অপ্রত্যাশিত ঘটনা
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে আবারো চলে এসেছি আপনাদের সাথে আমার গতকালকের পোস্টের বাকি পর্ব টুকু শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
গতকালকের পোস্টে আপনাদের জানিয়েছিলাম যে অনেকদিন ধরে পরিকল্পনা করার পর অবশেষে বৌদিকে নিয়ে একটু বেরোতে পেরেছিলাম। বাড়ির কাছাকাছি একটা রেস্টুরেন্টে বৌদি, আমি, ভাইপো আর শুভায়ন গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে আমরা কি কি খাবার অর্ডার করেছিলাম, সে ব্যাপারেও আমি আপনাদের সাথে গতকালকে পোস্টে শেয়ার করেছি।
আমরা ভাইপোর জন্য স্টার্টারে চিকেন ললিপপ অর্ডার করেছিলাম। এক প্লেটে ছটা ললিপপ থাকে। ভাইপোকে দুটো দিয়েছিলাম, কারণ ও ওটা ছাড়া আর কিছুই খাবে না। বৌদিকে দুটো দিয়েছিলাম, আমি আর শুভায়ন একটা করে নিয়েছিলাম। তারপরের কিছু ঘটনাও আপনাদের সাথে আমি আগেই শেয়ার করেছি। তবে আজকের লেখাটি চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমাকে আগের দিনের কিছু ঘটনা শেয়ার করতে হচ্ছে। যেহেতু প্যান ফ্রায়েড মোমো টা আমার খুব পছন্দের তাই ললিপপ খাওয়ার পর সেটাই অর্ডার করা হয়েছিল। তবে আমাদের মেইন কোর্সের খাবার চলে আসাতে যিনি অর্ডার নিচ্ছিলেন, তিনিই বলেছিলেন যে মোমো আসতে একটু দেরি হবে, ততক্ষণে খাবার ঠান্ডা হয়ে যাবে।
তাই আমরা ওনাকে বলেছিলাম, "ঠিক আছে, তাহলে মোমোটা অর্ডার নিতে হবে না। যদি অর্ডার দিতে হয় আমরা পরে জানাবো।" উনিও মাথা নেড়ে চলে গেলেন। ভাইপো খুব মজা করেই তার পছন্দের জিনিস, ললিপপ খাচ্ছিল, হঠাৎ করে চিৎকার করে কেঁদে উঠলো। আমরা তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। পরে বুঝতে পারলাম, ও টম্যাটো সস্ না খেয়ে ডিশের মধ্যে একটা ঝাল আচার ছিল সেটা খেয়ে নিয়েছে। আচারট সত্যিই খুব ঝাল ছিল, ও যে কখন ওটা খেয়েছি আমরা খেয়াল করিনি। তারপর তো একটা বিশ্রী সিচুয়েশন তৈরি হলো। জল, চিনি কোনো কিছু দেওয়া বাদ যায়নি। তবে মজার ব্যাপার হলো, একটু ঝাল কমতেই আবার ললিপপ খাওয়া শুরু করে দিয়েছিল।
যাক, এইভাবে প্রথম সিচুয়েশনটা কাটিয়ে উঠলাম। তারপর আবার আমরা খাওয়াতে মনোযোগ দিয়েছিলাম। চিকেন ভর্তাটা এত সুন্দর খেতে হয়েছিল যে মনে হচ্ছিল খেয়েই যাই। শুভায়ন এর এক জায়গায় নিমন্ত্রণ ছিল, তাই ও আর নান খায়নি। আমি আর বৌদি দুজন মিলে খেতে গিয়ে দেখলাম, আমাদের বেশি অর্ডার দেওয়া হয়ে গেছে। তাই আমরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করছিলাম যে, "ভালোই হয়েছে, মোমো টা অর্ডার দিইনি। অর্ডার দিলে আমরা আর এতকিছু খেতে পারতাম না।
ও মা দেখি সেই মুহূর্তে একজন ওয়েটার এসে এক প্লেট প্যান ফ্রায়েড মোমো দিয়ে গেল। এটা দেখে আমার ভারী অদ্ভুত লেগেছে। কারণ আমরা বারবার করে ওনাকে বলে দিয়েছিলাম যে পরে যদি প্রয়োজন হয় আমরা তখন অর্ডার দেবো। উনিও তখন বললেন ঠিক আছে। আর আমরা যেহেতু ওনার কাছেই অর্ডার দিয়েছিলাম, তাই উনি আমাদের টেবিল ছেড়ে যাওয়ার আগেই আমাদের মেইন কোর্সের খাবার চলে আসাই উনি নিজেই বললেন মোমো টা খেতে গেলে আমাদের যে খাবারগুলো এসেছে সেগুলো ঠান্ডা হয়ে যাবে। সুতরাং এমন নয় যে উনি তার আগেই মোমো টা বানানোর কথা বলে দিয়েছিলেন।
মনে মনে ভারী রাগ হলেও আমরা তিনজনের কেউই বেশি তর্ক করতে পারিনা। আমাদের জায়গায় অন্য যেকোনো মানুষ হলেই হয়তো এই বিষয়টা নিয়ে ওনাকে দুটো কথা শোনাতো। মোমোটা টেবিলে দিয়ে যাওয়ার পর ওই ওয়েটারকে যখন বলা হল যে "আমরা তো আপনাকে বললাম, মোমো টা এখন অর্ডার দিচ্ছি না, তখন কেন দিলেন?" উনি তখন আর কি করবেন! ওনার আর কিছু বলার ছিল না। আমরা চাইলেই ওটা নেব না বলে একটা ঝামেলা পাকাতে পারতাম। তবে সত্যি বলতে আমরা একেবারেই এসব করতে পারি না। অতএব মোমোটা আমাদের টেবিলেই থেকে গেল।
তবে সেই মুহূর্তে ওটা আমাদের পক্ষে খাওয়া সম্ভব ছিল না, তাই আমরা ওটা প্যাক করে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। তারপর বাকি খাবার খেয়ে বিল পে করে আমরা কিছু ফটো তুলে বাড়ি চলে এসেছিলাম।।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন ।
