জিভে জল আসা মৌসুমী ফল মাখা
![]() |
---|
Made by Canva |
Hello,
Everyone,
বৃষ্টি ভেজা এই দিনগুলো আশা করি সকলেই উপভোগ করছেন ।এই দিনে গ্রামের বাড়িতে টিনের চালে বৃষ্টি পড়ার সেই রিমঝিম শব্দ শুনতে বেশ লাগে। আমরা ছোট বেলা বৃষ্টিতে অনেক ভিজতে পারতাম, কোন জ্বর-সর্দি হতো না কিন্তু এখনকার বাচ্চারা, বিশেষ করে শহরের বাচ্চারা একটু বৃষ্টির পানিতে ভিজলে তাদের জ্বর-সর্দি, কাশি হয়ে যায়।
![]() |
---|
বাচ্চাদের কথা কি আর বলি! এখন আমি বৃষ্টিতে ভিজলে জ্বর হয় ।গত শুক্রবার বৃষ্টিতে একটু ভেজা হয়েছিল ,এখন মা-মেয়ে দুজনই অসুস্থ হয়ে পড়েছি। মেয়ের ১০২ড্রিগী জ্বর। দিন দিন যেন আমরা পোল্ট্রি মুরগির মত হয়ে যাচ্ছি । আমাদের থেকে গ্রামের মানুষ অনেক স্ট্রং। রোদ বৃষ্টিতে ভিজলেও তাদের কিছু হয় না ,তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের থেকে বেশি ।
ঝড়ের দিনে আম বাগানে আম পড়ে থাকে ,সেগুলো তুলতে অনেক আনন্দ লাগে। সত্যি সেই পুরনো দিনগুলো অনেক মনে পড়ে। বৃষ্টির দিনে আমরা মামা বাড়িতে অনেক আনন্দ করতে পেরেছি। মামা বাড়িতে বিভিন্ন ফলের গাছ ছিল, সেখান থেকে আমরা ফল কুড়িয়ে নিয়ে আসতাম । মামী সেগুলো দিয়ে আমাদের বিভিন্ন রকমের আচার ,ভর্তা বানিয়ে দিত। সকলে মিলে খেতে সে অন্যরকম আনন্দ ছিল। যা আমাদের সন্তানরা পাচ্ছে না ।
তখন কার সময়ে অনেক দেশীয় ফল ছিল এখন তো সেই ফলগুলো দেখাই যাচ্ছে না । টক -মিষ্টি নানা ধরনের সেই ফলগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী ছিল। তাতে কোন ফরমালিন দেয়া ছিল না, কোন মেডিসিন দেয়া ছিল না। এমনকি সেই গাছে কোন সার ব্যবহার করা হতো না । এই মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের ফল পাওয়া যায়। তাল, আম ,কাঁঠাল ,লিচু ,কাউ ফল ,আতা ফল, স্বরূপ ফল, ডেউয়া আরও নাম না জানা কত ফল ।এখন সেই ফলগুলো চোখে ততটা পড়ছে না ।
তারপরও আর্মি বাবু চেষ্টা করে যখন যে দেশীয় ফল পাওয়া যায় সেটা বাসায় নিয়ে আসে। যেহেতু জ্বর জ্বর শরীরে টক ফল খেলে মুখে অনেকটা রুচি আসে তাই আমিও চেষ্টা করলাম এগুলো সুন্দরভাবে মেয়েকে মেখে দিতে। আজ অনেকদিন পরে তোমাদের সাথে একটি রেসিপি শেয়ার করছি।এটি যেমন মুখে স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করবে তেমনি এর অনেক পুষ্টিগুন রয়েছে। তাহলে চলো আর কথা না বাড়িয়ে আমরা মূল রেসিপিতে চলে আসি।
![]() |
---|
প্রয়োজনীয় উপকরণঃ-
ক্রমিক নং | উপকরণ | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | আনারস | একটি |
২ | কাউ ফল | তিনটি |
৩ | লটকন | এক থোকা / ১০টি |
৪ | আমলকি | দুইটি |
৫ | কাসুন্দি | ২ চামচ |
৬ | লবণ | পরিমানমতো |
৭ | শুকনো মরিচ | দুইটা |
৮ | চিনি | স্বাধমতো |
৯ | সরিষা তেল | ১ চা চামচ |
১০ | ধনিয়া পাতা | সামান্য |
![]() | ![]() |
---|
প্রস্তুত প্রণালী ঃ-
প্রথম ধাপ
![]() |
---|
প্রথমে আমি লটকন ফলগুলো খোসা ছাড়িয়ে ভিতরে বিচিগুলো নিলাম। এই ফলগুলো খুলনা অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায় এবং পাহাড়ি অঞ্চলেও এগুলো পাওয়া যায়। কিছু কিছু লটকন খুব মিষ্টি হয়। আবার কিছু কিছু লটকন গুলো একটু টকভাব থাকে । এগুলো টক ছিল।
দ্বিতীয় ধাপ
![]() |
---|
কাউফল গুলো মাঝ বারবার গোল করে কেটে নিলাম । খোসাটা বাটির মতো বেরিয়ে আসলো , ভেতর থেকে বিচিগুলো নিতে হয়। এই ফলগুলো একটু টক থাকে। এটা অনেক রোগের উপশমকারী ফল। খুব সুন্দর বলের মত বিচি গুলো গোল করে সাজানো থাকে।
তৃতীয় ধাপ
![]() | ![]() |
---|
আমলকি দুটি ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিলাম ।আমলকি আমাদের রুচি বাড়াতে অনেক সাহায্য করে ।যেহেতু দুজনেই আমরা অসুস্থ, আমাদের খেতে একদম ইচ্ছে করছে না । আমলকি মুখের অরুচি ভাব দূর করে খাবারে রুচি ফিরিয়ে আনে।
চতুর্থ ধাপ
![]() | ![]() |
---|
সর্বশেষে আনারস গুলো কেটে নিলাম । অনেকে বলে, যারা কৃপণ মানুষ তারা আনারস কাটতে পারে না। কারণ আনারসের গায়ে সে চোখগুলো অনেকে ফেলতে পারেনা । আনারসের খোসা মোটা করে কাটতে হয়, তা না হলে চোখ থেকে যায় ,এগুলো খেতে গেলে অনেক সময় জিভ কেটে যায় ।যাইহোক আমি সুন্দর করে ছোট ছোট টুকরো করে আনারস কেটে নিলাম।
পঞ্চম ধাপ
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
সমস্ত ফলগুলো একটি বাটিতে নিলাম । মাখাতে শুকনো মরিচ হবে না তা হতে পারে না। অনেকে কাঁচামরিচ ব্যবহার করে কিন্তু আমি শুকনো মরচি মাখায় বেশি পছন্দ করি। টক জাতীয় খাবারে শুকনো মরিচ বেশি ভালো লাগে। পরিমাণ মতো লবণ নিলাম ,কাসুন্দি দিলাম ,সরিষা তেল, চিনি, সর্বশেষ ধনিয়া পাতা দিয়ে ভালো করে মেখে নিলাম। সামান্য একটু লেবুর রস দিয়ে দিলাম ।
যেহেতু লেবু পাতা নেই, যদি আপনাদের লেবু পাতা থাকে ,সে ক্ষেত্রে সুন্দর দুটি ফ্রেশ লেবু পাতা ধুয়ে সবার শেষে এই মাখার সাথে দিবেন । এবার ভালোবাসার হাতের ছোঁয়া দিয়ে মেখে নেবেন ।দেখবেন বাচ্চারা খুব সহজে খেয়ে নেবে ,বড়রাও খেয়ে নেবে । খাবারের রুচিও ফিরে আসবে।তৈরি হয়ে গেল খুব অল্প উপকরণ দিয়ে, খুব মজাদার ”জিভে জল আসা মৌসুমী ফল মাখা”।
![]() |
---|
এভাবে একদিন মেখে দেখবেন আপনিও এই মাথার প্রেমে পড়ে যাবেন ।আপনারা কে কে খেতে পছন্দ করেন তা অবশ্যই জানাতে পারেন ।আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি ,সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন ।আমার জন্য দোয়া ও আশীর্বাদ করবেন আমি দ্রুত সুস্থ হতে পারি ।
Thank you ma'am,@shiftitamanna.