Better life with steem || The Diary Game || 17 January

in Incredible India2 years ago

My Diary

১৭ জানুয়ারি, বুধবার। প্রতিদিনের মত এলার্মের শব্দে ঘুম ভাঙলো। ফজরের সালাত আদায় করে আবার কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে শুয়ে মোবাইল ব্রাউজ করতে লাগলাম। কখন যে ৭:৩০ বেজে গেল টের ই পেলাম না। বিছানা ছেড়ে ঊঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা রেডি করলাম। এই শীতে বউকে আর ডাকতে ইচ্ছে করেনা। পরাটা বানানোই ছিল, ফ্রিজ থেকে বের করে রাতের সবজি দিয়ে খেয়ে অফিসে রওনা হলাম।

আজকে মনে হচ্ছে শীতের তীব্রতা আরো বেড়েছে। গুলশান ১ লেকপার দিয়ে অফিসের দিকে যাচ্ছিলাম। এখানে একটা বাড়ির সামনে অনেক গুলো ইঞ্চিপ্লান্ট গাছ ঝুলানো রয়েছে। সারাবছর ই দেখি এভাবেই থাকে। খুব সুন্দর লাগে দেখতে। এই বাড়িটার আরো একটা বিশেষত্ব আছে। এখানে বিনামূল্যে নিরাপদ খাবার পানির ব্যবস্থা রয়েছে।

বাড়ির সামনে নিরাপদ পানির ব্যাবস্থা, আইডিয়াটা খুব চমৎকার

ঢাকা শহরে সব থেকে বেশি ভূগতে হয় বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য। প্রত্যেক বাড়িওয়ালা যদি তাদের বাসার সামনে এমন ব্যবস্থা করতো তাহলে মানুষকে আর ২০ টাকা দিয়ে ৫০০ মিলি পানি কিনে খেতে হতো না।

সময়মতো অফিসে এসে কাজ শুরু করে দিলাম। আমাদের অফিস এসিস্ট্যান্ট দেখলাম একটা ফুলের গাছ নিয়ে এসেছে। গাছে মস্ত বড় একটা গাদা ফুল ফুটে আছে। আমার সামনে দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল, ছাদে রোদে দিবে বলে। আমি তাকে ডেকে গাছটা নিয়ে কয়েকটা ফুলের ছবি ক্যাপচার করে ফেললাম। ফুল দেখলেই আমাএ ছবি তুলতে মন চায়।

মস্ত বড় চাইনিজ গাদা ফুল

আজকে আমাদের অফিসে একটা লটারির ড্র হবে। আমরা কলীগরা মিলে প্রতি মাসে ৪০০০/- করে জমা দেই। ১৫ জন মিলে ৬০০০০/- মাসে জমা পড়ে, এবং প্রতিমাসে একটা লটারি হয়। যার নাম ঊঠে সে ওই মাসে ৬০,০০০/- পায়। এবং পরে তার নাম আর লটারিতে থাকেনা। এতে অনেকেই ইন্টারেস্ট ছাড়া লোনের মত টাকা নিতে পারে। একদিকে যেমন টাকা জমানো হয়, অন্যদিকে সেই টাকা যে পায় তার কাজে আসে।

আজকে ১১তম ড্র ছিল। এর আগে ১০ জন টাকা পেয়েছে। বাকি ৫ জনের মধ্যে আমিও ছিলাম।

লটারির ড্র এর জন্যে অবশিষ্ট নাম

ছবি: কলীগের হোয়াটস অ্যাপ থেকে সংরহ করা

যথা সময়ে ড্র হলো। বুক ধড়ফড় করছিলো। প্রতিবার ই মনে হয় আমি পাবো, কিন্তু পাই না। মিন্টু ভাই একটি নাম তুললো এবং আমার নাম ঊঠলো। পরে আমাকে টাকা বুঝিয়ে দেয়া হলো।

লটারি জেতার উপহার

যদিও এগুলো আমারই টাকা, মানে এখন বাকি ৪ মাস শুধু আমাকে টাকা দিয়ে যেতে হবে যেভাবে বিগত ১১ মাস দিয়েছি। তবে এত গুলো টাকা একমাসে পাওয়াতে আমার ভালো কাজে দিবে। এভাবে না জমালে হয়তো টাকা জমতো না। ভালো একটা সেভিংস প্রকৃয়া।

দিনটা খুব খুশিতে কাটছে। পকেটে টাকা থাকলে মন মেজাজ খুব ভালো থাকে। বিকেল বেলা ছাদে গেলাম। আজকে আমাদের খেলা ছিল। তবে ২:১ সেটে ম্যাচ হেরে মন টা খারাপ হয়ে গেল।

সন্ধ্যেবেলা বাসা ফেরার পথে ইবনেসিনার সামনে দেখলাম হাস বিক্রি হচ্ছে। ছোট ছোট হাস। আমি এক জোড়া কিনে নিলাম ৮০০/- দিয়ে।

দেশি ক্যামেল হাস-১ জোড়া ৮০০ টাকা (28.14 SP)

বাসায় গিয়ে দুজন মিলে হাস পরিস্কার করতে করতেই হ্যাংআউট শুরু হয়ে গেলো। আমি লাউডে দিয়ে কাজ করছিলাম আর শুনছিলাম। দারুণ উপভোগ্য ছিল গতকালের হ্যাংআউট। যদিও সাব ইন্সপেক্টর থেকে ডিমোশন পেয়ে হাবিলদার পোস্ট ক্যারি করতে হচ্ছে এখন আমাকে।

হ্যাংআউট চলার সময় মোবাইল থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

একদিকে হ্যাংআউট অন্যদিকে ইন্ডিয়া Vs আফগানদের খেলা দেখছিলাম। হ্যাংআউট শেষে সুপার ওভারের খেলা দেখলাম। জীবন প্রথম একই ম্যাছে ২ বার সুপার ওভার দেখলাম। অবশেষে ইন্ডিয়া জিতলো।

মোবাইল থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

খেলা দেখে রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।

এভাবেই ভালো ও মন্দের মিশলে আরো একটি দিন কাটিয়ে দিলাম। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার ডায়েরিটি পড়ার জন্য। আজকে এখানেই শেষ করছি। ভালো থাকবেন সবাই।

Sort:  
 2 years ago 

বাড়িওয়ালা ব্যক্তিটি যথেষ্ট ভালো মানসিকতার মানুষ এইজন্য উনি বিনামূল্যে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা রেখেছেন। আপনার অফিসে লটারির মাধ্যমে টাকা জমানোর পদ্ধতিটা বেশ ইউনিক। এতে সকলেরই উপকার হয়। পকেটে ষাট হাজার টাকা রয়েছে, সেই আনন্দে একজোড়া ছোট হাঁস কিনে ফেললেন। ম্যাচ হারা ছাড়া বাকি দিনটা আপনার বেশ ভালোই কেটেছে।

 2 years ago (edited)

একদম সত্য ভাই, খুব ভালো কেটেছে পুরো দিন। শুধু ম্যাচ টা জিতলে ১০০ ই ১০০ হত।

 2 years ago 

সকালবেলা যত সকালেই ঘড়ির অ্যালার্ম দেয়া থাক না কেন? উঠতে মন চায় না! কেননা কম্বলের উষ্ণতা ছেড়ে ভালোবাসা ছেড়ে উঠতে একেবারেই কষ্ট হয়। তারপরেও অনেক কষ্ট করে অফিসে গিয়ে পৌঁছেছেন। আজকে আপনার দিনটা বেশ ভালো ভাবে কেটে গিয়েছে এটা লটারির মাধ্যমে আপনার নাম উঠেছে।

আপনার অফিসের কলিগদের ভালো একটা চিন্তাভাবনা। কেননা এভাবে যদি টাকা জমানো হয় তাহলে একসাথে টাকাগুলো পেলে ভালো একটা কাজ করা যায়। আজকে আপনি টাকাগুলো পেয়ে অনেক বেশি খুশি হয়েছেন। এবং ভালো একটা কাজ করতে পারবেন।

বাসায় আসার সময় হাঁস কিনে নিয়ে এসেছেন। শীতের সময় হাঁসের মাংস খাওয়া অনেক বেশি মজা। হাঁস পরিষ্কার করতে করতেই আপনারা দুইজন মিলে হ্যাংআউটে জয়েন করেছেন ।হ্যাংআউট শেষ করে আবার খেলা দেখেছেন। খেলা দেখতে দেখতে ঘুমিয়ে পড়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আপনার একটা দিনের কার্যক্রম উপস্থাপন করার জন্য। ভালো থাকবেন।

 2 years ago 

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু। আপনি সব সময় ই পোস্ট ভালো করে পড়ে লাইন বাই লাইন মতামত জানান। খুব ভালো লাগে এই জিনিস্টা।

 2 years ago 

প্রিয় ভাই আপনার সারাদিনের কার্যক্রম পড়ে অনেক ভালো লাগলো। বেশি ভালো লাগলো একটি বিষয় দেখে সেটি হলো পানি খাওয়ানো। ঢাকা শহরে বিশুদ্ধ পানি সত্যি পাওয়া অনেক কঠিন। আর পেলেও কিনে খেতে হয়, আপনি যেমনটা বলেছেন। তবে যে বাড়ীওয়ালা এই মহৎ কাজটি করেছে তার জন্য অবশ্যই দোয়া করবো।

আর আপনি যে হাসগুলো কিনেছেন তার দাম একটু বেশি নিয়েছে আমার মনে হয়। তবে ঢাকা শহরে এই দাম স্বাভাবিক। সব মিলিয়ে দারুণ। ভালো থাকবেন প্রিয় ভাই।

 2 years ago 

ঢাকায় সব কিছুর প্রাইজ একটু বেশি। গ্রামে গেলে হয়তো ৬-৭ শ টাকা নিতো।

ধন্যবাদ ভাই।

 2 years ago 

শীতের সকালে ভাবিকে না ডেকে নিজেই নাস্তা করে এটা জেনে আমার মনে হচ্ছে আমার ভাগ্যে এমন দিন কবে আসবে।
ভালো লাগলো আপনার এই জিনিসটা। এই গাছটা আমার বাসাতেও আহে কিন্তু এর নাম যে ইন্সিপ্যান্ট এটা জানা ছিল না।
ধন্যবাদ আপনাকে নাম জানানোর জন্য। এতগুলি টাকা জিতেতো মন ভালো হয়ে গেছে আপনার।
শীতের সময় হাঁসের মাংসের মজাই আলাদা। আপনার আজকের দিনলিপি পরে খুব ভালো লাগলো।
শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

 2 years ago 

হ্যা এটি ইঞ্চিপ্ল্যান্ট গাছ। এটি অনেক হাড্ডি সাকুলেন্ট। অল্প মাটি বা পানিতেই বেচে থাকতে পারে আর দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে ঝোপালো হয়ে যায়।

Loading...
 2 years ago (edited)

আপনার সহধর্মিণীর ওপর আপনার কেয়ার টা বেশ ভালো লাগলো।ছোট বাচ্চা নিয়ে শীতের সকালে উঠে নাস্তা তৈরি করতে হিমশিম খািয়া লাগে।
মাঝে মাঝে এমন ছুটি পেলে ভালেই লাগে।

বাড়ির মালিকের বিশুদ্ধ পানি পান করে দেওয়ার ব্যবস্থাটা সত্যিই অনেক মনোমুগ্ধকর।
শীতের সময় ঝাল ঝাল হাসের মাংস অসাধারণ লাগে।
গতকালকে হ্যাং আউটে সত্যিই অনেক মজা হয়েছিল এবং আপনার গাওয়া গানটি ও অনেক সুন্দর ছিল।
ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

 2 years ago 

আপ্নাকেও ধন্যবাদ আপু, এত সুন্দর মন্তব্যের জন্যে। অনেক ইনেক ভালো থাকবেন।

 2 years ago 
  • নিঃসন্দেহে আজকে আপনার মনটা খুব ফুরফুরা। একদমই তাই ভরা পকেট থাকলে মন মানসিকতা এমনিতেই ভালো লাগে। আমার তো মাসের ২০ চলে গেলেই, মন খারাপ হয়ে যায়। যখন স্যালারি টা পাই তখন একেবারে চাঙ্গা হয়ে উঠি। এরকম লটারি আমরাও করি আমাদের ওখানে। আমার অন্যান্য কলিজা পেয়েছে আমি হতভাগী এখনো পাইনি তিন তিনটে নাম একটা হতে পারে না বলেন তো। প্রতিমাসে আশায় বকব্যাধি এই বুঝি হল, না কোথায় কি। ক্যাশিয়ার কিন্তু আমি নিজেই লটারি তো নিয়ম কারণ রয়েছে তাই না, দুজনে মিলে হাঁস পরিষ্কার করবেনআর হ্যাংআউট উপভোগ করলেন, বাহ বেশ। এবারে হ্যাংআউট পুরোপুরি করতে পারিনি আমি কিচেন একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল। মোটামুটি ভালই কাটলো আপনার দিন ধন্যবাদ
    আপনাকে।
 2 years ago 

যখন ঊঠবে দেখবেন পর পর আপনার নাম ঊঠে যাবে। এত টাকা তখন কি করবেন সেই প্ল্যান করুন।

ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 
  • আপনার মুখে জয় পদ্ম ফুটুক। তবে এখন একটু প্রয়োজন ছিল আমার। ওয়াশিং মেশিনটা না কিনলেই নয়। মন থেকে দোয়া করবেন তো একটু। একটা উঠলেই পঞ্চাশ হাজার। তারপর পর তিনটা উঠলে তো দেড় লাখ। ওরে বাবা।
    রাখবো কোথায় এত টাকা। ভালো লাগলো মন্তব্য পড়ে।
 2 years ago 

আপ্নার লাইফে তো দেখি সেভিংস আর সেভিংস। আসলেই তো এত টাকা রাখবেন কোথায়?

 2 years ago 
  • কোন নিরাপদ জায়গায় থাকলে বলেন কিছুদিনের জন্য রেখে দিব। বাণিজ্য মেলা চলছে। ইস কিছু টাকা যদি এবার পেতাম। দোয়া করবেন। একটি লটারি যাতে লেগে যায়।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

দোয়া করি যেন খুব শীঘ্রই অন্তত একটা নাম আপনার ঊঠে। আপনার মনবাসনা পূর্ণ হোক।

 2 years ago 
  • হ্যাঁ ভাইয়া খুব দরকার। আসলে আমরা যারা চাকরিজীবী আমাদের তো প্রতিটা টাকা হিসেবে। হিসাবের বাইরে একটি টাকাও খরচ করার উপায় নেই। আল্লাহ যেন আপনার মুখে জয় পদ্ম ফুটায়। ধন্যবাদ আপনাকে।

Posted using SteemPro Mobile

 2 years ago 

শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠতে আমার তো একদমই বিরক্ত লাগে, কিন্তু কিছুই করার নেই কর্মের তাগিদে আমাদের তো উঠতে হয় তাই না।
খুব সুন্দর একটি দিন কাটিয়েছেন হাসিখুশের মাঝে। লটারিতে আপনার নাম উঠে এতগুলো টাকা হাতে পেয়ে বেশ খুশি লাগছে আপনাকে এটা আপনার লেখা পড়ে বুঝলাম। সেই আনন্দে বাসায় ফিরে আসার সময় হাস কিনে নিয়ে এসেছেন। আপনার দিনটি শুভ হোক সেই প্রার্থনা করছি।

 2 years ago 

খুব খুশি হয়েও লাভ নেই কেননা এখন থেকে শুধু টাকার কিস্তি দিয়ে যেতে হবে।

ধন্যবাদ আপু।

 2 years ago 

শীতের দিনে ঘুম থেকে গরম লেপ কম্বল ছেরে উঠতে অনেক বিরক্ত লাগে। তবুও নিজের কর্মজীবনে কাজকর্ম করার জন্য উঠতে হয় । আজকে আপনার দিনটা খুব ভালোভাবেই কেটেছে কারণ লটারির মাধ্যমে আপনার নাম উঠেছে এবং ভরা পকেটে টাকা নিয়ে বাড়িতে ফেরার পথে হাঁস কিনে নিয়ে এসেছেন।শীতের দিনে ঝাল ঝাল রান্না করা হাঁসের মাংস খেতে অসাধারণ লাগে।

থ্যাংক ইউ তুই সুন্দর একটা দিনলিপি আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য।

 2 years ago 

আজকে সেই হাস রান্না হচ্ছে। অবশ্যই অন্য কোন দিন রেসিপি দিবো।

ধন্যবাদ আপু আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।