"বান্ধবীদের সাথে নৌকায় চড়ার সুন্দর মুহূর্ত - প্রথম পর্ব"
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
অনেকদিন আগে থেকেই আপনাদেরকে বলছিলাম বান্ধবীদের সাথে নৌকা চড়ার অভিজ্ঞতা এবং কিছু মুহূর্ত শেয়ার করবো। গত বছরে এই সময় আমাদের গ্রামে বৃষ্টির কারণে চাষের জমিতে জল হয়ে গিয়েছিলো, এ বছরেও তার অন্যথা হয়নি। বরং আগের বারের থেকে এইবার আরো অনেকটাই বেশি বৃষ্টি হয়েছে এবং জলও জমেছে অনেকটা পরিমানে।
তাই এই বছরও সুযোগ হয়েছিল নৌকায় চড়ার। গত বছরের থেকে এ বছর নৌকাটিকে আরো সুন্দরভাবে তৈরি করেছিল আমাদের পাড়ারই একজন মামা। প্রতিবছর তিনি নৌকা তৈরি করেন, কারন তার মাছ ধরার খুব নেশা। এইরকম জল জমলে তিনি প্রতিবারই নৌকা তৈরি করেন এবং জাল পেতে রাখেন মাছ ধরার জন্য। সন্ধ্যা বেলায় গিয়ে একটা জাল তুলে আবার নতুন আরেকটা জাল পেতে আসেন, যেটা পরদিন সকালে গিয়ে তোলেন।
![]() |
---|
মাঝে সারাটা দিন নৌকা বাড়িতেই থাকে তাই আমাদের পাড়ার সকলেই কমবেশি সেই নৌকাটিতে ঘুরে বেড়ায়। তাই এই বছরও ডাক্তার দেখানোর পর আমি চলে গিয়েছিলাম আমার বান্ধবী রাখির বাড়ি। আর সেখান থেকে আমি, রাখি, ও পিয়ালী তিনজনে মিলে বিকেল বেলায় নৌকা চড়তে গিয়েছিলাম। গত বছর প্র্যাকটিস হওয়ার কারণে, এই বছর রাখী আরও ভালো নৌকা চালাতে শিখেছে।
![]() |
---|
আর সেদিনের আকাশটা এতো সুন্দর ছিল যে, আপনারা ছবিগুলো দেখলেই আশা করছি তা বুঝতে পারবেন। কারণ এই সৌন্দর্য্যের ব্যাখ্যা লেখার মতন ভাষা সত্যিই আমার জানা নেই। প্রতি মুহূর্তে আকাশের রং যেন পরিবর্তন হচ্ছে, আর প্রতিটি মুহূর্তের সৌন্দর্য্য এক এক রকমের ছিল।
বৃষ্টির কারণে আমাদের ঐদিকে অনেকের বাড়িতেও জল উঠে গিয়েছিলো। এই মামাদের বাড়িতেও যেমন জল প্রায় মামাদের উঠোনে ছুই ছুই ছিলো। তাই নৌকায় উঠতে গেলে নৌকাটাকে বেশ কিছুটা ঠেলে নিয়ে বেশি জলে গিয়ে, তারপর লম্বা বাঁশের সাহায্যে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয়।
![]() |
---|
সাঁতার না জানার কারণেই এই নৌকায় ওঠার ভয় আমার বরাবর। এই প্রসঙ্গে ছোটবেলার একটা গল্প আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই,- তখন আমি অনেকটাই ছোটো। ক্লাস ফাইভে উঠেছি। তখন অবশ্য আমাদের বাড়ির এই পাশে জমিগুলোতে এতটাও জল হতো না।
কারণ তখন যমুনা নদী অনেকটাই বড় এবং গভীর ছিলো। তবে সংস্কার না হওয়ার কারণে এখন নদী অনেকটাই ছোট হয়ে গেছে, পাশাপাশি গভীরতাও কমে গেছে অনেকটা।
এই কারণে টানা বৃষ্টিতে যমুনা নদীটি খুব সহজেই ভরে যায় এবং জল খুব সহজেই জমির দিকে আসতে থাকে। যাইহোক আমি যখনকার কথা বলছিলাম, তখন যমুনা নদীর পাশে জমিগুলোতে জল জমতো, তাও খুব বেশি পরিমাণে নয়। তখন নৌকা ও ছিল না। তবে অনেকেই কলা গাছ দিয়ে ভেলা বানিয়ে ভেলা চড়তো, শাপলা তুলতো।
![]() |
---|
আমার বান্ধবীদের বাড়িতেও সেবার ওর বাবা একটা ভেলা বানিয়েছিলো। তাই খুব ইচ্ছে ছিলো সেই ভেলায় ওঠার। তবে আমি সাঁতার আমি জানিনা এ কথা আমার বান্ধবীও খুব ভালো করেই জানতো। যাই হোক ওদের বাড়ির একটা নিম গাছের সাথে ভেলাটা বাধা থাকতো।
ওর দিদি ভালো ভেলা চালাতো। তবে আমি ভেলাতে উঠতে ভয় পাচ্ছিলাম। কিন্তু সেই সময় আমার বান্ধবী এবং ওর দিদি আমাকে অনেকটা সাহস দিয়ে ভেলায় ওঠালো। প্রথমত ওরা দুজনেই সাঁতার জানতো। আর ওখানে এতটাও জল ছিল না যে, ডুবে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিলো। তাই খানিকটা সাহস নিয়ে উঠেছিলাম।
![]() |
---|
ভেলাতে পা দেওয়ার সাথে সাথেই সেটা দুলতে শুরু করলে ভয়ে আমি নিম গাছটা ধরে, তারপর ভেলার মধ্যে বসে ছিলাম। এরপর যথারীতি আমার বান্ধবী এবং ওর দিদিও উঠলো। তবে আমি কিন্তু নিম গাছ ছাড়িনি। একটু পরে ওর দিদির ভেলা চালানো শুরু করলো।
তখন আমাকে নিম গাছ ছেড়ে দিতে বলেছিলো, কিন্তু আমি বোকার মতন গাছটা ধরেই বসেছিলাম। এক মুহূর্তের মধ্যে ভেলা সরে যাওয়াতে, আমিও পিছনদিকে জলের মধ্যে পড়ে গেলাম। তবে পড়ে গেলেও আমি কিন্তু নিম গাছটা ছাড়িনি 😊। তাড়াহুড়ো করে বান্ধবী এবং ওর দিদি আমাকে টেনে তোলে।
আমি যতটা না ভয় পেয়েছিলাম, তার থেকেও একটু বেশি ভয় পেয়েছিল ওরা। কারণ সেই দিনের আগেও বহুবার আমি আমার মাকে নিয়ে এসেছিলাম ভেলায় চড়বো বলে। তবে মা বারবার বারণ করেছিলো। যেহেতু আমি জলে পরে গিয়েছিলাম, তাই ওরা ভয় পাচ্ছিলো মা এসে বোধহয় ওদেরকে বকা দেবে, আমাকে ভেলায় তোলার জন্য।
![]() |
---|
যাইহোক সেদিনের নৌকায় ওঠার পর আমি রাখির সাথে সেই গল্প করছিলাম এবং বারবার সাবধান করছিলাম যাতে আমাকে নিয়ে নৌকা থেকে ফেলে না দেয়। তবে সেই দিন পরে যাওয়াতে ভুলটা আমারনিমগাছট
আমার উচিত ছিল নিমগাছটা ছেড়ে দেওয়া। তবে আমি যে ইচ্ছাকৃতভাবে নিম গাছটা ধরেছিলাম এরকমটাও নয়। একপ্রকার ভয়েই ধরেছিলাম। কিন্তু এটা বুঝতে পারিনি ভেলা চলতে শুরু করলেও যদি আমি না ছাড়ি, তাহলে আমি পড়ে যাবোই।
![]() |
---|
কখনো কখনো ছোটবেলার এই সব স্মৃতি মনে পড়লে ভীষণ হাসি পায়। এখনও যদি আমার ওই বান্ধবীর সাথে দেখা হয় তাহলে আমরা এইসব গল্প করি। সৌভাগ্যক্রমে ওর আমাদের পাড়াতেই বিয়ে হয়েছে, তাই কমবেশি দেখা হয় আমাদের।
যাইহোক নৌকায় চড়ার আরও কিছু সুন্দর গল্প আছে, এই পোস্টে সেগুলো শেয়ার করতে গেলে অনেকটাই বড় হয়ে যাবে, তাই পরবর্তী পর্বে বাকি অংশটুকু আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। আপনাদের আজকের ছবিগুলো দেখে কেমন লাগলো, জানাতে ভুলবেন না। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। শুভরাত্রি।
#artonsteemit
Manual Curation of TipU Curators Project
Amazing photographs
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 6/7) Get profit votes with @tipU :)
Thank you for your support @fantvwiki. 🙏