বাঙালির প্রিয় আলু পোস্ত
নমস্কার বন্ধুরা। সকলে কেমন আছেন? আজকে আমাদের এখানে সকাল থেকে বৃষ্টি পড়ছে। গত দুইদিন যাবত এইরকমই আবহাওয়া রয়েছে। ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হয়েই চলেছে।
যেহেতু প্রচন্ড গরম পড়েছিল তাই এই বৃষ্টিটা বেশ ভালোই লাগছে। চারিদিকটা একেবারে ঠান্ডা হয়ে আছে। তারপর আজ বাড়িতে কেউ নেই। তাই নিজের রান্নার ভার নিজেকেই নিতে হয়েছে। তবে বাড়িতে কেউ না থাকলে আমার অনেক বেশি কিছু রান্না করতে ভালো লাগেনা। তাই ভেবে দেখেছিলাম যে কোনো একটা তরকারি করবো। তবে বাড়িতে কোনো সবজি কেনা ছিল না। সবজি কিনতে বাজারে যেতে হতো। তবে এই বৃষ্টির মধ্যে আর বাজারে যেতে ইচ্ছে হলো না। তাই ভাবলাম আলু যখন আছে আলু পোস্ত বানিয়ে ফেলি।
যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। ঝটপট করে আলু পোস্ত বানানোর প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম। তারপর অল্প সময়ের মধ্যেই তৈরি করে ফেললাম বাঙালির প্রিয় আলু পোস্ত।
চলুন তাহলে জেনে নিই আমি কিভাবে আলু পোস্ত বানিয়েছিলাম----
|
---|
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | আলু | ২ টো |
২ | লবণ | স্বাদ অনুযায়ী |
৩ | হলুদ | সামান্য |
৪ | পোস্ত | ৩ চামচ |
৫ | আদা | পরিমাণ মতো |
৬ | কালোজিরে | সামান্য |
৭ | সর্ষের তেল | পরিমাণ মতো |
৮ | শুকনো লঙ্কা | ২ টো |
|
---|
ধাপ ১ :
সবার প্রথমে দুটো আলুতে ভালোভাবে খোসা ছাড়িয়ে, গোটা গোটা করে কেটে নিতে হবে। তারপর ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
ধাপ ২:
এরপর পরিমাণ মতো পোস্ত, কাঁচা লঙ্কা ও শুকনো লঙ্কার একটা পেস্ট তৈরি করে নিতে হবে। আমি শিলনোড়া দিয়ে বেটে নিয়েছিলাম। আপনারা চাইলে মিক্সারেও করে নিতে পারেন। পেস্টটা তৈরি করার সময় আমি পুরোপুরি মিহি করে ফেলিনি, হালকা দানা দানা রেখেছিলাম।
ধাপ ৩:
এরপর ওভেনে কড়াই চাপিয়ে, কড়াই গরম হয়ে গেলে তার মধ্যে পরিমাণ মতো সর্ষের তেল দিয়ে দিয়েছিলাম। সরষের তেল গরম হয়ে গেলে তার মধ্যে সামান্য কালো জিরে ও একটা শুকনো লঙ্কা ফোড়ন দিয়েছিলাম।
ধাপ ৪:
এরপর তার মধ্যে কেটে রাখা আলুগুলো দিয়ে দিয়েছিলাম। তারপর কিছুক্ষণ ভেজে নিয়েছিলাম।
ধাপ ৫:
এরপর তার মধ্যে পরিমাণ মতো লবণ ও সামান্য হলুদ দিয়েছিলাম। যদিও আলু পোস্ততে অনেকেই হলুদ ব্যবহার করেন না। তবে আমি সামান্য হলুদ ব্যবহার করি। তাতে রংটা ভালো লাগে। তবে এই সামান্য হলুদ ব্যবহারে স্বাদের কোন তারতম্য হয় না। তাই আপনারা চাইলে হলুদ ব্যবহার করতেও পারে, আবার নাও হতে পারেন।
ধাপ ৬:
এরপর এরমধ্যে দিয়ে দিয়েছিলাম তৈরি করে রাখা পোস্ত ও লঙ্কার পেস্ট। তারপর ভালোভাবে নাড়িয়ে আলুর সাথে মিশিয়ে নিয়েছিলাম।
ধাপ ৭:
পোস্ত দেওয়ার পর খুব বেশি ভাজা করার প্রয়োজন নেই। তারপর তার মধ্যে পরিমাণ মতো জল দিয়ে দেব যাতে আলুগুলো সেই জলে ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে যায়।
ধাপ ৮:
এরপর আলু গুলোকে সিদ্ধ হওয়ার জন্য সময় দিতে হবে। যেহেতু আলুগুলো ছোটো ছোটো করে কেটেছিলাম তাই সিদ্ধ হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। আমি জলটা একটু বেশি দিয়েছিলাম যাতে একটু ঝোল রাখতে পারি।
ধাপ ৯:
আলুগুলো বেশ অনেকটা সিদ্ধ হয়ে এলে তার মধ্যে দুটো কাঁচা লঙ্কা দিয়ে দিয়েছিলাম। যেহেতু আগেই পেস্ট এ লঙ্কা ব্যবহার করেছি, তাই আর বেশি লঙ্কা দিইনি। আপনারা ঝাল খেতে পছন্দ করলে বেশি লঙ্কা দিতে পারেন।
ধাপ ১০:
আলুগুলো খুব ভালোভাবে সিদ্ধ হয়ে গেলে গ্যাসের ফ্লেমটা একদম লো করে দেবো। তারপর ওপর থেকে কাঁচা সর্ষের তেল দিয়ে দেব। তাতে স্বাদটা বেশ ভালো আসে। আর আমি যেহেতু ভাত দিয়ে খাব বলে বানিয়েছিলাম তাই আমি একটু ঝোল রেখেছিলাম। আপনারা যদি মাখো মাখো খেতে চান তাহলে জলটা পুরোপুরি শুকনো পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।
গরম ভাতের সাথে এই আলু পোস্ত আমার তো দারুণ লেগেছে। আপনারা কারা কারা আলু পোস্ত খেতে ভালোবাসেন কমেন্টে অবশ্যই জানাবেন। আর যারা এখনো বাড়িতে ট্রাই করেননি, তারা একবার হলেও বাড়িতে অবশ্যই বানিয়ে দেখবেন। আশা করছি ভালো লাগবেই।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আলু পোস্ত খেতে ভালোই লাগে। আলু পোস্ত এমন একটা জিনিস যেটা রুটি, লুচি , পরোটা কিংবা ভাত সবকিছু সাথেই খেতে ভীষণ ভালো লাগে। প্রত্যেকটা উপকরণ ছবিসহ প্রত্যেকটি ধাপে ধাপে আলু পোস্ত রেসিপি শেয়ার করেছ যে কেউ সহজে রেসিপিটি তৈরি করতে পারবে। বহুদিন বাড়িতে আলু পোস্ত তৈরি করে খাওয়া হয়নি তোমার রেসিপিটি দেখে আমারও বানাতে ইচ্ছে করছে। সুন্দর রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
This comment has been curated by
Team #5
@damithudaya