প্রিয়ন্তীর বিয়ের ফটোগ্রাফি
![]() |
---|
Hello,
Everyone,
আমরা সকলেই জানি ,দুটি জীবনের একত্রে নতুন পথচলার বৈধতা পায় এই “শুভ বিবাহ” অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে । হিন্দু ধর্ম রীতিতে বিয়ের অনেক নিয়ম কানুন পালন করে জীবন শুরু করতে হয়। আধুনিকতার ছোঁয়ার সাথে সাথে বিবাহ অনুষ্ঠানেও অনেক ভিন্নতা এসেছে ।
বিয়ে বাড়ি মানে সাজ হবে না তা তো আর হয় না। যেমন বাড়িটাকে সাজানো হয় তেমনি কনেকে সাজানো হয়, আত্মীয়বজন সেজে ওঠে , বরমশাই সাজেন। আগের দিনে শুধু মেয়েরাই পার্লারে যেত কিন্তু বর্তমান সময় মানে এই আধুনিক যুগে, ছেলেদেরও পার্লার আছে। তারাও পার্লার থেকে সেজে আসে।
![]() |
---|
আর এই আনন্দের মুহূর্তটুকু ক্যামেরাবন্দি হয়ে থাকবে , যা তাদের সারা জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকবে । যখন তারা বৃদ্ধ হয়ে যাবে তখন এই ছবিগুলো ও ভিডিও দেখিয়ে নাতি-নাতনিদের সাথে তাদের স্মৃতিগুলো ভাগ করে নিতে পারবে । বিয়ে বাড়িতে পুরোহিত ঠাকুরদা খুব সুন্দর ভাবে তার মন্ত্র পাঠ করতে থাকেন যা ক্যামেরায় বন্দি হয়ে থাকে ।
![]() | ![]() |
---|
বরকে বরণ করার জন্য আমরা মালা, মিষ্টি , জল, ফুল, ফিতা ও কাঁচি নিয়ে অপেক্ষা করছি ।কনের বোন এবং বৌদিরা মিলে বরকে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে আসল। এবার শুরু হয়ে গেল গেটে সেই দুই পক্ষের দর কষাকষি। একটা বিষয় খুব ভালো লাগলো ওরা দুই পক্ষই বিভিন্ন রকম সুন্দর সুন্দর কথা দিয়ে ব্যানার তৈরি করেছে।
কনে পক্ষ স্লোগান দিতে ছিলো ,”এক বড় না দুই বড়, দাদাবাবুর মন বড় ” । বর পক্ষ বলতেছিল “আমি কে তুমি কে, জামাই পক্ষ জামাই-পক্ষ”, ” মোর বউমুই নিমু গেটে কিনা টাকা দিমু”। মেয়ে পক্ষ গেটে 200k টাকা দাবি করেছিল, তখন তারা আরেকটা স্লোগান দেখিয়ে দিল ”বউ নিতে আসছি টাকা দিতে নয়”। এরকম মিষ্টি মিষ্টি অনেক কথাই হচ্ছিল।
![]() | ![]() |
---|
বরপক্ষ এবং কনে পক্ষের সেই মিষ্টি খুনসুটি অবশেষে বন্ধুত্বে পরিণত হলো ।বরপক্ষ ৫০০০ টাকা দিল। কনেপক্ষ পাঁচ হাজার টাকা পেয়ে অনেক খুশি হল ।তারা বরকে মালা পরালো ,মিষ্টি খাওয়ালো এবং সর্বশেষে ফিতা কেটে বরকে বাড়িতে নিয়ে আসলো। ফিতা কাটার সঙ্গে সঙ্গেই আতশবাজি ফাটানো শুরু হয়ে গেছে ।অনেক সুন্দর সুন্দর বাজি পাঠাচ্ছিল ,।
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
বর যাত্রীদের নাস্তা করানোর জন্য টেবিলে বসানো হলো কিন্তু কিছু বরপক্ষের লোকজন সরাসরি কনেকে দেখার জন্য কনের কাছে চলে আসে। কেউ কাকি ডাকছে ,কেউ মামী ডাকছে, কে বৌদি ডাকছে। এখনো বিয়ে হয়নি কিন্তু মনে হচ্ছে তারা তাদের নতুন বৌকে এখনই নিয়ে যাবে । কনের সাথে ছবি তোলা নিয়ে অনেক ব্যস্ত সবাই ।বরপক্ষের ছেলেদের জন্য কনে পক্ষের মেয়েরা সুযোগ পাচ্ছিল না কনের কাছে বসার।
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
বরপক্ষের কিছু অভিভাবক আসলো, কনেকে আশীর্বাদ করার জন্য ।আমাদের অঞ্চলে “সোনা কাপড় দেয়া” বলে । এখন যেহেতু বাংলাদেশের পরিস্থিতি ততটা ভালো না ।তারা রাতে সীতাকুণ্ড থেকে ঢাকায় এসেছিল তাই অলংকার বেশি কিছু নিয়ে আসেনি। শুধু স্বর্নের টিকলি নিয়ে এসেছিল ।অবশ্য তারা ওকে বাড়িতে নিয়ে বালা, নেকলেস ,কানের দুল ,আংটি ও নুপুর দিয়েছিল কিন্তু এগুলো নিরাপত্তার জন্য আনা হয়নি ।তবে একটা বিষয় আমি নোটিশ করলাম, ”চন্দন প্রিয়ন্তীর সমস্ত কথা শুনে এবং ওকে খুবই ভালোবাসে ।তারা প্রথমেই যে এতটা আপন হয়ে যাবে কখনো ভাবতে পারিনি।
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
শুনেছি অনেক আগ থেকেই তারা পরিচিত ছিল।Facebook মাধ্যমে তাদের প্রথম পরিচয় ,।তাদের ৩ বছরের ভালোবাসা আজ পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে। ছেলের বাবা আশীর্বাদ রইল, তার মামা আশীর্বাদ করল, তার বড় ভাই আশীর্বাদ করল। দিকে বরকে আসরে বসানো হয়েছে, আসরের নিয়ম কানুন গুলো করে বরকে ছাদনাতলা নেওয়া হলো । পান পাতা দিয়ে মুখ আড়াল করে বসে রইল প্রিয়ন্তী, দাদাবাবু , মামা ও ভাইয়েরা একটি কাঠের পীরীর উপরে বসিয়ে ছাদনাতলা নিয়ে গেল ।
সেখানে বরেকে কনে সাতবার প্রদক্ষিণ করলো। তেল ,জল,ফুল দিয়ে বরকে পুজো করল ।আমরা মেয়েরা স্বামীকে দেবতা হিসেবে মানি কিন্তু স্বামীরা কি আমাদের দেবী হিসেবে মানে ? না তাদের মাথার কাটা হিসেবে দেখে । যাই হোক ,ছাদনাতলার আনুষ্ঠানিকতার শেষ হওয়ার পরে দুজনকে বিয়ের আসরে আনা হলো । এক এক করে বিয়ের সমস্ত আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হলো । তাদের দুজনার দুহাত একত্র করে ঘটের উপর রেখে দশ গিট বাধা হলো।
এরপরে যজ্ঞ করা হলো এবং সিঁদুর দান হলো ,দুজনে সকলের আশীর্বাদ নিয়ে নতুন জীবন শুরু করতে যাচ্ছে। এই সিঁদুর দানের মধ্য দিয়ে তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেল। বিয়ে শেষ হতে হতে রাত ১টা বেজে গেল ।বর ও কনেকে বরণ করে ঘরে তোলা হলো ।এভাবে শুভ বিবাহ সম্পন্ন হলো, যার কিছু কিছু মুহূর্তগুলো আমার স্মার্ট ফোনে ধরে রাখলাম এবং আজ আপনাদের সাথে তা শেয়ার করলাম। তো এখানেই বিদায় নিলাম, সবাই ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন ।
Wonderful Moment. Your looking so Cute.👌👌
Thank you.
বিয়ে বাড়ি মানে অনেক মজা আনন্দ করে দিনগুলো কেটে যায়। আর সাজুগুজু কোন কথাই থাকে না। আপনি বিয়ের সমস্ত কিছু পোষ্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। বর বরণ থেকে সমস্তটাই আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখতে পেলাম। হিন্দু ধর্মে বিয়ের প্রচুর নিয়ম কানুন রয়েছে। সেগুলো পালন করতে করতেই অর্ধেক সময় পেরিয়ে যায়। এই সমস্ত ছবিগুলো তোলা হয় স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে বলে। বিয়ের সুন্দর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।