বৃষ্টিমুখর দিন, সাথে খাওয়া-দাওয়া
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে চলে এসেছি, একটি বর্ষণমুখর দিনের অভিজ্ঞতা আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে। আজকে সারা দিনে আমি কি কি করছি এবং সেই সাথে আমার পড়ানোর বাড়ির guardian রা প্রতিদিন আমাকে জোর করে কি কি খেতে দেয়, তার একটা ছোট্ট ঝলক আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আজকে সকাল থেকেই আকাশের অবস্থা বিশেষ ভালো ছিল না। সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখলাম আকাশে মেঘ জমেছে। বুঝলাম বৃষ্টি আসতে পারে। তবে বৃষ্টির জন্য কাজ ফেলে বাড়িতে তো থাকা যাবে না। তাই সময় মত বেরিয়ে পড়লাম পড়ানোর বাড়ির উদ্দেশ্যে। যেখানে গিয়ে পড়ানো শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে এলো গরম গরম চা। বাড়িতে আমার চা বানিয়ে খাওয়া প্রায়ই হয় না। এই পড়াতে এসে যা একটু চা খাই আর কি।
চা খাওয়ার পর পড়ানো শেষ করি। তারপর ওই বাড়ির কাকিমা আমাকে সকালের ব্রেকফাস্ট না করিয়ে কিছুতেই ছাড়ে না। আমি বহুবার নানারকম অজুহাত দিয়ে খাব না বললেও উনি খুব যত্ন করে আমাকে খাবার সাজিয়ে দেন। আমি ওদের বাড়ি গত ছয় বছর ধরে পড়াচ্ছি। কোনদিনও এই রুটিনের বাইরে কিছু হয়নি। ঠিক তেমনি আজকেও আমাকে রুটি ও তরকারি খেতে দিয়েছিল। তবে সে ছবি আর তোলা হয়নি। তারপর সেখান থেকে চলে গিয়েছিলাম আরো একটি বাড়িতে পড়াতে। সেই বাড়ির বৌদিও মাঝে মাঝে আমাকে ও তার মেয়েকে পড়ানোর মাঝে টিফিন দিয়ে যায়। আজকেও ঠিক তেমনি আমাদের দুজনের জন্য চাউমিন নিয়ে হাজির হয়েছিল। যত বলি, " আমার একদম খিদে নেই বৌদি, আমাকে আজকে কিছু খেতে দিও না।" উনি তো শুনতে নারাজ। তাই বেশ অনেকক্ষণ পরেই খাবারটা আমি খেয়েছিলাম।
একটা পড়ানো ডিউ ছিল যেটা আমি আজকে পড়িয়ে দিয়েছিলাম। তাই আজকে বেশ চাপের মধ্যে দিয়েই দিনটা কেটেছে। সেই বাড়িতে পড়ানোর পর আজকে আরো একটা পড়ানো ছিল। যথারীতি সময়মতো আমি সেই বাড়িতে পৌঁছে যাই। তারপর পড়ানো শুরু করি। পড়ানো শেষ হওয়ার আগে প্রতিদিনের ন্যায় আজও সেই বাড়ির বৌদি আমার জন্য ফল নিয়ে হাজির হয়। এই বৌদি আমাকে অনেক ছোটবেলা থেকেই চেনে। আসলে ওনার ননদ আর আমি একই স্কুলে পড়াশোনা করেছি। তাই জীবন সংগ্রামের সমস্ত গল্পই উনি জানেন। তাই পর পর এতগুলো পড়ানো থাকে বলে খালি মুখে কোনোদিনও আমাকে বেরোতে দেন না।
এরপর পড়িয়ে রাস্তায় বেরিয়ে দেখি মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। আজকে সাইকেলের অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না তাই আমি আজকে টোটো করেই পড়াতে গিয়েছিলাম। তবে বৃষ্টিতে রাস্তায় আমি একটাও টোটো পাচ্ছিলাম না বাড়ি ফেরার জন্য। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর তারপর একটা টোটো পেয়েছিলাম। ছাতা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অর্ধেকটা ভিজেই গিয়েছিলাম। অবশেষে দুপুর ১.৩০ টার সময় বাড়ি ফিরলাম।
বাড়িতে এসে স্নান সেরে দুপুরের খাবার খেতে গিয়ে তো মনটা খুব খুশি হয়ে গেল। কারণ আজকে বাড়িতে রান্না হয়েছিল বর্ষাকালের সবচেয়ে পছন্দের খাবার, খিচুড়ি। বৌদি খিচুড়ি টা বেশ ভালোই রান্না করে। দুপুরে মেনুতে যদি পছন্দের খাবার থাকে তাহলে কার না ভালো লাগে তাই না। খিচুড়ির সাথে ছিল পুঁই ডাঁটা চচ্চড়ি। দুপুরে খাবারটা একদম মনের মত ছিল। তার সাথে কিন্তু পাপড় ভাজাটাও ছিল। যেটা ছবি তোলা হয়নি।
এরপর বিকেল বেলায় আবার পড়াতে চলে যায়। পড়াতে পড়াতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে যায়। তারপর দেখি ওই বাড়ির দিদি মুড়ি মাখিয়ে নিয়ে চলে এসেছে। যদিও পড়াতে গিয়ে আমি মুড়িটা খেতে পছন্দ করি না । তার একমাত্র কারণ হলো মুড়ি খেতে অনেক সময় লাগে। যদিও বাড়িতে কিন্তু আমি মুড়ি খেতে খুব ভালোবাসি। যাই হোক, দিদি মুড়ি মাখিয়ে নিয়ে চলে এসেছিল যেহেতু তাই আর ফিরিয়ে দিইনি।
পড়িয়ে বাড়ি ফেরার পথে আবার হবু বরের সাথে একবার দেখা করে নিলাম। তারপর দুজন মিলে চলে গেলাম এক ধরনের কুলফি খেতে। এই কুলফি গুলো খেতে অনেক টেস্টি হয় যদিও পরিমাণটা খুবই কম থাকে। এটাকে বলা হয় রোলার কুলফি। অনেক রকম জিনিস দিয়ে তৈরি হয় তাই টেস্টটা খুব ভালো লাগে। এক প্লেটের দাম নিয়েছিল ভারতীয় মূল্যে ৫০ টাকা। পরিমাণ অনুযায়ী দামটা অনেকটাই বেশি। প্লেটে দেখতে যতটা মনে হয় আসলে ততটাও থাকে না।
এইভাবেই আমি আমার আজকের এই বৃষ্টিমুখর দিনটি কাটিয়েছিলাম। আসলে এই যে সমস্ত পড়ানোর বাড়ির গল্প আজ আপনাদের বললাম তাদের কাছে আমি সারা জীবন কৃতজ্ঞ থাকব। আসলে সত্যি কথা বলতে গেলে পর পর পড়ানো থাকলে বড্ড খিদে পেয়ে যাই। তবে প্রতিদিন বাইরের খাবার খাওয়াও তো স্বাস্থ্যকর নয়। আবার কোথাও দাঁড়িয়ে খাবার খাওয়ার মতো সময়ও অনেক সময় হাতে থাকে না। এই সমস্ত পরিস্থিতি বুঝে যারা আমাকে খাবার খাওয়ায় তাদের কাছে কৃতজ্ঞ না থেকে পারা যায়! আমিও চাইবো ভগবান আমাকে এতটুকু সামর্থ্য যেন আজীবন দেয় যাতে আমিও ভবিষ্যতে এইরকম সাহায্য আমার চারপাশের মানুষগুলোকে করতে পারি।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
পিতা-মাতার পরের স্থানটি হল একজন শিক্ষকের।তিনি সঠিক মানুষ গড়ার কারিগর।এই শিক্ষকতার পেশা হল সন্মান ও শ্রদ্ধার পেশ। একজন ভালো গৃহ শিক্ষকের সন্ধানে থাকেন প্রতিটি বাবা-মা । তাদের আদরের সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়া তার উপর নির্ভরশীল।
গৃহ শিক্ষককে প্রতিদিন নতুন নতুন নাস্তা দিয়ে থাকেন । আপনি এক শিক্ষার্থীকে ৬ বছর ধরে পড়াচ্ছেন। সেই জন্য কাকীমা আপনাকে সন্তানের চোখে দেখেন। চা বিস্কুট খাবার পরে আবার নাস্তা দিলেন। শিক্ষক ও অভিভাবকদের সাথে একটা ভালো সম্পর্ক থাকা দরকার।
বৃষ্টির দিনে একটাই প্রিয় খাবার হল খিচুড়ি। খিচুড়ির সাথে আচার হলে আর কিছু চাই না আমরা । আপনার বৌদির রান্না খিচুড়ি দেখে আমার খেতে ইচ্ছে করছে। বৃষ্টির দিনের প্রিয় খাবার আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
0.00 SBD,
2.91 STEEM,
2.91 SP
Congratulations!! Your post has been upvoted through steemcurator04. We encourage you to publish creative and quality content.
Curated By: @miftahulrizky
0.00 SBD,
0.01 STEEM,
0.01 SP
Thank you so much.
Thank you,Sir.
আমার পোস্টটি পড়ে এত সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমাদের কৃষ্ণনগরে বৃষ্টির দিনে কোন টোটো কোথাও যেতে চাই না। তুমি বৃষ্টির জন্য পড়াতে গিয়ে আটকে পড়েছিলে। বৃষ্টির দিনে যে কোন মুখোশ খাবার খেতে সত্যি খুব ভালো লাগে। আমার তো বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেতে ভীষণ ভালো লাগে। বৃষ্টির দিনে সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য তোমাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।