" দার্জিলিং এ কাটানো একটি সুন্দর সকালের গল্প"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
আজ এই পোস্টের মাধ্যমে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো দার্জিলিং কাটানো একটা সুন্দর সকালের বেশ কিছু মুহূর্তের গল্প। যেমনটা আগের পর্বে জানিয়েছিলাম আমরা যে হোটেলে ছিলাম, সেই রুমটা ছোটো হলেও জানালা দিয়ে তার অপূর্ব দৃশ্য একেবারে মন কেড়ে নিয়েছিলো আমাদের সকলের।
![]() |
---|
পরদিন সকালে উঠে জানলা দিয়ে সূর্যোদয় দেখার মুহূর্তটা সকলেই রুমের ভিতরে বসে চা খেতে খেতে উপভোগ করলাম। এরপর সকলে ঠিক করলাম বেশ কিছু সময় আমরা মল রোড দিয়ে ঘুরে আসবো। আমাদের সাথে যাওয়া একজন দাদা আরও বেশ কিছুক্ষণ আগে উঠেই হাঁটতে হাঁটতে সেখানে চলে গিয়েছিলো।
সে আমাদেরকে ফোন করে জানালো যে মল রোড থেকে আরও কিছুটা দূরে একটা জায়গায় তিনি দাঁড়িয়ে আছেন, যেখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউ কিছুটা নাকি দেখা যাচ্ছে। অন্যান্য সময় ভীষণ সুন্দরভাবে দেখা গেলেও, এই মুহূর্তে মেঘে ঢাকা থাকার কারণে দেখা যায় না। তবে তিনি খুব ভোরে যাওয়াতে কিছুটা হলেও দেখতে পেয়েছেন। তাই আমরাও তড়িঘড়ি সকলেই তৈরি হয়ে নিয়েছিলাম সেখানে যাওয়ার জন্য, যদি ভাগ্য ভালো থাকে তাহলে আমরাও হয়তো কিছুটা দেখতে পাবো।
![]() |
---|
তাই মোটামুটি নিজেরা তৈরি হয়ে লাগেজ খানিকটা গুছিয়ে রেখে রওনা হলাম। কারণ ঘরে ফিরে তৈরি হয়ে লাগেজ সম্পূর্ণ গুছিয়ে নিয়ে আমাদের আবার দশটা নাগাদ হোটেল থেকে রওনা করতে হবে। যাইহোক যেমন ভাবা তেমন কাজ, তাই তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে আমরাও বেরিয়ে পড়লাম। হাঁটতে হাঁটতে প্রথমে পৌছে গেলাম মল রোডে।
![]() |
---|
গতরাতে দেখে যাওয়া মলরোডের সাথে সকলের মলরোডের সত্যিই কোনো মিল নেই। মানুষের ভিড় যেমন কম, তেমনি ভিড় বেশি পায়রাদের। পায়রা তখন মলরোডের চারিদিকে ঘোরাফেরা করছিলো। অনেক মানুষ তাদেরকে সেখানে খেতেও দিচ্ছিলো। এটা বোধহয় প্রতিদিন সকালেরই দৃশ্য।
![]() |
---|
![]() |
---|
মর্নিং ওয়াকে বেরিয়ে বহু মানুষ এখানে পায়রাদের খাবার দেন। পথ চলতে চলতে এমন অনেক মানুষ এইসময় দেখবেন যারা হয়তো নিয়মিত সকলে উঠে এই মলরোড দিয়ে হাঁটতে থাকেন। বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রীরা দেখলাম যারা স্কুলে সাথে রওনা করেছে। বাকি অনেকেই রওনা করেছে নিজেদের কাজের জায়গার উদ্দেশ্য।
![]() |
---|
সেই সব কিছু পেরিয়ে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে দেখতে উপস্থিত হলাম আসল জায়গায়, যেটা দেখার উদ্দেশ্যে আমাদের এতো সকালবেলায় তৈরি হয়ে বেড়ানো। তবে আমরা যতক্ষণে এলাম ততক্ষণে মেঘে ঢাকা পড়ে গেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা। তবে অনেকেই দেখতে পেয়েছেন শুনতে পেলাম।
![]() |
---|
তার পাশেই রয়েছে দার্জিলিং এর বিখ্যাত কফি হাউজ। আপনারা চাইলে এখানে গিয়েও চা/কফি উপভোগ করতে পারেন। তবে এই জায়গাটা উপভোগ করার আদর্শ সময় যখন কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউ খুব সুন্দর ভাবে পাওয়া যায়। যাইহোক আমরা কফি হাউসে ঢুকিনি ঠিকই, তবে কফি হাউজের বাইরেও অনেক মানুষ চা/কফি বিক্রি করেন, চাইলে আপনারা সেখান থেকে খেতে পারেন।
![]() |
---|
আমি যদিও খাইনি। তবে রাখি ও পিয়ালী এক কাপ করে চা খেয়েছিলো। এরপর বেশ কিছুক্ষণ সময় আমরা সেখানে কাটালাম, ছবিও তুললাম। ক্যামেরাতে ততখানি দেখা না গেলেও, খালি চোখে হয়তো আমরা খানিকটা দেখেছিলাম। সত্যি কথা বলতে এর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত কখনোই আফসোস হয়নি এই সময় আমরা দার্জিলিং গিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউটা দেখতে পাবো না ভেবে। কারন এটা জেনেই আমরা এসছিলাম যে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার এটা উপযুক্ত সময় নয়। তবে ওই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বেশ খানিকটা আফসোসই হচ্ছিলো।
![]() |
---|
![]() |
---|
যাইহোক নিজেদের ছবি তোলার পাশাপাশি সেখানে একজন সদস্যের সঙ্গে দেখা হলো। আশা করছি ছবিটা দেখে আপনারা বুঝতে পারছেন কার কথা বলছি। তিনি কখনো ঘুরছিলেন, কখনো বসেছিলেন, কখনো আবার নিশ্চিন্তে ঘুমিয়েছিলেন। তাই সেই মুহূর্তে তারও বেশ কিছু ছবি আমি তুলেছিলাম।
![]() |
---|
সেখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটিয়ে আমরা যখন ফিরে আসছিলাম তখন হঠাৎই চোখে পড়ল I ❤️ DARJEELING লেখাটা। এমনটা আজকাল প্রায় সব জায়গাতেই রয়েছে, বিশেষ করে বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রগুলিতে। তাই আমরাও সেখানে দাঁড়িয়ে ছবি তোলার সুযোগ মিস করলাম না।
![]() |
---|
আরো খানিকটা দূর এগিয়েই চোখে পড়লো দেয়ালের গায়ে ফুটে থাকা অসংখ্য ছোট্ট ছোট্ট সুন্দর ফুল। গাড়িতে থাকা অবস্থায় অনেক সময়েই ফুলগুলো চোখে পড়েছে, কিন্তু
হাতে করে তোলার সুযোগ হয়নি। তাই ফিরতে পথে একটু সাহস দেখিয়ে দেয়াল থেকে ফুল গুলো তুললাম। আপনাদের দেখতে কেমন লাগলো অবশ্যই জানাবেন।
![]() |
---|
এরপর কিছুটা এগোতেই হঠাৎ করে চোখ পড়লো একজন নতুন সদস্যের দিকে। আশাকরি ছবিটা দেখে বুঝতে পেরেছেন কার কথা বলছি। রাস্তা মানুষ চলাচল করলেও কাউকে কিছু বলছে না সে। নিজের মতন ল্যাম্পপোস্ট ধরে বসে আছে। আমি মোবাইলটা তার দিকে ধরতেই সে আবার সোজাসুজি আমার দিকে তাকিয়ে পড়ায় একটু ভয় লাগছিলো বটে। তবে তাড়াতাড়ি করে ছবিটা তুলেই আবার উল্টে দিকে হাঁটতে শুরু করলাম।
![]() |
---|
এরপর রুমে আসলাম। ব্রেকফাস্ট এর জন্য আমাদের ব্যাগে যে কেক, বিস্কুট ছিলো সেগুলো খেয়ে নিয়েছিলাম। তারপর এক এক করে সকলেই তৈরি হলাম। আর নিজেদের লাগেজ গুছিয়ে নিলাম। যেহেতু বেশ কিছু জিনিসই ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলো, তাই সবটা গুছিয়ে নিতে বেশ খানিকটা সময় গেলো।
![]() |
---|
যাইহোক মোটামুটি রেডি হয় আমরা প্রত্যেকেই রুম থেকে বাইরে বেরিয়ে গাড়ির অপেক্ষা করতে লাগলাম। রুম ছাড়ার আগে কিছু ছবি তুলে নিলাম। আমরা এরপর গাড়িতে করে রওনা করলাম আমাদের পরবর্তী ডেস্টিনেশন "Buddhist Temple Peace Pagoda" এর উদ্দেশ্যে।
সেখানে ঘোরার অভিজ্ঞতা পরবর্তী পোস্টে আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আজকের পোস্ট তাহলে এখানেই শেষ করছি। আপনাদের কেমন লাগলো আমার পোস্ট পড়ে, অবশ্যই জানাবেন। ভালো থাকবেন সকলে। শুভরাত্রি।