পরীক্ষার দিনগুলো

in Incredible India19 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? কলেজে পরীক্ষা চলার জন্য আমি দুইদিন কমিউনিটিতে কিছু পোস্ট করতে পারিনি। আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে পরীক্ষার দিনগুলোর অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।

ছোটবেলায় পরীক্ষা বলতে ঠিক যতটা ভয় পেতাম বড়ো হওয়ার সাথে সাথে সেই ভয়টা অনেকখানি কেটে গেছে। গত চারদিন ধরে আমাদের পরীক্ষা চলছিল। প্রথম তিনদিন ছিল written exam আর গতকাল ছিল practicum exam । এই চার দিনই আমরা খুবই চাপে ছিলাম। বিশেষ করে আমরা যারা পড়াশোনার পাশাপাশি কোন না কোন পেশার সাথে নিযুক্ত তাদের আরো বেশি সমস্যায় পড়তে হয় এই পরীক্ষার দিনগুলোতে। কারণ সেই কাজগুলোর পাশাপাশি আমাদের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিও নিতে হয়।

এই চারদিন অনেক রাত জেগে সমস্ত লেখালেখির কাজকর্মও শেষ করতে হয়েছে। আমাদের পরীক্ষার আগে প্রায় এক মাস কলেজের ক্লাস অফ ছিল। তাই পরীক্ষা দেওয়ার সূত্রে হলেও অনেকদিন পরে কলেজে গিয়ে বেশ ভালো লাগলো। সেই চেনা পরিচিত পরিবেশে শিক্ষক শিক্ষিকা এবং বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আবার দেখা হল। পরীক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি গল্প গুজব তো রয়েছেই।

1000252882.jpg

d.el.ed , b.ed এর private college গুলোতে কিন্তু পরীক্ষার সময় বিশেষ গার্ড দেওয়া হয় না। কোন কোন কলেজে তো ওপেন বুক এক্সামেরও ব্যবস্থা রয়েছে। তবে আমাদের কলেজ প্রাইভেট হলেও এই বিষয়গুলোকে একেবারেই মান্যতা দেয় না। সরকারি কলেজগুলোতে ঠিক যেভাবে পরীক্ষা নেওয়া হয় আমাদের কলেজেও একই ব্যবস্থা প্রচলিত আছে। নিজেদের কাছে কোনরকম বই বা মোবাইল রাখা যায় না। সত্যি কথা বলতে গেলে পরীক্ষা বলতে তো আমার এটাই বুঝি তাই না! তাই সবদিক থেকে দেখতে গেলে আমাদের কলেজ কিন্তু অনেক প্রাইভেট কলেজ থেকে আলাদা।

প্রতিদিন কলেজে পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১২ কার সময় আর শেষ হয়েছিল তিনটের সময়। মোট তিন ঘন্টার পরীক্ষা। পরীক্ষার হলে কিন্তু আমরা সকলে সকলকে সাহায্য করি। সেটা অবশ্যই স্যার, ম্যামদের চোখ এড়িয়েই করতে হয়। পরীক্ষার শেষে আমরা সবাই মিলে পরের দিন কোন কোন বিষয় গুলো আমরা ভালোভাবে পড়ে আসবো, সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করে বাড়ি চলে আসতাম।

1000253401.jpg

এই ভাবেই প্রথম তিন দিনের written exam চলল। গতকাল ছিল প্রাক্টিকাম এক্সাম। প্রাক্টিকাম এক্সাম এর জন্য আমাদের দুটো খাতা তৈরি করতে হয়েছিল। তার আগের দিন অনেক রাত জেগে আমি খাতার সম্পূর্ণ ডেকোরেশন করেছিলাম। পুরো কাজ শেষ করতে আমার অনেক সময় লেগেছিল । ঘুমোতে যাওয়ার সময় ঘড়ির কাঁটায় দেখলাম রাত ২.৪০। সকালে যেহেতু প্রত্যেকদিনই টিউশন পড়িয়ে তারপর পরীক্ষা দিতে গিয়েছি তাই সকালে আমি বিশেষ সময় পাইনি। সেই কারণেই আমাকে রাতের মধ্যে সমস্ত কাজকর্ম শেষ করতে হয়েছিল।

1000253399.jpg

যাইহোক অনেকটা সময় জেগে কাজটা সম্পন্ন করতে হলেও মনে মনে ভীষণভাবে satisfied ছিলাম যে কাজটা মনের মতো করে শেষ করতে পেরেছি। তারপর কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে আবার সকালে পড়াতে গিয়েছিলাম। পড়িয়ে এসে রেডি হয়ে কলেজে চলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে অন্য বন্ধু-বান্ধবদের প্র্যাক্টিক্যাল গুলো দেখছিলাম। ওরাও সবাই খুব সুন্দর ভাবে কাজ করেছিল।

কিন্তু মনটা একেবারে ভেঙে গেল যখন দেখলাম আমাদের বিষয় শিক্ষিকা নির্দিষ্ট কারণবশত কলেজে আসতে পারেননি। তাই অন্য একজন শিক্ষক আমাদের খাতাগুলো জমা নেওয়ার জন্য এসেছিলেন। উনি শুধুমাত্র খাতাগুলো জমা নিয়ে দুটো পেপারে দুটো হস্তাক্ষর করিয়ে নিলেন। আমাদের খাতাগুলো একবারও খুলেও দেখলেন না। এত কষ্ট করে আমরা প্রত্যেকে কাজটা করেছি অথচ খুলে দেখলেনও না। অন্যদিকে আমাদের বিষয় শিক্ষিকা বেশ অনেক দিনের জন্য ছুটিতে আছেন। তাই খাতাগুলোর আদেও ঠিকঠাক মূল্যায়ন হবে কিনা এই বিষয়ে আমাদের প্রত্যেকেরই সন্দেহ রয়েছে।

যাইহোক ভালো-মন্দ সমস্ত রকম অভিজ্ঞতা নিয়ে আমরা আমাদের দ্বিতীয় বর্ষের exam শেষ করলাম। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

Sort:  
Loading...
 14 days ago 

আপনার কথার সাথে আমিও সহমত পোষণ করছি ছোটবেলায় পরীক্ষা মানেই ছিল অনেক বড় একটা ভয় কিভাবে পরীক্ষা দেব এটা ভেবেই অনেক কান্না করতাম বিশেষ করে আমি নিজে প্রথম যখন ক্লাস ওয়ানে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিলাম তখন আমি কান্না করতে করতে পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলাম কারণ আমার ভয় ছিল আমি কিভাবে পরীক্ষা দেব তখন আমার আম্মু আমাকে সাহস দিয়েছিল বলেছিল তেমন কিছুই নয়।

শুধুমাত্র নিজের পড়ার বিষয় অনুযায়ী আমাদেরকে প্রশ্ন করা হবে সেই বিষয়ে আমাদের উত্তর দিতে হবে বড় হওয়ার পর পর এই বিষয়টা আমাদের কাছে অনেক বেশি সহজ হয়ে গেছে এখন আর পরীক্ষা নিয়ে তেমন একটা টেনশন করতে হয় না আপনার পরীক্ষার দিনগুলো অনেক বেশি ব্যস্ততা এবং অনেক টেনশনের মধ্যে কেটে গেছে।

দুপুর ১২ টা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত আপনাকে পরীক্ষা দিতে হয়েছে তবে সঠিকভাবে পরীক্ষা গুলো সম্পন্ন করেছেন যেটা জানতে পেরে ভালো লাগছে বর্তমান সময়ে আপনি পরীক্ষার আগে বন্ধুদের সাথে দার্জিলিং ঘুরতে গিয়েছেন এটা দেখেও আরো বেশি ভালো লাগলো অসংখ্য ধন্যবাদ ভাল থাকবেন।