স্বরচিত কবিতা (কন্যা বাঁচাও)
নমস্কার বন্ধুরা। আপনারা সকলে কেমন আছেন? আজকে আবারো চলে এসেছি আপনাদের সাথে নতুন কিছু বিষয় শেয়ার করে নেয়ার জন্য। আশা করছি আপনাদের সকলের ভালো লাগবে।
আজকে আমি আপনাদের সাথে আমার লেখা একটি কবিতা শেয়ার করব। কবিতাটি শেয়ার করার আগেই বলে রাখি আমি কিন্তু সেই ভাবে লেখালিখি করি না। তাছাড়া আমার সেরকম ক্রিয়েটিভ ভাবনা-চিন্তাও খুব বেশি আসে না যা দিয়ে আমি খুব ভালো কিছু লিখতে পারি। তবে যেটা আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেটা আমি সাম্প্রতিক একটি বিষয় নিয়ে লিখেছিলাম।আপনাদের সাথে এই কবিতা সংক্রান্ত কিছু বিষয় আগে শেয়ার করি। তাহলে কবিতাটির ভাব বস্তু বুঝতে আপনাদের সুবিধা হবে।
আমরা যখন ক্লাস টুয়েলভে পড়ি তখন একদিন আমাদের বাংলা ক্লাসে হঠাৎ করে ম্যাম বলে উঠলেন, "তোমরা আজকে সবাই একটা করে কবিতা লিখবে। বাংলা বিষয় নিয়ে পড়ছো আর তোমাদের মধ্যে কারোর কোন চিন্তা শীলতা থাকবে না তা আবার হয় নাকি! ভালো হোক কিংবা খারাপ তোমাদের সকলকে কিছু না কিছু লিখতেই হবে।" বিষয় হিসেবে দিদি আমাদের বললেন, "কোন সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে বা সাম্প্রতিক কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে লিখতে পারো। বা কারো যদি মনে হয় অন্য কোন বিষয় নিয়ে লিখবে তাহলেও লিখতে পারো, তবে শর্ত হল সকলকেই লিখতে হবে।"
আমরা পড়লাম মহাবিপাকে। কি লিখবো কি লিখব ভাবতে ভাবতেই কিছুক্ষণ সময় কেটে গেল। অবশেষে মাথায় এলো সমাজে কন্যা সন্তানদের অবস্থান নিয়ে কিছু লেখা যাক। এখনো মানুষের ধ্যান ধারণা যে পুরোপুরি পরিবর্তন হয়েছে তা কিন্তু নয়। এখনো অনেক পরিবারে কন্যা সন্তান মানেই তাদের কাছে বোঝার সমান। তারা মনে করে কন্যা সন্তান কখনই পরিবারের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নিতে পারেনা। তাই তারা মন থেকে কন্যা সন্তান চান না। তাই এই কন্যা সন্তানদের কথা ভেবেই আমি আমার কবিতাটি লিখেছিলাম।
বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে দাঁড়িয়ে আমরা বলতেই পারি সভ্যতা যত এগিয়েছে প্রকৃতি তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষ নিজেদের সখ পূরণ করতে বা চাহিদা পূরণ করতে বারংবার প্রকৃতির ওপর আঘাত হেনেছে। প্রকৃতিকে তছনছ করে দিয়েছে। যেখানে আমরা বারংবার বলি প্রকৃতি আমাদের মায়ের মতন। তাই কোনো প্রয়োজনে গাছপালা কাটতে হলে তার পরিবর্তে অবশ্যই আমাদের গাছ লাগাতে হবে। আর এইসব গাছপালাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে আমাদের বাস্তুতন্ত্র। জঙ্গল কেটে সাফ করে দেওয়ার ফলে বন্য জীবজন্তুরা তাদের বাসস্থান হারিয়ে ফেলছে। বিশেষ করে আমাদের রাজ্যের প্রধান পশু রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার, নানা কারণে যার সংখ্যা ক্রমশ কমতে শুরু করেছে।তাই সরকারি তরফ থেকে অনেক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সকলের মুখে মুখেই ছড়িয়ে গেছে---"বাঘ বাঁচাও, বাঘ বাঁচাও..."। যারা এই ধ্বনি তোলে তারা অবশ্যই সমাজের কথা ভেবেই বলেন, তবে এদের একাংশ রয়েছে যারা রক্তে মাংসে গড়া মহিলাদের সম্মান করতে জানে না অথচ পশুর প্রতি দয়া যেন তাদের উথলে পড়ে। তাই এই বিষয়কে কেন্দ্র করেই আমি কবিতাটি লিখেছিলাম।
Link
চলুন আপনাদের সাথে সেই কবিতাটা শেয়ার করি----
|
---|
"বাঘ বাঁচাও..... বাঘ বাঁচাও...."
রব উঠেছে দেশে,
"কন্যা বাঁচাও..." রবটি কবে
মানুষ বলবে ভালোবেসে?
বাঘ যেমন তোমার কাছে
বড়ই মূল্যবান,
সমাজের উন্নয়নে কন্যারও আছে
মহৎ অবদান।
কন্যা কেন অবহেলায়
মরছে পথের ধারে?
নারীর প্রতি নির্যাতন
কেন হচ্ছে বারে বারে?
বাঘের প্রতি দয়া তোমার
উঠলে যেন পড়ে।
কন্যার বেলায় নেইকো দয়া,
সে বাঁচে কিংবা মরে!
মানুষের মনুষ্যত্ব আজ মরেছে
যান্ত্রিক সমাজে,
মানুষ আজ সেজেছে শুধুই
আত্ম অহংকারে।
বাঘের মত কন্যা যেদিন
ফুরোবে এ সংসারে,
সেদিন তোমরা কন্যার মর্ম
বুঝবে হারে হারে।
সেদিন আর পাবে না উপায়
বারং বারও খুঁজে,
সেদিন যাবে সমাজের চোখ
চিরকালের মতোই বুজে।
তাইতো বলি, দাঁত থাকতে দাঁতের মর্ম
এবার বুঝে নাও,
কন্যা বাঁচাও রবটি তোমরা
সবাই মিলে গাও।
এখন যে কবিতাটি আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম, সেটা কিন্তু ক্লাসে বসেই সম্পূর্ণটা লিখতে আমি পারিনি। পরে বাড়িতে এসে বিষয়টা নিয়ে ভেবে লিখেছিলাম। কবিতাটা যেমনই হোক না কেন নিজে থেকে একটা কবিতা লিখতে পেরেছি, তাতেই আমি খুব খুশি হয়েছিলাম । আপনারা কবিতাটা পড়ে অবশ্যই জানাবেন আপনাদের কেমন লাগলো।
আজ তাহলে এখানেই শেষ করছি। আগামীকাল আবার অন্য কোনো লেখা নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হব। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।
আসলে বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে যতটুকু দেখেছি একটা মেয়ে মরে যাচ্ছে কিংবা ভালো আছে এই জিনিসটা তার পরিবার কখনো দেখেনা তার পরিবার মনে করে বিয়ে দিয়ে দিলেই তার দায়িত্ব শেষ কিন্তু একটা মেয়ে নির্যাতিত হয়ে প্রতিনিয়ত একটু একটু করে মারা যাচ্ছে এর প্রতি কারো লক্ষ নেই চমৎকার কবিতা আপনি আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন কবিতাটা সত্যিই অসাধারণ হয়েছে ধন্যবাদ। চমৎকার কবিতা আমাদের সাথে তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন।