ঈদ পূর্ণমিলনী ও বনভোজন অনুষ্ঠান ২০২৫

in Incredible Indialast month

আসসালামু আলাইকুম,
প্রিয় বন্ধুরা,আজকের এই গল্পটি আমার জীবনের একটি বিশেষ দিনের অভিজ্ঞতা নিয়ে,যা আমার মন জুড়ে রয়ে গেছে। ঈদের আনন্দ যেন এবার আরও কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছিল, কারণ আমার হাজবেন্ডের অফিস থেকে আয়োজিত হয়েছিল একটি সুন্দর ঈদ পূর্ণমিলনী ও বনভোজন অনুষ্ঠান। এটি শুধু একটি অফিস পিকনিক ছিল না, ছিল এক প্রাণবন্ত মিলন মেলা।

পরিবার সহকর্মী আর নির্ভেজাল আনন্দে ভরপুর। আমরা পরিবার বলতে আমি আমার হাজব্যান্ড এবং আমাদের ছোট্ট মেয়ে।মিরার বয়স মাত্র ২ বছর এক মাস। সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে সবাই মিলে প্রস্তুতি নিতে থাকলাম। আমি মিরার জন্য তার প্রিয় জামাটি পরিয়ে দিলাম, খুশিতে আমার মন ভরে উঠলো। আমিও হালকা সাজে প্রস্তুত হলাম আর আমার হাজবেন্ড ও তৈরি হয়ে গেল। সকাল সকাল আমরা অনুষ্ঠান স্থানে পৌঁছে গেলাম। আগে থেকেই সবকিছু একদম সাজিয়ে গুছিয়ে রেখেছিল। বড় একটা খোলা মাঠে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়েছিল।স্টেজে সুন্দর রঙ্গিন ব্যানার লাউড স্পিকারে বেজে চলছে আনন্দঘন গান। চারপাশে মানুষের মুখে খুশির ঝিলিক।প্রথমে ছিল স্বাগত বক্তব্য এবং ছোট্ট পরিচিতি পর্ব। তারপর শুরু হলো নানা রকম খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। প্রথমেই ছিল মহিলাদের জন্য চেয়ার খেলা।

আমি সাহস করে অংশগ্রহণ করলাম। সত্যি বলতে বহুদিন পর এমন সুন্দর ভরপুর মুহূর্ত কাটালাম। হেসে খেলে আমি অনেকটাই তরতাজা অনুভব করছিলাম। আর মজার বিষয় হচ্ছে মিরা আমার জন্য হাততালি দিচ্ছিল। ওর খুশি চেহারা দেখে আমার ভরে উঠলো।এরপর শুরু হলো বাচ্চাদের খেলা। বাচ্চাদের জন্য বয়স অনুযায়ী আলাদা আলাদা গেমসের আয়োজন ছিল। কেউ বল নিয়ে দৌড়াচ্ছে কেউ রং তুলি দিয়ে ছবি আঁকছে কেউবা শুধু মঞ্চে দাঁড়িয়ে চমৎকারভাবে কবিতা বলছে।মিরা যদিও এখনো অনেক ছোট তাই কোন খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারল না। কিন্তু ও অন্যদের খেলা দেখে বেশ আনন্দ পাচ্ছিল। ওর চোখে মুখে যেন একটা আলাদা উৎসাহ। আশেপাশের সকলেই মিরাকে দেখে আদর করে নিচ্ছিল। সেই সাথে চলছিল একের পর এক সংস্কৃতি অনুষ্ঠান।

সহকর্মীদের পরিবার থেকে কেউ গান গাইছে কেউ নাচ করছে কেউ কবিতা আবৃতি করছে। এই মুহূর্তে আমি @karobiamin71 ভাবিকে অনেক মিস করছিলাম। মনে হচ্ছিল যে ভাবি থাকলে আরো অনেক বেশি মজা হতো। যাই হোক কি আর করার সবকিছু মেনে নিতে হবে। বেলা বাড়তেই শুরু হলো দুপুরের খাবার। সকালবেলা ছিল বিভিন্ন রকমের নাস্তা। বেলা বাড়তেই শুরু হল দুপুরের খাবার। বিশেষ আয়োজন ছিল মোরগ পোলাও আর বাচ্চাদের জন্য সেই সাথে দই আরো নানা রকম আয়োজন। আমি নিজেও বেশ তৃপ্তি করে খেলাম। এত ভিড়েও সবার জন্য সুন্দর ভাবে খাবার পরিবেশন করা হচ্ছিল যা সত্যি প্রশংসার যোগ্য। মিরাও বেশ আনন্দ করে খেলো আর আমরা তিনজন একসাথে খাবার খেয়ে বেশ কিছু ছবি তুললাম।অনুষ্ঠান শেষে ছিল পুরস্কার বিতরণ। যেসব বাচ্চারা অংশ নিয়েছিল তাদের সবাইকে ছোট ছোট পুরস্কার ও উপহার দেওয়া হলো।

আমি যেহেতু চেয়ার খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলাম যদিও আমি চেয়ার খেলায় প্রথম তিন জনের ভেতর থাকতে পারেনি কিন্তু তাও সান্তনা পুরস্কার হিসেবে একটা করে সাবান দিয়েছে। এই আয়োজনটা দেখে আমার সত্যিই অনেক ভালো লাগছে। মিরাও পেল একটা ছোট্ট খেলনা, আর চকলেট,অনেকগুলো বেলুন সেই সাথে পেন্সিল, কাটার,রাবার যেটা নিয়ে সেই সারাটা পথ হাসতে হাসতে বাসায় ফিরেছে। এই দিনটি আমার জীবনের স্মরণীয় হয়ে থাকবে। কাজের ব্যস্ততার মাঝে এমন একটি দিন আমাদের পরিবারের নতুন প্রাণ এনে দেয়। শুধু আনন্দ নয় এই দিনটি আমাদের সম্পর্ক গুলোর মাঝে বন্ধনকে আরো গভীর করেছে।মিরার জন্য এমন সুন্দর পরিবেশে কাটানো প্রথম পূর্ণমিলনী ছিল।ওর ছোট্ট স্মৃতি গুলো আজ থেকেই গড়ে উঠতে শুরু করল। আমি মন থেকে দোয়া করি আমাদের জীবনে এমন আরো অনেক আনন্দময় দিন আসুক। আলহামদুলিল্লাহ এমন একটা দিন কাটাতে পেরে আমি সত্যিই কৃতজ্ঞ।

আজ তাহলে এই পর্যন্তই সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

Sort:  
Loading...
 last month 

সত্যি কথা বলতে আমার খুবই ভালো লেগেছে আপনাদের এই আনন্দময় সময় গুলো দেখে,, হয়তোবা আমিও থাকতে পারতাম কিন্তু ওই যে সৃষ্টিকর্তার হুকুম ছাড়া একটা গাছের পাতাও নড়ে না তাই হয়তো আমি ও ওখানে থাকতে পারিনি।।।।।

তবে আফসোস নেই বরং আরো ভালো লেগেছে আমি নাই তো কি হয়েছে আপনারা তো ওখানে যেতে পেরেছেন আনন্দ করতে পেরেছেন বেশ ভালো লাগলো, হয়তোবা আমাদের আর কোন দিনও দেখা হবে না,, তবে এই যে মাঝেমধ্যে আমাকে মিস করবেন মনে করবেন আমি আপনাকে মনে করব এটার মাঝে একটা শান্তি খুঁজে পাবো,,, যেখানেই থাকবেন ভালো থাকবেন, আমি প্রার্থনাই করি। আর একটা চাওয়া তো অবশ্যই থাকবে সৃষ্টিকর্তার কাছে, কারণ সে চাইলে তো সব পারে তাহলে আর একটাবার যদি আপনি আর আমি একই সাথে আমার একটা বছর কাটাতে পারতাম তাহলে মন্দ হত না। কি বলেন আপনি।