতে পারেনি, তাই সন্ধ্যাবেলায় বাড়িতেই একটু পকোড়া বানিয়ে দিয়েছিলাম।

আসলে ওর ঝাল ঝাল কিছু খেতে ইচ্ছা করছিলো ওর। আর বাইরে যাওয়া সম্ভব ছিলো না বলে ভাবলাম, বাড়িতে যা আছে সেটা দিয়ে কিছু একটা বানিয়ে দিই। তখনই হঠাৎ মনে হলো, রেসিপিটাও আপনাদের সাথে শেয়ার করি। হয়তো আপনাদের কখনো ইচ্ছা করলে বাড়িতে তৈরি করতে পারবেন।

হয়তো শীর্ষক দেখে আপনার আন্দাজ করতে পেরেছেন, আমি আজ কি রেসিপি শেয়ার করবো। চলুন রেসিপিতে ব্যবহার করা উপকরণ গুলোর নাম আগে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করি, -

"প্রয়োজনীয় উপকরণ"

নংউপকরণপরিমাণ
১.আঁতপ চালের গুঁড়ো/বাটাহাফ কাপ
২.বেসনহাফ কাপ
৩.সুজিহাফ কাপ
৪.বাঁধাকপির পাতা২-৩ টি
৬.কাঁচা লঙ্কা‌ কুচি৩-৪ টি
৭.সাদা তেল১ কাপ
৮.গোলমরিচ গুঁড়ো২ চা চামচ
৯.পেঁয়াজ২-৩টি(মাঝারি সাইজের)
১০.কালো জিরা½ চা চামচ
১১.লবনস্বাদ অনুসারে
১২.হলুদ গুঁড়ো১চা চামচ

1672344690977_010726.jpg

"তৈরি করার পদ্ধতি"

IMG_20250826_191442.jpg

যদি আঁতপ চাল বাটা ব্যবহার করেন তাহলে সে ক্ষেত্রে চালটা কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। তবে যদি গুঁড়ো ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে ভেজানোর প্রয়োজন নেই। আমি যেহেতু চালটা বেটে ব্যবহার করেছিলাম, তাই কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে সামান্য হলুদ দিয়ে মিক্সিতে পেস্ট করে নিয়েছিলাম। তার মধ্যে অল্প লবণ এবং একটু কালো জিরে দিয়ে ফ্রিজে রেখেছিলাম। যেহেতু আমি পেস্ট তৈরি করার বেশ কিছুক্ষণ বাদে পকোড়া তৈরি করেছিলাম, তাই ফ্রিজে রেখেছিলাম। তবে আপনারা সদ্য পেস্ট বানিয়েও ব্যবহার করতে পারেন।

IMG_20250826_191830.jpg

IMG_20250826_191613.jpg

IMG_20250826_191905.jpg

যাইহোক ফ্রিজ থেকে বের করার পর আঁতপ চাল বাটার মধ্যে লঙ্কা কুচি এবং গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে, তার মধ্যে পরিমাণ মতো বেসন এবং সুজি দিয়ে দিতে হবে। তারপর সামান্য লবণ হলুদ এবং কালোজিরা দিয়ে সবকটা উপকরণকে মেখে নিতে হবে। এই সময় জল ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই, জল ব্যবহার করলে মিশ্রণটা আঠা হবে না। ফলতো পকোড়া তৈরি করার সময় সমস্যা হবে।

IMG_20250826_191342.jpg

IMG_20250826_210834.jpg

IMG_20250826_192804.jpg

এরপর বাঁধাকপির পাতাগুলো ভালো করে ধুয়ে একটু জল ঝরিয়ে নিতে হবে। মাঝখানের যে শক্ত অংশটা থাকে সেটা বাদ দিয়ে পাতাগুলো ব্যবহার করতে হবে। বাঁধাকপির পাতাগুলোকে খুব মিহি করে কুঁচিয়ে তৈরি করে রাখা মিশ্রণের মধ্যে দিতে হবে। তারপরে পেঁয়াজ গুলোকেও কুঁচিয়ে নিতে হবে, ঠিক যেমনটা আপনারা ছবিতে দেখতে পারছেন।

IMG_20250826_192926.jpg

IMG_20250826_193153.jpg

এরপর সমস্ত উপকরণগুলোকে হাতের সাহায্যে ভালো করে চটকে মেখে নিতে হবে। এই সময় অবশ্যই হাতের ব্যবহার করবেন, তাহলেই সমস্ত উপকরণগুলোকে আঠালোভাবে মাখা সম্ভব হবে এবং সব উপকরণগুলো একে অপরের সাথে সুন্দরভাবে মিশে যাবে। এই সময় যদি মনে হয় সামান্য জলের প্রয়োজন আছে তাহলে সেটা ব্যবহার করবেন। আর মাখাটা যদি বেশি পাতলা হয়ে যায়, তাহলে আরও একটু বেসন বা সুজি ব্যবহার করবেন।

IMG_20250826_193543.jpg

IMG_20250826_193809.jpg

এই পর্যন্তই একটু সময়ের প্রয়োজন। এর পরে গ্যাস জ্বালিয়ে কড়াই গরম করে, তাতে পরিমাণ মতন সাদা তেল দিয়ে, মিশ্রণ গুলোকে বড়ার আকারে গরম তেলের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে। মাঝারি আঁচে এপিঠ ওপিঠ করে লাল করে ভেজে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে, গরম গরম বাঁধাকপি ও পেঁয়াজের পকোড়া।

IMG_20250826_194615.jpg

আসলে আমি মূলত পেঁয়াজি তৈরি করতে চেয়েছিলাম। তবে জানিনা কি মনে হল বাঁধাকপি ফ্রিজে ছিলো, তাই কয়েকটা পাতা কুঁচিয়ে দিয়েছি। তবে এটা দেওয়ার পরে পকোড়াটার স্বাদ সত্যিই অন্যরকম হয়ে গিয়েছিলো। আপনাদের ঘরেও যদি বাঁধাকপি থাকে, তাহলে একবার অবশ্যই তৈরি করে দেখবেন। যাইহোক এইভাবে সমস্ত মিশ্রণটাকে আমি ছোট ছোট পকোড়ার আকারে ভেজে নিলাম।

IMG_20250826_200020.jpg

এইরকম গরম গরম ঝাল ঝাল পকোড়া খেতেও বেশ ভালো লাগলো। আর যেহেতু আপনাদের প্রথমেই বললাম শুভর মুখে একেবারেই স্বাদ ছিল না, কিন্তু পকোড়াগুলো বেশ ভালো খেয়েছে। আমারও খুব একটা মন্দ লাগেনি, আমি টমেটো সস দিয়ে কয়েকটা খেয়েছি।

ঘরে থাকার সামান্য উপকরণ গুলো দিয়ে, খুবই কম সময়ে এমন সুস্বাদু খাবার তৈরি করার রেসিপি আপনাদের কেমন লাগলো, মন্তব্যের মাধ্যমে অবশ্যই জানাবেন। আজকাল আমাদের আশেপাশে অনেক দোকানেই এই ধরনের বিভিন্ন চপ পকোড়া কিনতে পাওয়া যায়। তবে আশাকরি এই বিষয়ে আপনারা সহমত হবেন যে, দোকানের তৈরি যে কোনো ভাজা জিনিসের থেকে, বাড়িতে সদ্য তৈরি এই ধরনের পকোড়া অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর।

যাইহোক যদি আপনারা পরবর্তীতে কেউ এটি বাড়িতে তৈরি করেন, তাই রেসিপিটা আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। খুবই সহজ পদ্ধতিতে সুস্বাদু এমন একটি রেসিপি আশাকরছি আপনাদের ভালো লাগবে। সকলের সুস্বাস্থ্য কামনা করে আজকের পোস্ট এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সকলে। শুভরাত্রি।

Sort:  

1000008241.png
curated by @cymolan.

Loading...