পৃথিবীর প্রতিটা মানুষই তার নিজস্ব কল্পনা নিয়ে মাঝে মাঝেই ব্যস্ত হয়ে পরেন। কখন নিজের ব্যক্তিগত জীবন পাল্টাতে, আবার কখনও পারিবারিক, সামাজিক বা অন্য কোন ভালো লাগা বা না লাগার বিষয়গুলো পরিবর্তনে কাজ করে যান। কখনও তারা অতীত নিয়ে ভাবনা চিন্তায়ও মগ্ন থাকে। তবে প্রতিটা মানুষই যেকোনো বিষয়কে অন্য আরেকটা বিষয়ের সাথে খুব সহজেই পার্থক্য খুজে বের করতে পারেন৷ সবাই তার নিজ নিজ যুক্তি দিয়ে নিজের পছন্দের বিষয়কে যতটা ভালো করে সম্ভব সবার মাঝে উপস্থাপন করেন। আসলে বাস্তবতা এমনই, আমাদের পছন্দের জিনিস যতটা খারাপই হোক না কেন, আমরা সব সময় সেটা ভালো বলেই আখ্যাইত করি। তুলনা করার প্রবণতা আমাদের ছোট বেলা থেকেই তৈরি হয়। একটা ছোট শিশুও তার মতো করে যে কোনো জিনিস তুলনা করে পছন্দের জিনিসটা বেছে নেন। পরিবারের ভাই বোন তো সব সময়ই একে অন্যকে তুলনা করে নিজের দোষ আড়াল করার চেষ্টটা করে যায়, যা আমাদের বাস্তব উদাহরণ। বর্তমান এই তুলনার যুগে আমি অংশগ্রহণ করতে চলেছি এমনই একটি তুলনামূলক প্রতিযোগিতায়। যেখানে আমাকে পুরাতন এবং নতুন বিষয়ের মাঝে তুলনা করতে হবে।

মূলত আজকে কমিউনিটি কতৃক আয়োজিত প্রতিযোগিতায় আমি অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। আমি আমার নিজের ব্যক্তিগত মতামতকে আপনাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টটা করব।আপনারাও যারা এই প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করতে চান তারা নিম্নে দেওয়া লিংকে ক্লিক করে সহজেই অংশগ্রহণ করতে পারবেন।

অংশগ্রহণের লিংক

আমি আমার কয়েকজন বন্ধুকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, তারা হলেন @isha.ish,,@tammanna,, @mou.sumi,,, @shohana1.

স্কুল আর কলেজ জীবনে আমরা অনেকেই অনেক সময় বির্তক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। যেখানে যুক্তি আর তর্কে কোন বিষয়ের পজিটিভ না হয় নেগেটিভ দিক তুলে ধরতে হয়েছিল। আজকেও আমি চলে এসেছি এমন একটা বির্তক করতে। যেখানে অতীতের সাথে আমি বর্তমানকে তুলনা করার চেষ্টটা করব। যদি প্রতিটা মানুষের মত, চিন্তা আলাদা না হতো তাহলে পৃথিবীর সকল কিছু দেখতে একই রকম হতো।সবাই একই ধরনের পোশাক পরত, খাবার খেতো আর কাজ করত। কিন্তু যেহেতু সবার মধ্যে তুলনা করার বুদ্ধিমত্তা আছে এজন্য আজকের বিশ্ব এতো উন্নত। চলুন কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়ে জানা যাক এই তুলনা সম্পর্কে আমার মতামত কি।

1. Share the things that you believe were best in past, but now have been changed.

ছবির উৎস

বর্তমান সময়ে এসে আমার মাঝে মাঝে মনে হয়, অতীতে অনেক বিষয়ই স্মৃতির পাতায় গেথে রাখলে ভালো হতো। সব সময় যদি জিমিসগুলো মুহূর্ত গুলো পাওয়া যেতো।। মনে হয় আবার যদি সেই দিনগুলো ফিরে পেতাম তাহলেও কতই না ভালো হতো। আসুন অতীতের যে জিনিসগুলো আমি সেরা বলে মনে করতাম তার কিছু বিষয় শেয়ার করা যাক:-

√ বর্তমানের সময়ের যেই জিনিসটা ছাড়া মানুষ তার জীবন কল্পনা করতে পারতো না সেটা নিয়ে কথা বলা যাক। হয়ত আপনারাও আন্দাজ করতে পেরেছেন, হ্যাঁ, আমি বর্তমান সময়ের মোবাইল বা স্মার্ট ফোনের কথা বলতেছি। বর্তমান সময়ে মানুষের জীবন যেন ফোন ছাড়া অনেকটা অচলের মতো। সকালের শুরু এবং রাতের ঘুমাতে যাওয়া সবই হয় ফোনকে ঘিরে। সবাই বাড়ী, রাস্তা ঘাটে, কাজের স্থানে সব সময়ই ফোনই নিয়ে ব্যস্ত থাকে। আশে পাশে কি ঘটে যায় তা খেয়াল করার চিন্তাটুকু করে না। আসুন মোবাইলের কিছু সাইড ইফেক্ট জানা যাক:-

:- প্রথমত সবাই ফোনে আসক্ত হওয়ার কারণে অতীতের মতো মানুষের প্রতি ভালোবাসা আর মহব্বত হারিয়ে যাচ্ছে। আগে যেখানে পাশাপশাি বসে থাকা দুইজন লোক তাদের মধ্যে বসে আলোচনা করত, একে অন্যের খোজ নিত, কিন্তু মোবাইল আবিষ্কারের পর থেকে পাশে বসে থাকলেও কেউ কথা বলে না, সবাই ফোন চালাতে আর নেট দুনিয়ায় স্ট্যাটাচ দিতে ব্যস্ত। কেউ বিপদে পরে সবাই তাকে বাচানোর পরিবর্তন ফোনে ভিডিও করে নেটে ছাড়তে ব্যস্ত। এজন্য আমার মনে হয় অতীতের সেই সময় গুলোই ভালো ছিল যখন ছিল না কোন স্মার্ট ফোন। যদিও বর্তমান সময়ে স্মার্ট ফোন ছাড়া জীবন কল্পনা করা বোকামি। এজন্য আমার মনে হয় অতীতের স্মার্ট ফোন বিহীন জীবনই সেরা ছিল।

√ এবার আসুন শৈশব এবং শিশু জীবনে ফিরে যাওয়া যাক। আমরা বেশির ভাগ মানুষই তাদের শৈশব জীবনের স্মৃতিগুল ভুলতে পারি না। সেই স্কুল আর হাই স্কুল জীবনের সময়গুলো ছিল সেরা। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া আর ঘুরাঘুরি। বিকেল হলেই নানা ধরনের খেলাধুলায় মেতে উঠা। অতীতের এই মুহূর্ত গুলো আমার জীবনে সেরা বলে আমি মনে করি। কিন্তু বর্তমান এই প্রযুক্তির দুনিয়ায় অতীতের সেই খেলাধুলা ফিরে পাওয়া কষ্ট।

√ আসুন এবার একটু বর্তমান সময়ে যেটার মাঝে মানুষ বেশি ডুবে থাকে সেদিকে যাওয়া যাক। বর্তমান দুনিয়াতে ভালোবাসা ছাড়া যেন কেউ কিছু কল্পনা করে নাই৷ সবাই চায় তার মনের মানুষকে ভালোবাসতে, সব সময় তার সাথে থাকতে। কিন্তু কইজনই আর পূর্ণতা পায়। যাই হোক কথা সেদিকের না। বর্তমান সময়ে ভালোবাসার মানুষের সাথে প্রেম নিবেদন আর কথা বলার কতো শত আধুনিক মাধ্যম রয়েছে। ফেসবুক, টুইটার, হোয়্যাসর্ট অ্যাপ, সহ আরও কত কি। বর্তমান সময়ে এতো কিছু থাকার পরও আমাদের ভালোবাসাগুলো কেন জানি অন্য রকম হয়ে গিয়েছে। কেউ একজনের প্রতি তুষ্ট থাকতে চায় না। বার বার ধোকা দিয়ে চলে যায় অন্য আরেকজনের কাছে। কেন জানি বর্তমানের ভালোবাসাগুলো সার্থ্যের ভালোবাসা। কিন্তু আমার মনে হয় অতীতের ভালোবাসাগুলো পূর্ণতা পেয়েছে বেশি। তাদের ভালোবাসাগুলো ছিল সত্য। তখন ছিলোনা এতো কথা বলার মাধ্যম, একটা চিঠি লিখে পাঠিয়ে অপেক্ষা করতে হতো, কয়েকটা দিন পর্যন্ত। এর মধ্যে আলাদা ধরনের সুখ আর পাপ্তি। এজন্য আমি মনে করি অতীতের এই মুহূর্ত গুলো আমি সেরা মনে করি।

√ আসুন আরও একটা বিষয় জানা যাক। বর্তমান সময়ের এই শহর জীবন আমার কেন জানি দম বন্ধের মতো লাগে। আগের সেই গ্রামের জীবন কতই না সুখের ছিল। চারিদিকে প্রকৃতির বাতাস আর পাখির কলোরবে কতই না সুন্দর জীবন যাপন করা হতো। কিন্তু শহরের দিনগুল শুরু হয় গাড়ীর হর্ণ দিয়ে, যা আমার সবচেয়ে খাপার লাগা একটা বিষয়। অতীতে ঘুম ভাঙত পাখির ডাকে, আর বর্তমানে শহরের জীবনে ঘুম ভাঙে মানুষের আর গাড়ীর কলোহলে। বৃষ্টির দিনে টিনের ঘরের সেই ঝম ঝম শব্দগুলো অনেক মিস করি৷ এজন্য অতীতের এই মুহূর্ত আমার জীবনের সেরা ছিল।

এরকম আরও অনেক বিষয় আছে যেগুলো অতীতের মুহুর্ত গুলো সেরা ছিল।

2. How do you define old is gold?

ছবির উৎস

সত্যি কথা বলতে গেলে, পুরানো ছাড়া নতুন বা বর্তমানের কোনো অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যায় না। বর্তামন সময়ের যত আবিস্কারকে খুজে পাবপন, তা মূলত অতীতের জিনিসগুলোর উপর পরিক্ষা করে নতুন ভাবে তৈরি করা হয়েছে। অতীতে যা ছিল তার উপর কল্পনা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজকের বর্তমান বিশ্বের জন্ম৷ যেমন, অতীতের মাইক আবিস্কারকে কাজে লাগিয়ে আজকের এতো উন্নত সাউন্ড সিস্টেম। এরকম একটা বিষয় না, সকল বিষয়ই অতীতে আবিষ্কার হওয়ার পর বর্তমানে সেগুলো নিয়ে পূর্ণরায় রিচার্জ করে আরও উন্নত করে তৈরি করা হয়েছে। এজন্য আমি মনে করি পুরোনো দিনগুলো বা অতীতের সকল বিষয়ই ছিল সোনা।

3.Discuss some points why changes are needed for a better future!

দিন যত যাবে পৃথিবী তত পরিবর্তন হতে থাকবে। আধুনিক বিশ্ব মানুষের জীবনে কতে তুলতেছে উন্নত, আরামদায়ক। সব কিছু যেন হাতের কাছেই পেয়ে যায়। মন যা চায় তাই যেন এক নিমিশেষই করে ফেলতে পারে। আসলে এসবই সম্ভব হয়েছে পরিবর্তনের জন্য। আমাদের জীবনকে সহজ করতে, মানুষের সাথে যোগাযোগ সহজে করতে সবার খোজ খবর রাখতে, বিশ্বে ঘটে যাওয়া বিষয় সম্পর্কে জানতে আমাদেরকে অবশ্যই উন্নত হতে হবে। পরিবর্তন করতে হবে আমাদের জীবনের গতিবিধি। আপনে যদি বিগত ১০০ বছরের সাথে আজকের বিশ্বকে তুলনা করেন তাহলে খুব সহজেই বুঝতে পারবেন, কেন পরিবর্তন প্রয়োজন। পরিবর্তন কারণেই আজকে আমরা আমাদের এই উন্নত ভবিষ্যতে পৌছে গিয়েছি। ১০০ বছর আগে মানুষ যেগুলো নিয়ে কোন দিন কল্পনা তো দূর মাথায়ও আসত না, আজকের বিশ্বে আমরা সেগুলো করে দেখিয়েছি, হয়ত আগামি আরও ১০০ বছরে আরও নতুন নতুন আবিষ্কার আমাদের জীবনে করে তুলবে আরও উন্নত। এজন্য উন্নত ভবিষ্যতের জন্য পরিবর্তন অত্যাবশকীয়। পরিবর্তন ছাড়া উন্নত জীবম কল্পনা করা বোকামি।

আসলে জীবন মানেই পরিবর্তনের ধারা অব্যাহত। ছোট বেলা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত জীবন পরিবর্তন হতেই থাকবে। আজকে আমি তুলনা বা পরিবর্তন নিয়ে আমার কিছু মতামত আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম। ভুল ত্রুটি সবাই ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকে আমার পোষ্টটা এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আবারও দেখা হবে আমার নতুন কোনো পোষ্ট নিয়ে।