মুখরোচক ছোলা ভাজা
নমস্কার বন্ধুরা,সকলে কেমন আছেন?আশা করি সকলেই ভালো আছেন।আজকে আবারও নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
বেশ কয়েকদিন আগে দু'দিন টানা সারাদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছিল। তবে এখনো সারাদিন গরম পরলেও রাতের বেলায় এক একদিন বৃষ্টি হচ্ছে ।তাতে মানুষ খানিকটা হলেও স্বস্তিতে ঘুমাতে পারছে। সারাদিন বৃষ্টির পর সন্ধ্যা হলেই অনেক সময় মুখরোচক খাবার খেতে ভীষণ ইচ্ছে করে আর বৃষ্টির মধ্যে বাইরে বেরিয়ে দোকান থেকে কোন খাবার কিনে আনা সম্ভব হয় না। বৃষ্টির সময় অনেক সময় খাবারের দোকানগুলো খুব তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যায়। কিছুদিন আগেই যখন টানা দুদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছিল। তখন আমি মামার বাড়িতেই ছিলাম। মানুষ যখন বয়স হয়ে যায় তখন তারা শিশুদের মতো আচরণ করতে শুরু করে। তাই বৃষ্টি দেখে আমার দিদা ও বায়না ধরল কোন মুখোরোচক খাবার বানানোর জন্য।
দিদাকে আমি ভীষণ ভালোবাসি ।তাই ওনার কথা একদমই ফেলতে পারি না। ঘরে তেমন কিছুই ছিল না। দিদা খাবার জন্য আগে থেকেই ছোলা জলে ভিজিয়ে রেখেছিল। দিদা, যতই অসুস্থ হোক না কেন বাইরের মুখরোচক খাবার খেতে ভীষণ পছন্দ করে। যেগুলো ওনার খাওয়া একদমই বারণ ।সেগুলোই উনি বেশি করে খান। কাঁচা ছোলা অনেকেই সকালবেলায় ঘুম থেকে ওঠার পর খাই। কাঁচা ছোলা খেলে শরীরে প্রচুর উপকার পাওয়া যায়। প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। তাই সেদিন সন্ধ্যা বেলায় কাঁচা ছোলাটাকে একটু তেল দিয়ে ভেজে সুন্দর মুখরোচক একটা খাবার তৈরি করেছিলাম ।এর আগেও বহুবার বাড়িতে তৈরি করে খেয়েছি। কিন্তু সেদিন একটু অন্য রকম ভাবে তৈরি করার চেষ্টা করেছিলাম। খেতে খুবই সুস্বাদু হয়েছিল।
চলুন তাহলে শুরু করি মুখরোচক ছোলা ভাজা:-
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | কাঁচা ছোলা | ১০০ গ্ৰাম |
২ | পেঁয়াজ | ২ টো |
৩ | কাঁচা লঙ্কা | ৩ টে |
৪ | ছোট সাইজের আলু | ২ টি |
৫ | সরষের তেল | পরিমাণ মতো |
৬ | লবণ | পরিমাণ মতো |
৭ | হলুদ | সামান্য |
৮ | বিট লবণ | পরিমাণ মতো |
৯ | স্যালাড কুচি | পেঁয়াজ, টমেটো,শশা |
প্রথম ধাপ
প্রথমেই পরিমাণ মতো ছোলা জলে খানিকক্ষণ ভিজিয়ে রাখতে হবে। এরপর আমি ছোলা গুলোকে ভালো করে ধুয়ে নিয়েছিলাম। এর সাথে কাঁচা লঙ্কা, পেঁয়াজ, আর আলু ভালো করে কেটে ধুয়ে রেডি করে নিয়েছিলাম
দ্বিতীয় ধাপ
এবারে গ্যাস অন করে একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি আর কড়াই গরম হলে কড়াইতে পরিমাণ মতো সরিষার তেল দিয়ে দিতে হবে।
তৃতীয় ধাপ
এবারে তেল গরম হলে কেটে রাখা আলু গুলো তেলের মধ্যে দিয়ে ভালো করে ভেজে নিতে হবে। আলু ভাজার সময় আমি পরিমাণ মতো লবণ ,হলুদ অ্যাড করে দিয়েছিলাম। দিয়ে আলুগুলো খুব ভালো করে ভেজে নিতে হবে ।
চতুর্থ ধাপ
এরপর কেটে রাখা পেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কা সমস্ত আলুর মধ্যে দিয়ে ভালো করে ভেজে নিতে হবে।
পঞ্চম ধাপ
পেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কা ভাজা হয়ে গেলে ধুয়ে রাখা ছোলা গুলো কড়াইতে দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করতে হবে। সমস্ত কিছু খুব ভালো করে ভাজা ভাজা করে নিতে হবে।
ষষ্ঠ ধাপ
ভাজা হয়ে গেলে এবার কড়াই থেকে নামিয়ে নিয়েছিলাম নিয়ে একটা পাত্রে ঢেলে নিয়েছি।
সপ্তম ধাপ
এরপর ওর ওপরে সামান্য বিট লবণ ছিটিয়ে দিয়েছি আর আমি এখানে স্যালাড হিসেবে ব্যবহার করেছি পেঁয়াজ, টমেটো আর শসা ।
শেষ ধাপ
এরপর স্যালাড গুলো ছোলার উপর ছিটিয়ে দিতে। হবে।
তৈরী
এই ভাবেই তৈরি হয়ে গেল মুখরোচক ছোলা ভাজা ।
এই খাবারটি খুবই মুখরোচক । ট্রেনে যাতায়াত করলে ট্রেনে বিক্রি হয় কাঁচা ছোলা, ভাজা ছোলা আবার ঝালমুড়ি তে ছোলা কাঁচা, ভাজা দুটোই ব্যবহার করা হয়।আমরা অনেক সময় বাড়িতে ঝাল মুড়িতে ছোলা ব্যবহার করি। কিন্তু বাড়িতে এইভাবে ছোলা ভেজে নিয়ে মুড়ির সাথে মেখে খেলো দারুন লাগে। সন্ধ্যাবেলায় এইরকম মুখরোচক খাবার বানিয়ে খেলে খুবই ভালো লাগে। আমরা বাড়িতে তিনজন ছিলাম। তাই তিনটে বাটিতে তিনজনের জন্য সার্ভ করেছিলাম। আপনারাও বাড়িতে এইভাবে ভাজা ছোলা বানিয়ে খেতে পারেন। আশা করি সকলেরই খুব ভালো লাগবে। যারা ছোলা খায় না তারাও খুব সহজে ছোলা খেয়ে নেবে। আমার মামার মেয়ে সে তরকারিতে ছোলা দিলে একদমই খেতে চাই না ।কিন্তু সেদিন পুরো এক বাটি ছোলা খেয়ে নিয়েছিল ।এমনকি শেষে আরো থাকলে সকলের ভালো হতো।
আমার দিদাও খেয়ে ভীষণ খুশি হয়েছে, ওনার নাকি এক বাটি খেয়ে একদমই পেট ভরেনি ।তাই উনি চেয়েছে আরো একদিন অনেকটা করে করবে দিয়ে একা একাই খাবেন। আমিও সেদিন মুখরোচক ছোলা ভাজা বানিয়ে খেয়ে ভালোই লেগেছিল ।কারণ ওইভাবে কোনদিন বাড়িতে বানায়নি। এই প্রথমবার বানালাম। এইরকম ভাবে পছন্দ মতো যেকোনো জিনিস বানিয়ে খেতে যেমন ভালো লাগে। ঠিক তেমনি শরীরের পক্ষে খুবই উপকারী। তবে ধনেপাতা কুচি দিলে আরো ভালো লাগবে।অফ সিজন তাই ঘরে ধনে পাতা ছিল না। আমি আমার পরিমাণ মতো সমস্ত উপকরণ ব্যবহার করেছি। আপনারা আপনাদের পরিমাণ মতো সবকিছু ব্যবহার করবেন।আমার মুখরোচক খাবার কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন ।
আজ এই পর্যন্তই। আবার অন্য কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।