শ্রমিকের জীবনসংগ্রাম!✊

in Incredible India2 months ago

নমস্কার বন্ধুরা,,,
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই অনেক বেশি ভালো আছেন। আজ আপনাদের মাঝে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি সবার ভালো লাগবে। চলুন তাহলে শুরু করা যাক...

work-chinese-industrial-professional.jpgSource

সকালবেলা শহরের রাস্তায় নামলেই দেখা যায় কর্মব্যস্ত মানুষের ঢল। কিন্তু এই ভিড়ের মাঝেও কিছু মানুষ আছে, যাদের চোখে নেই কোনো স্বপ্ন, নেই কোনো আনন্দের আভা, আছে শুধু ক্লান্তি আর বেঁচে থাকার তাগিদ। তারা হলেন শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশাচালক কিংবা গার্মেন্টস কর্মী। এরা সমাজের চাকা সচল রাখলেও সমাজ তাদের দিকে ফিরে তাকায় না।

মালিকের গালমন্দ, মজুরির অনিশ্চয়তা আর কর্মস্থলে অবহেলা—এসব তাদের নিত্যদিনের বাস্তবতা। গার্মেন্টস কারখানার হাজার হাজার কর্মী সূর্য ওঠার আগেই কাজে যোগ দেয়, সারাদিন প্রচণ্ড পরিশ্রমের পর যা মজুরি পায়, তা দিয়ে সংসার চালানো কঠিন। কেউ কেউ ওভারটাইম করে একটু বাড়তি উপার্জনের চেষ্টা করে, কিন্তু এর ফলে শরীর আরও ভেঙে পড়ে। তবু সংসারের জন্য, ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার জন্য এই কঠোর জীবন তাদের মেনে নিতে হয়।

pexels-photo-12996389.jpegSource

রিকশাচালকদের জীবন আরও নির্মম। প্রচণ্ড রোদ, বৃষ্টি কিংবা শীত—কোনো কিছুই তাদের ছুটি দেয় না। সারাদিন প্যাডেল চালিয়ে যা আয় হয়, তার বেশিরভাগই চলে যায় রিকশার মালিকের পকেটে। তারপরও নিজের খাবার জোগাড় করে বাসায় পাঠানোর মতো টাকাও রাখতে হয়। পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে কিংবা কোন দুর্ঘটনায় পড়লে দিন শেষে তার চিকিৎসা করানোর মত হাতে কিছুই থাকে না। এভাবে চিকিৎসার অভাবে অসংখ্য শ্রমজীবী মানুষ অকালে মৃত্যুবরণ করেছে। যদিও এখন প্যাডেল চালিত রিকশার পরিবর্তে ইঞ্জিন চালিত রিকশা তৈরি হয়েছে। এতে করে রিকশা চালকদের জীবন যাত্রায় কিছুডা পরিবর্তন এসেছে।

pexels-photo-14823613.jpegSource

কৃষিশ্রমিকদের দুর্দশা আরও করুণ। সারাবছর মাঠে কাজ করে তারা, অথচ ফসলের ন্যায্য দাম পায় না। এদিকে বর্ষায়, বন্যায়, খরায় ফসলহানি হলে তারা ঋণের বোঝায় ডুবে যায়। অনেকেই ঋণের বোঝা বইতে না পরে শেষ পর্যন্ত শহরে গিয়ে দিনমজুরির পেশা বেছে নেয়, কিন্তু সেখানেও নতুন এক সংগ্রামের মুখোমুখি হতে হয় তাদের।

নগরজীবনে নিম্নবিত্তের জন্য বাসস্থানও এক দুঃস্বপ্ন। বস্তির এক ঘরে গাদাগাদি করে বসবাস করতে হয় পুরো পরিবারকে। বিশুদ্ধ পানি, পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা, সুস্থ জীবনযাত্রার অধিকার তাদের জন্য কল্পনাতীত। অথচ তারা না থাকলে শহর অচল হয়ে যেত।

pexels-photo-3347949.jpegSource

সবচেয়ে নির্মম সত্য হলো, এই শ্রমজীবী মানুষগুলোকে সমাজ মূল্য দিতে জানে না। তারা শুধু কাজের যন্ত্র হিসেবে গণ্য হয়, তাদের স্বপ্ন, আবেগ, কষ্টের কোনো মূল্য নেই। যেদিন তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে কিংবা বয়সের ভারে নুয়ে পড়ে, সেদিন তারা হয়ে যায় অবহেলিত, অপ্রয়োজনীয়। অথচ এদের শ্রমেই গড়ে ওঠে বড় বড় অট্টালিকা, আলোকিত হয় শহর, সচল থাকে অর্থনীতি।

এই নিষ্ঠুর বাস্তবতা বদলাবে কি? হয়তো না, যদি সমাজ সচেতন না হয়, যদি আমরা এদের শ্রমের প্রকৃত মূল্য দিতে না শিখি। সমাজের এই শ্রমজীবী মানুষগুলোর প্রতি ন্যায্যতা নিশ্চিত করা না গেলে, সভ্যতার এই অগ্রগতি শুধুই এক শ্রেণির জন্য আনন্দের হবে, আর বাকি মানুষ ডুবে থাকবে বঞ্চনার অন্ধকারে। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি, কাল আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।

সমাপ্ত

"ধন্যবাদ সবাইকে"

Sort:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Loading...
 2 months ago 

শ্রমিকের মূল শ্রমিকের ঘাম মুছে যাওয়ার আগে দিয়ে দিতে বলা হয়েছে। আমাদের ধর্মে আছে আপনার কাছে যদি কেউ কাজ করতে আসে তার শরীরের ঘাম মুছে যাওয়ার আগে আপনি তার পারিশ্রমিক পরিশোধ করুন তা না হলে এটা আপনার জন্য অনেক বড় একটা অন্যায় আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম নিজের কাজ নিজে করতে পছন্দ করতেন যদিও কোন শ্রমিক দিয়ে কোন কাজ করাতেন তাহলে তার শ্রম শেষ হওয়ার সাথে সাথে তার পারিশ্রমিক তার হাতে দিয়ে দিতেন।

আমাদের সমাজ বাস্তবতার কাছে হেরে যাচ্ছে হেরে যাচ্ছে শ্রমিকেরা প্রতিনিয়ত এত কষ্ট করার পরেও তারা তাদের পারিশ্রমিক সঠিকভাবে খুঁজে পায় না এটা নিয়ে তাদের অনিশ্চয়তা রয়েছে একটু দেরি হলে শুনতে হয় মালিকের গাল মন্দ এসব বিষয় নিয়ে বর্তমান সমাজে অনেক শ্রমিক নিজেদের চাকরি হারাচ্ছে আমার মনে হয় তারা যদি প্রতিনিয়ত এভাবে নিজেদের চাকরি হারাতে থাকে তাহলে তাদের সংসার কিভাবে চলবে।

যদি সমাজের মানুষ সচেতন না হয় আমাদের দেশের সরকার যদি সঠিকভাবে শ্রমিকদেরকে মূল্যায়ন না করে তাহলে কখনোই এই বাস্তবতা পরিবর্তন হবে না যতই শ্রমিকেরা চেষ্টা করুক না কেন তারপরেও দোয়া করি তারা ভালো থাকে।