সাবু মাখা
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে আপনাদের সাথে একটা দারুন রেসিপি শেয়ার করব। এই ধরনের রেসিপি আমি আগে কখনো আপনাদের সাথে শেয়ার করিনি। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
আমাদের বাঙ্গালীদের 'বারো মাসে তেরো পার্বণ'। পুজো এবং অনুষ্ঠান যেন আমাদের শেষই হয় না। আর সারা বছর ধরেই হিন্দুদের বিভিন্ন দেব-দেবীর পূজার্চনা করা হয়। এই পূজার্চনা মানেই উপোস থেকে ঠাকুরের আরাধনা করা। এই উপোসের দিনগুলোতে অনেকে পুজো দেওয়ার পর সারাদিন ফল খেয়ে থাকে, আবার কেউ কেউ লুচি, পরোটা বা ডালিয়া রান্না করে খায়।
তবে আজ আপনাদের সাথে যে রেসিপিটি শেয়ার করব সেটি এই উপোসের দিনগুলোতে ভীষণ উপযোগী। এটা যেমন শরীরকে ঠান্ডা রাখে ঠিক তেমনি খুবই সুস্বাদুও হয়। আর এটি তৈরি করতে খুব বেশি উপকরণের প্রয়োজন হয় না। পুজোর জন্য আয়োজিত উপকরণ দিয়েই এই রেসিপিটি তৈরি করা সম্ভব।
গতকাল নীল পূজো (শিবপুজো) উপলক্ষ্যে আমার শ্বাশুড়ি মা উপোস ছিলো। তবে ওনার এক সপ্তাহ ধরে শরীর বিশেষ ভালো নেই। তাই কালকে ওনার পুজোর কাজে সাহায্য করার জন্য আমি ওই বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি ওনার জ্বর তখনো কমেনি। কিন্তু উনি পূজার্চনা করতে খুব ভালোবাসেন। তাই উপোস করে পুজো দেওয়া থেকে আমরা কেউই তাকে আটকাতে পারিনি। তবে সারাদিন নির্জলা উপোস ওনাকে করতে দেওয়া হয়নি। তাই সকাল সকাল পুজো শেষ করে উনি সারাদিনই ফল খেয়েছিলো। রাতের বেলা কি খাবে জিজ্ঞাসা করতে মা বলল রাতে সাবু মাখা করবে। তাই উনিই বললেন, আমি যেন এই রেসিপিটা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। তাই ভাবলাম রেসিপিটা আপনাদের সাথে শেয়ার করেই ফেলি।
চলুন তাহলে জেনে নিই আমি কিভাবে সাবু মাখা করেছিলাম----
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | সাবু | ১০০গ্রাম |
২ | দুধ | ২৫০ গ্রাম |
৩ | চিনি | স্বাদ অনুযায়ী |
৪ | সন্দেশ | ২ পিস্ |
৫ | আপেল | ১টা |
৬ | কলা | ৪ টে |
৭ | তরমুজ | অল্প পরিমাণে |
৮ | কাজুবাদাম | পরিমাণ মতো |
৯ | কিসমিস | পরিমাণ মতো |
১০ | আঙ্গুর | পরিমাণ মতো |
কেউ যদি চায় এর মধ্যে নারকেল কোঁড়াও ব্যবহার করতে পারে। তাহলে টেস্ট আরো ভালো হবে।
ধাপ ১ :
প্রথমেই সাবু গুলোকে একটা পাত্রে ঢেলে নিয়ে পরিষ্কার জলে একবার ধুয়ে নেব।
ধাপ ২ :
এরপর বেশ কিছুটা জলের মধ্যে সাবু গুলোকে প্রায় পাঁচ ঘন্টার জন্য ভিজিয়ে রাখতে হবে। যেহেতু সাবুগুলো ভিজে যাওয়ার পর ফুলে পরিমাণে বেড়ে যাবে তাই একটু বেশি পরিমাণে জল দিয়ে ভিজিয়ে রাখবেন।
ধাপ ৩ :
এরপর কলাগুলোকে ছাড়িয়ে নিয়েছিলাম ও প্রয়োজনমতো আপেল ও আঙ্গুর নিয়ে নিয়েছিলাম।
ধাপ ৪ :
এরপর তরমুজগুলোকেও কেটে নেব ও কিছু পরিমাণ কাজ বাদাম এবং কিসমিস নিয়ে নেব।
ধাপ ৫ :
এরপর সাবুর মধ্যে একে একে কলা, আপেল কুঁচি ও তরমুজ কুঁচি দিয়ে দেব।
ধাপ ৬ :
এরপর পরিমাণমতো কাজুবাদাম, কিসমিস ও আঙ্গুর ফল দিয়ে দেব।
ধাপ ৭ :
এরপর এর মধ্যে স্বাদ অনুযায়ী চিনি দিয়ে দেব। কার সাথে সাথে দিয়ে দেবো দুই পিস সন্দেশ ও ২৫০ গ্রাম গরুর দুধ।
ধাপ ৮ :
এরপর আলতো হাতে সমস্ত উপকরণগুলোকে ভালোভাবে মিশিয়ে নেব। তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে টেস্টি টেস্টি সাবু মাখা।
আমি এর আগে কখনো সাবু খাইনি। তাই আমি বুঝতে পারছিলাম না এটা খেতে কেমন হয়। তাই প্রথমে অল্প পরিমাণে নিয়ে টেস্ট করেছিলাম। তবে খাওয়ার পরে আমার কিন্তু বেশ ভালো লেগেছিল।উপোসের দিনগুলোতে এই সাবু মাখা শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। তাই আপনারও আপনাদের উপোসের দিনগুলোতে এই রেসিপিটি অবশ্যই ট্রাই করতে পারেন।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
Congratulations
This post has been curated by
Team #5
@damithudaya
Thank you so much
তোমার সাবু মাখা দেখে আমার সেই ছোট্ট বেলাকার সাবু খাওয়ার কথা মনে পড়ে গেল। শিব পূজার দিন অনেকেই সাবু খেয়ে দিন কাটায়। তবে আমি সেই ছোট বেলাকার সাবু গরম করে খাওয়ার কথা বলছি না। ছোটবেলায় দিদা যখন শিবের উপবাস করত তখন দেখতাম সমস্ত কিছু দিয়ে সাবু মাখিয়ে খেত এমনকি আমার জন্য রেখে দিত ছোটবেলায় ঘুম থেকে ফেরার পর সেই সাবু মাখা খুঁজতেই ব্যস্ত থাকতাম। কারণ ওইটা খেতে আমার ভীষণ ভালো লাগতো। তবে এখন দ্বিধা সেভাবে আর সাবু মাখা খেয়ে ওঠেনা ।তাই আমারও সেভাবে আর খাওয়া হয় না। তুমি আসবে প্রত্যেকটা ছবিসহ উপকরণের মাধ্যমে সাধু মাখার পদ্ধতি তুলে ধরেছে। সুন্দর পোস্টটি শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার পোস্টটি পড়ে তুমি তোমার ছোটবেলার স্মৃতি রোমান্থন করতে পেরেছ দেখে আমারও খুব ভালো লাগলো। তোমাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
আসলে সাবু সাধারণত আমরা রান্না করে খেয়ে থাকি তবে আজকে আপনি চমৎকারভাবে সাবু মাখা কিভাবে তৈরি করতে হয় সেই বিষয়টা আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন আপনি সাবু মাখার সাথে বেশ কিছু ফল ব্যবহার করেছেন যেটা দেখতে অনেক বেশি লোভনীয় দেখাচ্ছে অসংখ্য ধন্যবাদ সাবু মাখা তৈরি করার পদ্ধতি আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন।