স্টুডেন্ট এর বানানো প্রোজেক্ট
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে একটা দারুণ জিনিস শেয়ার করতে চলে এসেছি। আশা করছি আপনাদের সকলের খুব ভালো লাগবে।
আমাদের রাজ্যে এখন তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। এই অত্যাধিক তাপে সকলেরই অস্বস্থিকর পরিস্থিতি। বিশেষ করে বাচ্চা ও বয়স্কদের অবস্থা খুবই শোচনীয়। এই প্রচন্ড গরমে বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়া এবং এতগুলো ক্লাস করা খুবই কষ্টকর। তাই প্রতিবছরই এই গরমের সময়, প্রচন্ড দাবদাহের হাত থেকে বাচ্চারা যাতে কিছুটা স্বস্তি পায় তাই বিদ্যালয় গুলোতে গরমের ছুটি দেওয়া হয়। এই বছরও কিছুদিন আগেই বিদ্যালয়গুলোতে গরমের ছুটি দেওয়া হয়েছিল। ছুটি ছিল এক মাস ধরে। তবে, তাতে কি বাচ্চাদের পড়াশোনার থেকে রক্ষে আছে! এক মাস ছুটির দরুণ বিদ্যালয়ে গুলো থেকে বাচ্চাদের অনেক অনেক হাতের কাজ ও প্রাকটিকাল এর কাজ দিয়েছে। সেগুলো তারা গোটা মাস ধরে করেছে। মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে ওরা আমাকে বলে, "স্কুলটা ছুটি দেওয়ার কি দরকার ছিল বলো তো ম্যাম, এত্তো এত্তো বাড়ির কাজ দিয়েছে জানো। ভাবলাম একটু ঘুরতে যাব কিন্তু এত কাজ শেষ করবো কবে। তার ওপর আবার প্রোজেক্ট বানাতে হবে।" আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার এক স্টুডেন্ট এর তৈরি করা কিছু প্রোজেক্ট এর কাজ শেয়ার করব।
আমার এই স্টুডেন্টটির নাম বিদিশা মন্ডল। ও ক্লাস সিক্সে পড়ে। ওদেরকে প্রতিটা সাবজেক্টের একটা করে প্রোজেক্ট করতে দেওয়া হয়েছিল। বিদিশা খুব সুন্দর ড্রয়িং করতে পারে। তাই ও ওর সমস্ত প্রোজেক্ট গুলো কিন্তু একা একাই ডিজাইন করেছে এবং লিখেছে। ও কারোর সাহায্য নেয়নি। প্রথমেই দেখায় ওর ভূগোল এর প্রোজেক্ট টি। এত সুন্দর করে কভার পেজটা বানিয়েছিল যে দেখেই মনটা ভরে যাবে। আমার নিজেরও হয়তো এত সুন্দর আইডিয়া আসত না। প্রতিটি বিষয় কে কেন্দ্র করে ও কভার পেজগুলো খুব সুন্দর বানিয়ে ছিল। আসুন আপনাদের কে ওর ভূগোলের কভার পেজটা দেখায়।
ভূগোলে ওদের বিষয়বস্তু ছিল জলচক্র। লেখা থেকে শুরু করে ছবি আঁকা সমস্ত কিছুই ও নিজের হাতে করেছে। ভিতরে লেখাগুলো ওদের বই থেকে সাহায্য নিয়ে লিখেছে। আর কবিতা ও google থেকে সার্চ করে পেয়েছে। এত সুন্দর করে কাজগুলো করেছে, যে সত্যিই প্রশংসা করতে হয়। এরপর আসি ইতিহাসের কথা। ইতিহাসেরও কভার পেজটা এত ইউনিক করেছে যে চোখকে আকৃষ্ট করবেই। এতসব ইউনিট চিন্তাভাবনা যে ও করেছে তাতেই বাহবা দিতে হয়।
বাকি প্রোজেক্টের খাতাগুলোর ছবি এখনো নেওয়া হয়নি। এই প্রোজেক্ট গুলোর পাশাপাশি ওদের দুটো মডেল তৈরি করতে দিয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম মডেলটি হল আগ্নেয়গিরি 🌋। আগ্নেয়গিরিটা কিভাবে বানাবে এই নিয়ে প্রথমে একটু সংশয় ছিল। তারপর youtube থেকে ভিডিও দেখে বাবাকে বলে সমস্ত উপকরণ কিনে এনেছে। এর পর একা একা সমস্ত টা করেছে। খুব পারফেক্ট না হলেও ও যে এতোটুকুও করতে পেরেছে সেটা হয়তো আমি নিজেও পারতাম না। আপনারা দেখে বলুন ওর বানানো আগ্নেয়গিরিটা কেমন হয়েছে।
এরপর যে প্রোজেক্ট টি ছিল সেটা হল জলচক্র এর ওপর । জলচক্র এর ওপরে একটি প্রোজেক্ট আর একটা মডেল তৈরি করতে দিয়েছিল। সেটাও অনবদ্য হয়েছিল। ক্লে দিয়ে সূর্য বানিয়ে ছিল, তুলো দিয়ে মেঘ বানিয়ে ছিল। সেই সাথে পাহাড়, নদী, গাছপালা সমস্ত কিছুই খুব সুন্দর ভাবে বানিয়েছিল। আর সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিষয় হলো খুব সুন্দরভাবে পিছন দিকে একটা স্ট্যান্ড বানিয়েছিল যাতে মডেলটা পড়ে না যায়। আপনারাও দেখুন মডেলটি কেমন হয়েছে।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।