মেয়ের হাসি ফিরে পাওয়ার গল্প

in Incredible Indialast month

আসসালামু আলাইকুম

প্রিয় বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি সবাই ভাল আছেন। জীবনের প্রতিদিনের ছোট ছোট ঘটনা আমাদের মাঝে কখন যে এক একটি গল্প হয়ে যায় তা আমরা অনেক সময় বুঝতেও পারি না। আজ আমি তেমনই একটি হৃদয় শুয়ে যাওয়া ঘটনার কথা শেয়ার করতে চাই।

গত কয়েকদিন ধরে আমার ছোট্ট মেয়েটার মুখে একদমই রুচি ছিল না। সর্দি হালকা জ্বর আর সেই সাথে খাওয়ার অনিহা সব মিলিয়ে আমার মেয়ের সেই চিরচেনা হাসিটাও যেন হারিয়ে গিয়েছিল। ছোট্ট শিশু অসুস্থ হলে যেমন মনটা ছটফট করে তেমনি আমার অবস্থা হচ্ছিল। নিজে কিছুই ঠিক মতো করতে পারছিলাম না শুধু ভাবছিলাম কিভাবে মেয়ের মুখে আবার সেই প্রাণবন্ত হাসিটা ফিরিয়ে আনতে পারি। আমি আমার হাজব্যান্ড কে বললাম বাইরে থেকে কিছু বাজার করে নিয়ে আসার জন্য।

বিশেষ করে বললাম যেন ওষুধের দোকান থেকে একটা জিঙ্ক ওষুধ নিয়ে আসে। আমি জানতাম এটি খাওয়া রুচি বাড়াতে সাহায্য করে।আমার হাজব্যান্ড কিছু না বলেই বেরিয়ে পড়ল। আমি জানি আমার হাজবেন্ডের চোখেও ছিল মেয়ের কষ্টের প্রতিচ্ছবি। প্রায় এক ঘন্টা পরে আমার হাজব্যান্ড বাজারের ব্যাগ হাতে ফিরে এলো। ব্যাগে ছিল বেগুন আলু লাল শাক কাঁচামরিচ আর কিছু মৌসুমী সবজি।আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম সব নিয়ে এসেছো? হাজবেন্ড তখনই বলে উঠলো তোমার বলা জিংক ঔষধ নিয়ে এসেছি দোকানদার বলল এটার অনেক উপকার।

ব্যাগ থেকে যখন সে জিংক ঔষধটা বের করল তখন আমার চোখে এক অজানা তৃপ্তির ঝিলিক খেলে গেল। সঙ্গে সঙ্গে মেয়ের মুখে ওটা খাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। প্রথমে একটু না করতে চাইলেও পরে হাসিমুখে খেয়ে ফেলল। আমার মেয়ে মাঝে মাঝে ঔষধ খুবই পছন্দ করে অসুখ না থাকলেও ওষুধ খেতে চায়, আবার মাঝে মাঝে যখন অসুখ হয় তখন আবার ওষুধ একদমই খাইতে চায় না। আজ সে যেন বুঝে গেল মা-বাবা কতটা চেষ্টা করছে তার সুস্থতার জন্য। এরপর আমি বাজার থেকে আনা সবজিগুলো দিয়ে একটা হালকা সবজির তরকারি রান্না করলাম।

আর অবাক করা বিষয় হচ্ছে দুপুরে মেয়েটা নিজে থেকে একটু একটু করে খেতে শুরু করল। সেই মুহূর্তে মনে হচ্ছিল জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার পেয়ে গেছি। ওর সেই ছোট্ট মুখের এক চিলতে হাসি আমার মন ভরে দিলো। আমার হাজব্যান্ড চুপচাপ বসে মেয়ের খাওয়া দেখছিল। ওর চোখে ছিল প্রশান্তির ছোঁয়া। আমি মুচকি হেসে বললাম তুমি না থাকলে কি যে করতাম। আমার হাজব্যান্ড বলল তোমাদের হাসি আমার সবচেয়ে বড় আনন্দ। এই ছোট্ট ঘটনাটা হয়তো বাইরে থেকে খুব সাধারণ মনে হতে পারে কিন্তু আমার কাছে এটি এক আবেগের গল্প, ভালোবাসা দায়িত্ব আর পরিবারের ছোট্ট সংসারের সুখের মুহূর্তে গাথা এক নিখুৎ স্মৃতি।

জীবনের প্রতিটি দিনও একটা নতুন গল্প নিয়ে আসে, আর সেই গল্প যদি ভালোবাসার যত্নে গাথা হয় তবে তা হয়ে ওঠে এক অমূল্য স্মৃতি। আমার মেয়ের হাসি ফিরে আসার এই গল্পটা তেমনি এক মুহূর্ত যেটা আমি সারা জীবন মনে রাখব। আজ তাহলে এ পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

Sort:  
 last month 

বাড়িতে ছোট বাচ্চা থাকলে তার শরীর খারাপ করলে মায়েদের একদমই ভালো লাগেনা। এখন ওয়েদার চেঞ্জ এর জন্য ছোট ছোট বাচ্চাদের সর্দি কাশি জ্বর প্রায় সই লেগে থাকছে। বাচ্চারা একটু ঠান্ডা লাগায় জ্বর হলে একদমই ভেঙে পড়ে তাদের মুখে রুচি চলে যায়। আর বাচ্চাদের মুখে রুচি চলে গেলে তাদের মুখে কোন কিছু ভাল না লাগলে তারা কোন কিছুই খেতে চাই না। তার প্রিয় খাবারটি মুখের কাছে ধরলেও সেই খাবারটি থেকেও তারা এড়িয়ে চলে। মেয়ের হাসি ফোটানোর জন্য আপনি অনেক চেষ্টা করেছেন আপনার সারাদিনের সমস্ত কিছু তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...