দিদি ও জামাইবাবুর সপ্তম বিবাহবার্ষিকী পালন
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি আপনাদের সাথে আজকের কিছু বিশেষ মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য। আজ আমার মাসতুতো দিদির বিবাহ বার্ষিকী উদযাপনের কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চলেছি। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
আমার মা- রা আট ভাইবোন। ছয় ভাই, আর দুই বোন।আগেকার দিনে এরকম অনেকগুলি করে বাচ্চা নেওয়ার প্রবণতা ছিল। এই আট ভাই বোনের মধ্যে আমার মা সকলের ছোট। আর মায়ের আগের জন হল আমার মাসি। তাই মা আর মাসির মধ্যে খুব ভাব। সেই সূত্রে মাসির মেয়েদের সাথেও মামার ছেলে মেয়েদের তুলনাই আমাদের বেশি ভালো সম্পর্ক রয়েছে। তাই আমাদের বাড়ির কোনো অনুষ্ঠানে কাউকে নিমন্ত্রণ না করলেও মাসির বাড়ি এবং মাসির মেয়েদেরকে নিমন্ত্রণ করা হয়। একই রকম ভাবে মাসির বাড়ির কোনো প্রোগ্রামেও আমরা অবশ্যই নিমন্ত্রণ পাই। আজকে যেই দিদির কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করব সে মাসির সেজো মেয়ে। মাসির চার মেয়ের মধ্যে এই দিদির সাথেই আমার বেশি কথপোকথন হয়।
আজ থেকে সাত বছর আগে মানে ২০১৮ সালের, ১৮ই এপ্রিল এই দিদির বিয়ে হয়েছিল। আমার জীবনে যত বিয়ে আমি attend করেছি তার মধ্যে এই দিদির বিয়ে একটি স্মরণীয় বিয়ে। কারণ সেই দিন বীভৎস গরম পড়েছিল। আমার এখনো মনে আছে আমরা সবাই রাত আটটা পর্যন্ত বাড়ির খোলামেলা পোশাক পড়ে বসে ছিলাম। সাজতে একদম ইচ্ছে করছিল না। কারণ গরমে ঘাম হয়েই যাচ্ছিল। অবশেষে যখন বরযাত্রী ঢুকলো, তখন আমরা সবাই সাজতে গিয়েছিলাম। এত গরমে আমরা কেউই ভালোভাবে বিয়ে দেখতে পারিনি। দিদির বিয়ে বলে কথা আর শাড়ি পরবো না তাই আবার হয়। তবে শাড়ি পরার পর ঘটল আর এক বিপত্তি। গরমে শাড়ি পরে প্রাণ যাই যাই অবস্থা। এই দিদির বিয়ের এই অভিজ্ঞতার পরেই পণ করেছিলাম, আর যাই করি না যেন গরমে বিয়ে করবো না। আসলে কেউই সেই ভাবে চায়না গরমে বিয়ে করতে। "তবে জন্ম-মৃত্যু-বিয়ে , তিন বিধাতা নিয়ে"। সবই ভগবানের ইচ্ছে।
কয়েকদিন আগেই দিদি আমাদের বাড়িতে ঘুরতে এসেছিল। ওর ছেলের স্কুলে গরমে ছুটি পড়েছে তাই দুদিন আমাদের বাড়িতে ছিল। যাওয়ার সময় আমাদের ওর বিবাহ বার্ষিকীতে যাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করে গিয়েছিল। তাই আজকে সন্ধ্যেবেলায় আমি, দাদা, বৌদি ও ভাইপো মিলে চলে গিয়েছিলাম ওদের বাড়িতে। তবে বাড়িতে দিদির ঠাকুমা শাশুড়ি আছেন। উনি একটু অসুস্থ। তাই বাড়িতে কোনো আয়োজন করা হয়নি। দিদি আর জামাইবাবু আমাদেরকে একটা রেস্টুরেন্টে নিয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে আরো কয়েকজন ছিল। সেখানেই ওদের ছোটো করে বিবাহ বার্ষিকী পালন করা হয়েছিল। যাওয়ার পথে আমি একটা কেক কিনে নিয়েছিলাম।
সবাই একত্রিত হলে, প্রথমেই ওদের দুজনকে পাশাপাশি দাঁড় করানো হয়। আমরা যারা যারা গিয়েছিলাম, তাদের মধ্যে একজন দুটো রজনীগন্ধার মালা নিয়ে গিয়েছিল। তাই ওদের দুজনকে মালা বদল করতে বলা হলো। ওরা দুজনেই লজ্জা পাচ্ছিল এবং কিছুতেই মালা বদল করতে চাইছিল না। তবে যারা গিয়েছিল সঙ্গে, তারা তো ছাড়তে নারাজ। অবশেষে দুজনের মালা বদল করানো হলো। দিদির ছেলে এবং আমাদের ভাইপো হাঁ করে দেখছিল ব্যাপারটা কি হচ্ছে। একজন আবার বলে বসলো, "শুভ্র.... বাবা, মায়ের বিয়ে হচ্ছে।" এটা শুনে দিদির ছেলের সে কি আনন্দ। কারণ বাবা-মায়ের বিয়ের ভিডিওতে নিজেকে দেখতে না পেরে সে বেচারা অনেক কেঁদেছিল। অবশেষে বাবা-মায়ের বিয়ে দেখার সৌভাগ্য তার হচ্ছে, সেটা ভেবেই বোধহয় খুব খুশি হয়েছিল।
মালা বদলের পর শুরু হল কেক কাটিং পর্ব। আমি যে কেকটা নিয়ে গিয়েছিলাম, সেটা দুজনে একসাথে কাটলো। তারপর একে অপরকে খাইয়ে দিয়েছিল। আর আমি তাদের সেই সুন্দর মুহূর্তগুলো ক্যামেরাবন্দি করছিলাম। অন্যদিকে ছোটো দুই সদস্য কেক খাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল। দিদি জামাইবাবু একে অপরকে কেক খাইয়ে দেওয়ার পর সবার প্রথমে ওই ছোট্ট দুটো সদস্যকেই আগে কেক দেওয়া হয়েছিল। কেক পেয়ে তারা দারুণ খুশি। তারপর একে একে সকলকে কেক দেওয়া হলো।
এতক্ষন বাবা-মায়ের মাঝে না ঢুকলেও, কেক কাটিং এর পর দিদির ছেলে, মাকে ছেড়ে আর একা একা দূরে দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিল না। তাই তাদের মাঝে ঢুকে বাবা ও মাকে অনেক হামি হলো, তারপর জড়িয়ে ধরে অনেক আদর করে দিল। আর সেই সুন্দর মুহূর্তগুলো আমার ক্যামেরায় বন্দি হয়ে গেল। যেটা এখন আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
এরপর এলো পেট পুজোর পালা। সকলে সকলের পছন্দমতো খাবার অর্ডার করে দিল। আমি নিয়েছিলাম, মিক্সড ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন ও একটা কোলড্রিংস। আর সেই সাথে সকলের জন্য একটা করে আইসক্রিম ছিল। খাবারের ছবি তোলার কথা সত্যিই মনে ছিল না। কারণ খাবারগুলো খুবই টেস্টি ছিল।
এইভাবেই আমার আজকের সন্ধ্যাবেলাটা কেটেছিল। আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি, আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
প্রথমেই তোমার দিদি জামাই বাবু কে জানাই বিবাহ বার্ষিকীর অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। রেস্টুরেন্টে গিয়ে দিদি জামাইবাবুর বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছো, সকলে মিলে জমিয়ে খাওয়া দাওয়া করেছো। একটা সুন্দর সময় কাটিয়েছিলে। সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করে নেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।