"দাদির মিলাদ"
![]() |
---|
গত দুই দিন আগেই আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম দাদী শাশুড়ি মারা গিয়েছিল। আসলে বাড়ির মধ্যে মেহমান নিজের ঘরেও মেহমান সবকিছু মিলিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ততার মধ্যে সময় কাটাতে হচ্ছে। এত পরিমাণে ব্যস্ত হয়েছে মোবাইলটা হাতে নিয়ে কিছু করব সেই সময়টুকু পাইনি। আজকে মোটামুটি একটু ফ্রি হয়েছি, গতকালকে মিলাদ পড়ানো হয়েছে যার কারণে আরো বেশি ব্যস্ত ছিলাম। আমার শ্বশুর বাড়ির সবাই আলাদা বাড়ি করে মেইন বাড়ি থেকে চলে গেছে। যার কারণে একেক জন একেক জায়গায় কিন্তু আমরা সবার সামনে থাকার কারণে, মেহমান আসলে সবার আগে আমাদের বাড়িতেই আসে আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
মিলাদ পড়ানো হয়েছে অন্য একটা বাড়িতে কিন্তু মেহমান সবাই প্রথমে আসলো আমাদের বাড়িতে। তাদেরকে মেহমানদারী করা নাস্তা দেওয়া সবকিছু মিলিয়ে সকাল থেকে প্রচুর পরিমাণে ব্যস্ত ছিলাম। তার উপরে এত পরিমাণে বৃষ্টি হচ্ছে যেটা বলে বোঝানো সম্ভব না, বৃষ্টির মধ্যে ভিজে কাজ করতে করতে আমার নিজের শরীরের অবস্থাও অনেক বেশি খারাপ হয়ে গেছে। তার ওপর অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ার কারণে ঘরের অবস্থা একেবারেই খারাপ হয়ে যাচ্ছে। মেহমানদের সাথে তাদের ছোট বাচ্চারাও এসেছে তারা বাহিরে বের হচ্ছে আবার ঘরে ঢুকছে। যার কারণে ঘরে কাদা মাটি একেবারেই ভরে গেছে, তাই দুপুরের আগে সমস্ত ঘর পরিষ্কার করে নিয়েছিলাম।
![]() |
---|
![]() |
---|
এরপর গোসল করে সবাই মিলে দাওয়াত খাওয়ার জন্য সেই দাদির বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে কারণ তারা খালপাড়ে বাড়ি করেছে আর আমরা মেইন রোডে, তাদের বাড়িতে যেতে মোটামুটি পাঁচ মিনিট সময় লাগে, রাস্তার মধ্যে আমরা হাঁটতে হাঁটতে মজা করছিলাম। আসলে অনেকদিন পর রাস্তায় বের হওয়ার কারণে রাস্তার পরিবেশটা একেবারেই অন্যরকম লাগছিল। হালকা পরিমাণে বৃষ্টি কমেছে আর গাছের পাতা গুলো দেখে মনে হচ্ছে তারা অনেক বেশি সতেজ হয়ে উঠেছে, এই কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তারা নিজেদেরকে একেবারেই পরিপূর্ণ রূপ দিতে পেরেছে। বৃষ্টি হওয়ার কারণে তাদের শরীর থেকে সমস্ত ধুলাবালি মুছে গেছে, যার কারণে তারা সবুজে পরিপূর্ণ হয়েছে।
তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ার কারণে কাদা হয়ে গেছে। চারপাশে কেমন একটা গন্ধ বাড়ি থেকে বের হলেও এই গন্ধটা যেন পাওয়া যায়। রাস্তার মধ্যে আমরা কিছুটা সময় কাটিয়েছিলাম এরপর হাঁটতে হাঁটতে সেই বাড়িতে পৌছালাম। বাড়ির উঠানে অতিরিক্ত কাদা থাকার কারণে ঘরে ছাদের মধ্যেই মিলাদের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এরপর প্রথম অবস্থায় মহিলাদেরকে খাবার দেয়া হয়েছিল, সত্যি কথা বলতে এত পরিমানে বৃষ্টি শুরু হয়েছে, তার উপরে খাবার এত গরম মুখে দেয়ার পর মনে হচ্ছে মুখ একেবারেই পুড়ে যাবে। কিন্তু কিছুই করার ছিল না এরপর সবাই মিলে দুপুরের খাবারটা খুব মজা করে গ্রহণ করেছিলাম। খাবার অনেক মজা হয়েছে তবে অতিরিক্ত গরম হওয়ার কারণে আমাদের অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়ে গেছে।
এরপর আমি এবং আমার ভাগ্নি আমার ননদ আরো কয়েকজন মেহমান মিলে তাদের বাড়ি থেকে দাওয়াত খাওয়ার পর, আবার আমাদের বাড়িতে রওনা দিয়েছিলাম। রাস্তায় একেবারেই খালি ছিল রাস্তার দুই ধারে সবুজ ছোট ছোট আম গাছ দেখে বেশ ভালো লাগছে। তবে রাস্তার খুব কাছাকাছি পানি চলে আসছে খুব ভয় করছে। কারণ গত বছর এই সময়টাতেই কিন্তু আমাদের এখানে বন্যা হয়েছিল। যাইহোক তারপরেও শুকরিয়া আদায় করে সৃষ্টিকর্তার কাছে, তিনি আমাদের জন্য যা রেখেছেন সেটাই আমাদের সাথে ঘটে যাবে। যাই হোক গত কালকের দিনটা আমরা অনেক সুন্দর ভাবে কাটিয়েছি এবং সবাই মিলে অনেক বেশি মজা করেছি, এটা ভেবেই বেশ ভালো লাগছে।