লক্ষ্মী পুজোর নিমন্ত্রণ
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? গত দুই সপ্তাহ ধরে আমার শরীর বিশেষ ভালো ছিল না। তাছাড়া আমি মোবাইলের স্ক্রিনে বেশিক্ষণ তাকিয়ে থাকতে পারছিলাম না। যার ফলে বেশ অনেকদিন ধরে কোনো রকম পোস্ট করতে পারিনি। তারপর চোখের ডাক্তার দেখিয়েছি। একটা eye drop দিয়েছিল। সেটা কিছুদিন ব্যবহার করে এখন অনেকটা ভালো আছে। তাই আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে কিছু গল্প শেয়ার করার জন্য।
আমরা বাঙালিরা প্রত্যেকেই নিজেদের বাড়িতে মা লক্ষ্মীর পুজো করে থাকি। বিশেষ করে এই কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোটা প্রায় সকলের বাড়িতেই হয়। আমাদের বাড়িতেও প্রতিবছরই এই পুজো হয়ে থাকে। তবে আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার এই দিনের কিছু গল্প শেয়ার করব। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
আমার দাদা যেহেতু নিজেই ব্রাহ্মণ, অর্থাৎ নিজেই আমাদের বাড়ির পুজো করে তাই আমাদের পুজো তাড়াতাড়িই হয়ে যায়। নিজেদের বাড়ির পুজো সেরে আমি চলে গিয়েছিলাম আমার এক বান্ধবীর বাড়ি। আমাদের বাড়ি থেকে ওদের বাড়ির দূরত্ব খুব বেশি দূর নয়। ওদের বাড়িতে বছরের বিভিন্ন সময়ে অনেক রকমের পুজো হয়। এই লক্ষ্মী পুজোতেও ওরা বেশ গুছিয়ে পূজা করে। প্রায় সকল পুজোতেই প্রসাদ খাওয়ার নিমন্ত্রণ আমি পাই। তাই লক্ষ্মী পূজাতে ও আমার নিমন্ত্রণ ছিল। সেইমতো যথাসময়ে আমি পৌঁছে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি ইতিমধ্যে আমার বান্ধবী সমস্তটা গুছিয়ে ফেলেছে।
আমার এই বান্ধবীটির নাম শিল্পী। ও পুজোর কাজ করতে খুব ভালোবাসে। তাই একা হাতে সমস্তটা সুন্দরভাবে গুছিয়ে ছিল। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে ঠাকুরের ভোগ হিসেবে গোবিন্দভোগ চালের খিচুড়ি, পাঁচ রকমের ভাজা, পায়েস, লুচি, সুজি, বোদে, নিমকি, নাড়ু ইত্যাদি নানা রকম জিনিস বানিয়েছে। তারপর ঠাকুরের সিংহাসন সাজানো, সুন্দর করে ফুল দিয়ে গোছানো থেকে শুরু করে ফল কাটা ও ঠাকুরের সামনে সেগুলোকে সুন্দর করে গোছানো সমস্ত কাজগুলো একা হাতেই করেছে। কাকিমা সামান্য সাহায্য করেছে। এত সুন্দর করে সমস্তটা সামলেছে দেখে বেশ ভালো লাগছিল। মানে, আমি তো এইসব বিষয়ে এত পটু নই, তাই ভাবছিলাম আমার বয়সী একটি মেয়ে কত সুন্দর করে সমস্তটা গুছিয়েছে।
আমিও গিয়ে কিছুটা সাহায্য করেছিলাম। তারপর কিছুক্ষণ বাদে ঠাকুর মশাই আসে। এরপর পুজো শুরু হয়। ওদের লক্ষ্মী ঠাকুরের মূর্তি পূজা হয় না। পোড়ামাটির পটের ওপরে আঁকা লক্ষ্মী দেবীর পূজা হয়। ঠাকুরমশাই বেশ অনেকক্ষণ সময় ধরে মন্ত্র পাঠের মাধ্যমে পুজো শেষ করেছিল। তারপর আমার বান্ধবী লক্ষী দেবীর পাঁচালী পাঠ করছিল। এত সুন্দর করে পাঠ করছিল যে শুনতে খুবই ভালো লাগছিল। আমি, কাকিমা সকলে একসাথে বসে পাঁচালী শুনছিলাম।
এরপর পুজো শেষ হলে, কিছুক্ষণ বাদে প্রসাদ বিতরণ করা হয়। পাড়ার বাচ্চারা সবাই প্রসাদ নিতে আসে। কাকিমা গুছিয়ে দিচ্ছিল, আর আমি সকলের হাতে হাতে দিয়ে দিচ্ছিলাম। এইভাবে সকলকে প্রসাদ দেওয়ার পর কাকিমা একটা প্লেটে করে আমার জন্য প্রসাদ নিয়ে আসে। সমস্ত প্রসাদ অল্প অল্প করে খেয়েছিলাম। সবশেষে বাড়ি আসার সময় কাকিমা আমার ভাইপোর জন্য খানিকটা প্রসাদ দিয়ে দিয়েছিল।
এইভাবেই সেই দিনটা কেটেছিল। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।