ঠাকুরমার উদ্দেশ্য পালিত হলো দশদিনের ঘাট কাজ

in Incredible India2 years ago
IMG_20230305_094959.jpg
পুকুর পাড়ে সবকিছুর আয়োজন চলছে

Hello,

Everyone,

আশাকরি সকলে ভালো আছেন। আর আজকের দিনটা আপনারা সকলে খুব ভালোভাবে শুরু করেছেন রবিবার দিনটা সপ্তাহের অন্যান্য সব দিনের থেকে অনেকটাই আলাদা হয়,তাই আশা করছি দিনটা প্রত্যেকে আপনজনের সঙ্গে অনেক আনন্দ করে কাটাবেন।

গতকাল সম্পন্ন হয়েছে ঠাকুরমার দশদিনের দশার কাজ, যাকে চলতি কথায় আমরা ঘাট কাজ বলে থাকি। সবথেকে যেটা শান্তি লাগলো, কাজটি আমার বাবা নিজে করতে পেরেছেন।

IMG_20230305_094910.jpg
বাবা ও ব্রাক্ষ্মণ

শারীরিক ভাবে কষ্ট হয়েছে ঠিকই কিন্তু বাবা নিজে থেকেই কাজটি করতে চেয়েছিলেন। কারন ছেলে হিসাবে মায়ের জন্য করা এই কাজগুলোই বাবার শেষ কাজ। তাই হয়তো বাবা অনেক কষ্ট করে হলেও ঠাকুরমার জন্য এই কাজগুলো করতে চাইলেন।

এই সকল কাজের বেশ কিছু নিয়ম কানুন থাকে, তাই সকাল থেকেই সবকিছু জোগাড় করতে বেশ কিছুটা সময় লেগেছিল। হিন্দুধর্ম মতে দশার কাজ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কোনো নদীর পাড়ে বসেই করতে হয়।

IMG_20230305_095012.jpg
পুকুর পাড়

কিন্তু আমাদের বাড়ির পাশে যে নদীটি আছে, সেটা বাড়ির থেকে বেশ কিছুটা দূরে, যেখানে যাওয়া বাবার পক্ষে সম্ভব হতো না। সেই কারণেই ব্রাহ্মণ এর সাথে কথা বলে দশার কাজটি আমরা একটি পুকুরের পাড়ে সম্পন্ন করেছিলাম।

আসলে দশার কাজ কোনো জলাধারে সামনে বসে করতে হয়। যাতে কাজ সম্পন্ন করে স্নান করতে সুবিধা হয়। সকাল থেকে রোদ্রের তাপ অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল, সেই কারণে বাবার খুব বেশি ঠান্ডা লাগেনি।

সব কিছু জোগাড় করে নিয়ে যখন আমরা পুকুর পাড়ে পৌছালাম, ততক্ষণে ব্রাহ্মণও পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তার নির্দেশ অনুযায়ী সবকিছু জোগাড় করা হলো।

যেহেতু বাবার পক্ষে সবটা করা সম্ভব ছিল না, তাই আমি এবং আমার একজন কাকু আমরা দুজন মিলে সবটা যোগার করলাম। সেখানে মূলত একটি মালশা পোড়াতে হয়।

IMG_20230305_094839.jpg
দশার কাজ চলছে

যেই কারণে সেখানে ইট দিয়ে একটি উনুন তৈরি করা হলো। তারপর বাবা পাকাঁটির সাহায্যে ঔ উনুনে ঠাকুমার জন্য মালশায় করে কিছুটা আতঁপচাল রান্না করলো, যাতে ঠাকুমার উদ্দেশ্যে পিন্ড দিতে পারে।

মায়ের সময় এই কাজগুলো করেছিলাম, তাই কাল পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে সেই দিনের কথা মনে পড়ছিলো। আজ বাড়িতে ঠাকুমার শ্রাদ্ধানুষ্ঠান সম্পন্ন হলো।সকাল থেকে তার প্রস্তুতি করলাম।

এরপরে ব্রাক্ষ্মণ এলে বাকি সবকিছু্ তার নির্দেশ অনুসারে যোগার করা হলো। আজও অনেকটা কষ্ট করে বাবা ঠাকুরমার উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করে মন্ত্র উচ্চারণ করলেন।

সত্যি বলতে যতই সময় এগিয়ে আসছে,এই বাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কষ্ট যেন বেশি করে অনুভব করছি। কোথাও একটা আগের মতো আর এই বাড়িতে আসতে না পারার কষ্টটা মনের উপর চেপে বসছে।

যাইহোক, আপনারা সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এই প্রার্থনা করে আজকের লেখা শেষ করলাম।

Sort:  
Loading...
 2 years ago 

কাকুর এই বিষয়টা আসলে আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। উনি যদি অসুস্থ কিন্তু তারপরেও উনার মা। ওনার মায়ের জন্য এই কাজগুলো ওনাকেই করতে হবে।

আসলে আমি আপনাদের সাম্প্রদায়ের সম্পর্কে এতটা অবগত না। তবে আপনার পোস্ট করে যতটুকু বুঝতে পারলাম। আপনি এরা আপনার ঠাকুমার শান্তি কামনার জন্য। এই অনুষ্ঠানগুলো আপনারা করে থাকেন।

যাইহোক দোয়া করি সৃষ্টিকর্তার কাছে। সৃষ্টিকর্তা যেন উনাকে শান্তিতে পরকালে রাখে। এবং আপনার বাবাকে খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেয়।

অসংখ্য ধন্যবাদ এত ব্যস্ততার মাঝেও আমাদের সাথে এসে উপস্থিত হওয়ার জন্য। আপনার মূল্যবান কিছু কথা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য, ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

শারীরিক ভাবে কষ্ট হয়েছে ঠিকই কিন্তু বাবা নিজে থেকেই কাজটি করতে চেয়েছিলেন। কারন ছেলে হিসাবে মায়ের জন্য করা এই কাজগুলোই বাবার শেষ কাজ। তাই হয়তো বাবা অনেক কষ্ট করে হলেও ঠাকুরমার জন্য এই কাজগুলো করতে চাইলেন।

কাকুর এই কাজগুলো দেখে খুবই ভালো লাগলো আমার। মনে হচ্ছে যে কাকু আপনার ঠাকুমাকে খুবই ভালোবাসেন। সেজন্য তিনি অসুস্থ থাকার পরেও আপনার ঠাকুমার শেষ কাজটি সম্পন্ন করেছেন। আমার খুবই ভালো লাগলো কাকুর মায়ের প্রতি তার গভীর ভালোবাসা দেখে। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি আপনার ঠাকুমার শেষ কাজটি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য।

 2 years ago 

আংকেলের কাজ করার আগ্রহ দেখে সত্যিই আমি শিহরিত। আসলে ছেলে হিসেবে তার মায়ের শেষ সেবা করাটা তার নিকট খুব গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন, কারন এটাই তো তার শেষ সময় তাকে সেবা করার। ভালো বাসা শুধু কাছে থেকে নয়, অনেক দুর থেকেও হয়। খুবই ভালো লাগলো পোস্ট টি। ভালো থাকবেন