Better Life with Steem|| The Diary Game|| 06- 10-2025||
![]() |
---|
Hello,
Everyone
সনাতনী ধর্ম রীতিতে সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব হলো “শারদীয়া দুর্গোৎসব”। এই উৎসবের জন্য আমরা সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি। তবে, আমার মনে হয় ”দুর্গা উৎসব” সবথেকে বড় উৎসব হলেও আনন্দ বেশি হয় কোজাগরী লক্ষ্মী পূজাতে ।
অন্যান্য পূজা পার্বণ থেকে লক্ষ্মী পূজা সম্পূর্ণ আলাদা । আমিও এই দিনটির জন্য অনেক আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করে থাকি। আপনারা সকলেই জানেন,আমি পূজা/ প্রার্থনা করতে অনেক ভালোবাসি । যদি নিজের গৃহে পূজা দিতে পারি, তাহলে তো আমার আরো ভালো লাগে ।
![]() | ![]() |
---|
সকলকে জানাচ্ছি শারদীয় দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা। বিভিন্ন ব্যাস্ততার কারণে আমি নিয়মিত কাজ করতে পারছি না, সেজন্য আমার অনেক খারাপ লাগছে । কিছুই করার নেই ,দায়িত্ব-কর্তব্য গুলো সবার আগে। আমরা মেয়েরা সাধারণত সকলকে নিয়ে সুখে থাকার চেষ্টা করি।
পরিবারকে বেশি সময় দিতে গিয়ে আমার নিজের সময়টুকু হারিয়ে ফেলেছি । অনেকদিন পরে আমি আবার তোমাদের সাথে আমার একটি পোষ্ট শেয়ার করতে চলে আসলাম ।আজকে ছিল আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের শেষে পূর্ণিমা তিথি, কোজাগরী লক্ষ্মী মায়ের আরাধনা করার উত্তম দিন। আমিও ছোট্ট পরিসরে আমার এই গৃহে লক্ষ্মী পূজার আয়োজন করেছিলাম।
আমার পিতলের লক্ষ্মী ঠাকুর আছে তাই আলাদা লক্ষ্মী ঠাকুর কিনতে হচ্ছে না । আমার শ্বশুরবাড়িতে লক্ষী ঠাকুর ও কলা বউ দিয়ে পুজা করা হয় । ঢাকা শহরে সব জায়গাতে পুজার সরঞ্জামাদি পাওয়া যায় না । পূজার প্রয়োজনীয় সামগ্রী গুলো কিনতে আমাকে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যেতে হয় ।ক্যান্টনমেন্ট থেকে মন্দির অনেক দূরে তাই আমি পিতলের ঠাকুর কিনে নিয়েছি ।
![]() | ![]() |
---|
আমি যখন বরিশাল জেলায় ছিলাম কিংবা খুলনা জেলাতে ছিলাম তখন আমি ঠাকুর দিয়ে পূজো করিয়েছিলাম ।ঢাকা শহরে ঠাকুর পাওয়া সত্যিই অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে । আজ প্রতি ঘরে ঘরে লক্ষ্মী পূজার আয়োজন হচ্ছে , ।অন্যদিকে, এখন অনেকেই পুরোহিত এর কাজটা করতে চাচ্ছেনা তাই পুরোহিত পেতে সমস্যা হচ্ছে । বেশি সমস্যা হয় ক্যান্টনমেন্ট এলাকায়।
লক্ষ্মীপূজায় আর্মি বাবুর কোন সরকারি ছুটি নেই তা্ই আজকে বাসায় থাকতে পারবেনা। গতকাল রাতে আর্মিবাবু পুজার সামগ্রী কিনে নিয়ে এসেছিল। বহু কষ্ট করে একজন ঠাকুরকে পেয়েছে তাই শুনে আমি চিন্তা মুক্ত হলাম । আমার বিল্ডিং এর আরো তিনটি বৌদি আছেন , তারাও ঠাকুর দিয়ে পূজা করাবেন তাই আমাকে বলেছিল, ঠাকুর দাদার সাথে আমি যেন সেভাবে কথা বলি।
![]() | ![]() | ![]() |
---|
এখানকার ঠাকুর দাদাদের প্রণামী অনেক বেশি দিতে হয় । বর্তমান সময় সব কিছুর মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সকাল বেলা উঠেই ফ্রেশ হয়ে আমি ঠাকুর পূজার পিতলের থালা বাসন গুলো পরিষ্কার করে নিয়েছি। অন্যদিকে মা ওদের জন্য দুপুরের রান্না করেনিল। আমি আর মেয়ে উপবাস ছিলাম। আর্মি বাবু দুপুরে বাসায় আসবেন না ।
দেখতে দেখতে আমার মেয়েটা বড় হয়ে গেল ,সেও আমার সাথে সাথে পুজোর কাজ করতে খুব ভালোবাসে, তাই ওকে আর বারণ করলাম না। আমাদের মুসলীম ভাই-ভাবী ও বন্ধুরা নারু খেতে খুবই ভালোবাসে । ওদের বাসায় পুজোর প্রসাদ দিতে হবে। কারণ ওরাও ঈদের সময় কিংবা রোজার সময় প্রতিদিনই ইফতারি দিয়ে যেতো ।
![]() | ![]() | ![]() |
---|
আমরা যে ধর্মের হই না কেন আমরা কিন্তু সবার ধর্মীয় উৎসবগুলো খুব সুন্দর ভাবে পালন করার চেষ্টা করি । সবার ধর্মকে আমরা শ্রদ্ধা করে থাকি। মায়ের রান্না শেষ হবার পরে আমি রান্নাঘরের সমস্ত কিছু পরিষ্কার করে পুজার আয়োজন শুরু করি। পূজার সমস্ত কিছু আয়োজন করতে আমার সন্ধ্যা সাতটা বেজে গেল।
ঠাকুর দাদা বলেছিলেন সন্ধ্যা ৮:০০ টার সময় আসবেন । আমি চেষ্টা করছি তিনি আসার পূর্বে সমস্ত কিছু তৈরি করে রাখবো। মা মেয়ে শাড়ি ও আলতা পড়েছিলাম। শাখা-সিঁদুর হল বিবাহিত মেয়েদের প্রধান অলংকার। তবে আমাদের পরবর্তী জেনারেশন হয়তোবা এত রীতিনীতি পালন করতে নাও পারে।
![]() | ![]() | ![]() |
---|
বর্তমান সময় দেখা যায় অনেকে বিভিন্ন সমস্যার কারণে লক্ষ্মী পূজার সবকিছু আয়োজন করতে পারছে না । আমার সাধ্যমত যতটুকু পেরেছি তাই দিয়ে ভক্তিভরে পূজা করার চেষ্টা করেছি। ঠাকুর দাদা সন্ধ্যা ৭ঃ৩৫ মিনিটে চলে আসেন। ঠাকুর দাদা নারায়ণ শিলা নিয়ে আসতে ভুলে গেছেন।
![]() | ![]() |
---|---|
![]() | ![]() |
ছবিগুলো WhatsApp থেকে নেওয়া |
---|
আমরা সকলে জানি লক্ষ্মীপূজা করার আগে নারায়ণ পূজা করতে হয় । আমার মন খারাপ হয়ে গেল। এত কষ্ট করে এত কিছু আয়োজন করেছি ,শেষে এসে পূজায় একটু সমস্যা থাকবে! তখন বৌদিকে ফোন দিলাম, তিনি বললেন তার কাছে নারায়ণ শিলা নেই তবে লক্ষীনারায়নের ছবি আছে।
লক্ষীনারায়ন ঠাকুরের ছবি নিয়ে আসি। ঠাকুরদা নতুন করে নারায়ণ ঠাকুরের জন্য ঘট স্থাপন করেস। তিনি এক এক করে মন্ত্র পাঠ করছেন এবং পূজার নিয়ম কানুন গুলো পালন করছেন। আর্মি বাবু ও তার দুটো বন্ধু আসলেন। এবারের পূজোতে আমি যেমন ব্যস্ত ছিলাম তেমনি আমার অনেক আনন্দে ছিলাম কারণ বাবা মা আমার সাথে আছে।
একটি মেয়ের কাছে এটি অনেক বড় পাওয়া। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেলে দুর্গ পূজায় বাবার বাড়িতে থাকতে পারলেও লক্ষী পূজায় থাকা হয় না। শ্বশুরবাড়িতে থাকতে হয়। হয়তো তারা ডাক্তার দেখানোর জন্য এসেছে ,তারপরও আমি অনেক খুশি। পূজা সম্পূর্ণ হলো ,আমরা অঞ্জলি নিয়েছি, লক্ষ্মী পাঁচালী পড়লাম এবং সবাইকে পূজার প্রসাদ বিতরণ করলাম ।
![]() | ![]() |
---|
এর মাঝে অন্যরকম আনন্দ থাকে এবং ফ্লাটের পরিবারগুলো নাড়ু পেয়ে অনেক খুশি । সবাইকে প্রসাদ বিতরণ করতে করতে রাত দুটো বেজে গেল। অনেক ক্লান্তী নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম ।সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন এবং আমার বাপীর জন্য প্রার্থনা করবেন, তিনি যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে ওঠেন।