বর্তমানে আমার গ্রাম।
![]() |
---|
নমস্কার বন্ধুরা,
পরিকল্পনা তো থাকবেই তবে বাস্তবায়ন করাটা কিন্তু সহজ না। অনেক ইচ্ছে ছিল খুব সকালে ঘুম থেকে উঠতে হবে কিন্তু হলোই না। অন্যদিকে মাঝেমধ্যেই আবহাওয়া যেনো প্রতিকুলে যাচ্ছে। কি একটা অবস্থা!?
আমার আজকের নির্বাচিত বিষয় আমাদের বর্তমান গ্রামের কর্মমুখী মানুষদের কিছু কার্যক্রম। এই মুহূর্তে আমাদের গ্রামে গরমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ এবং এটার পাশাপাশি গ্রাম প্রধান দেশ। যদিও পদমর্যাদা বা বেতনের ভিত্তিতে মানুষকে মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে কিন্তু আমার কাছে এখনো কৃষকের মূল্যায়ন সর্বাগ্রে।
দিনশেষে যদি নিজেদের শিকড় গুলো কেউ একটু বিবেচনা করে তাহলে দেখা যাবে তার শিকড়টাও ওই গ্রামের কৃষি জীবনের সাথে সম্পর্কিত।
![]() |
---|
ওই যে গ্রামের মানুষদের কি রক্তে যে কৃষিকাজ জড়িয়ে রয়েছে সেটার প্রমাণ আমি আবারো পেয়েছি। কারণ আমি নিজেই আমার বাবাকে এবার বারণ করেছিলাম ধান রোপন করতে। তবে এমন কিছু কথা বাবা বলেছিল যেটার কারণে আমিই বাবাকে পুনরায় উদ্বুদ্ধ করেছিলাম। কথা মনে হয়েছিল আমাদের জন্যই হয়তোবা দেশের কোন একটি পরিবার সঠিকভাবে শস্য পাবে।
প্রকৃতপক্ষে পকেটে টাকা নিয়ে বাজারে গিয়ে আমরা যতটা সহজে শস্য ক্রয় করি ঠিক তার অনুরুপ কঠিন কার্যক্রম থাকে এটার পেছনে। একটি ধান গাছ ছোট শিশুদের মত লালন পালন করতে হয়। দু'বছর জমিতে রোপন করে রেখে আসলেই দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।
এই যে ধানের পালাটা দেখছেন আপনারা এটা আমার থেকে এক প্রকার যুদ্ধ করেই বাড়ির আঙিনাতে নিয়ে আসতে হয়েছে। ৪-৫ দিন পূর্বেও রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়া ছিল কিন্তু হঠাৎ যেন প্রকৃতি আমাদের প্রতিকূলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। একজন কৃষক মাঠে ধান ধান রোপন করার পর চাতক পাখির মত অপেক্ষা করে কখন যেন বৃষ্টি দেখা মেলে।
কারণ প্রাকৃতিক প্রতিটি জিনিস ঈশ্বরের আশীর্বাদ স্বরূপ। আমরা অধিকাংশ সময় রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক নিয়ে কথা বলি। তবে কৃষকরা জমিতে এই রাসায়নিক দ্রব্য সামগ্রী একদমই ইচ্ছাকৃতভাবে প্রয়োগ করে না। বরং একপ্রকার বাধ্য হয়ে প্রয়োগ করতে হয়। তবে যদি বৃষ্টির দেখা মেলে তাহলে সার এবং কীটনাশক দেওয়ার প্রয়োজনই হয় না।
যদিও ধান কোনোরকম আঙ্গিনাতে নিয়ে আসা হয়েছে কিন্তু যতোক্ষণ না ঘরে তোলা হচ্ছে ততোক্ষণ ও নিশ্চিত না। এটাই হলো কৃষকদের পরিশ্রম যে কারণে আমরা অর্থের বিনিময়ে বেঁচে থাকার জন্য শস্য ক্রয় করতে পারি।
![]() |
---|
![]() |
---|
![]() |
---|
এবার চলে আসি মাছ চাষীদের পুকুরে যেখানে আমার কাকু বাগদা ও গলদা চিংড়ি ধরছিল। আমাদের এখানে ধানের থেকে মাছের চাষ বেশি হয়। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল কিন্তু মাছের জন্য বিখ্যাত। জন্ম থেকেই আমরা মাছের সাথেই বেড়ে ওঠা। আমার তো নিজেকেই মাঝেমধ্যে মাছ অভিজ্ঞ মনে হয়।
মজার বিষয় হলো , একবার মাছের এক প্রশিক্ষণে এক কর্মকর্তা রুই মাছকে বলে বসলো মৃগেল মাছ। কিন্তু সবাই শান্ত, কারণ একজন কর্মকর্তার ভুল তো ঐভাবে বলা যাবে না। কে কার কথা শোনে, আমি তো বলেই বসলাম এটা রুই মাছ। অবশেষে ঐ কর্মকর্তাকে আমার পুকুরে নিয়ে আসতে হয়েছিল।
যাইহোক, আমার উদ্দেশ্য কাউকে ছোট করা না তবে এটা একদমই সঠিক যে শুধু কাগজ নিয়ে বাস্তব চলে না। বরং কাগজ না থাকা ঐ অভিজ্ঞ কৃষক বা মাছ চাষীই তুলনামূলক ভাবে বেশি অভিজ্ঞ।
কোনো রাসায়নিক কীটনাশক বা প্রযুক্তির ব্যবহার ছাড়া বেড়ে ওঠা মাছের চেহারা দেখুন যেন সূর্যের আলোয় মাচ গুলো চক চক করছে। আমি তো গরম উপেক্ষা করেই মাছের ছবি তুলতে দৌড়ে গিয়েছিলাম।
বর্তমান আমাদের না বরং আমাদের দেশের অধিকাংশ গ্রামে এখন ধান ও মাছের কাজেই ব্যস্ত অধিকাংশ মানুষ। যাইহোক, আমার আজকের লেখাটি এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ্য থাকুন।