অষ্টম প্রহর
নমস্কার বন্ধুরা,আপনারা সকলে কেমন আছেন ?আশা করি সকলে ভালো আছেন ।আমি ও ভালো আছি ।আজকে নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে। আশা করি সকলেরই ভালো লাগবে।
বেশ কয়েকদিন আগে পোস্টে আপনাদের মাঝে অষ্টম প্রহরে কথা শেয়ার করেছিলাম। প্রত্যেক বছর আমাদের গ্রামে শ্বশুর বাড়ির কাছে অষ্টম প্রহর অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবছর মে মাসের ৩০ তারিখ ৩১ তারিখ এই দুদিন ধরে এ অনুষ্ঠানটি পালন করা হয়। কিন্তু এই বছর সময়টা একটু পিছিয়েছে। গত রবিবার থেকে শুরু হয়েছে অষ্টম প্রহরের অনুষ্ঠান। প্রত্যেক বছর আমরা বাড়ির সকলে মিলে গ্রামের বাড়িতে চলে যাই ।সেই গ্রামের টানে অষ্টম প্রহরে অনুষ্ঠান শোনার জন্য। নিজের বাড়ির কাছে কোন অনুষ্ঠানের কথা শুনলেই সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যেতে মন চাই। এ বছরে বেশ কয়েকদিন ধরে শাশুড়ি মায়ের ভীষন শরীর খারাপ। তাই ওরাও যেতে পারছিল না। কিন্তু আজ একটু সুস্থ বোধ করেছে তাই আজকে সকালে শশুর আর শাশুড়ি দুজনেই চলে গিয়েছে অষ্টম প্রহরে অনুষ্ঠান শোনার জন্য। কিন্তু আমাদের বিকেল বেলায় যাওয়ার কথা ছিল ।প্রচন্ড বৃষ্টির কারণে আমরা যেতে পারিনি।
বাড়িতে বসেই মনটা ভীষণ খারাপ করছে। আসলে আমার শ্বশুর বাড়িতে যেকোনো অনুষ্ঠানে বাড়ির সকলে মিলে একত্রিত হয় ভীষণ মজা আনন্দ করে মুহূর্ত গুলি কেটে যায়। প্রত্যেক বছর দুদিন ধরে অষ্টম প্রহর এর অনুষ্ঠান হতো ।কিন্তু এ বছরে তিন দিন ধরে অষ্টম প্রহরের অনুষ্ঠান করা হয়েছে। গত রবিবার বিকেল বেলায় অধিবাস দিয়ে অষ্টম প্রহরের অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। আজকে অষ্টম প্রহরের অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিন। আগামী কাল দুপুর পর্যন্ত হয়ে অষ্টম প্রহরের অনুষ্ঠান শেষ হয়ে যাবে। তবে গ্রামের অনুষ্ঠান হলেও এত সুন্দর করে সাজাই দেখেই চোখ জুড়িয়ে যায়। লাইটিং থেকে শুরু করে প্যান্ডেল সাজানো এছাড়াও সমস্ত রাস্তা জুড়ে পুজোর মত আলোয় আলোকিত করে তোলে। দেখে মনে হয় যেন সত্যিই একটা অনুষ্ঠান হচ্ছে। তবে এই অনুষ্ঠানে সকলের গিয়ে একটা বিশেষ সুবিধা রয়েছে।
এই অনুষ্ঠানের কয়েকদিন সারা গ্রামের মানুষকে বাড়িতে রান্নাবান্না করতে হয় না ।দু বেলাই অষ্টম প্রহরের হয়ে অনুষ্ঠানে ওখানে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও থাকে। সারা গ্রামের মানুষ ভক্তি ভরে গান শুনতে ব্যস্ত থাকে। গান শোনাতে জন্য এই শহর থেকে গ্রামে ছুটে যাই। প্রত্যেকদিন নিরামিষ খাবারের আয়োজন থাকে। শুধু যে বয়স্ক মানুষরাই গান শুনতে চাই এমনটা নয়, ছোট থেকে বড় সকলেই দেখি গান শুনতে যাই ।গানের সাথে সাথে সকলের আনন্দ করে নাচতেও থাকে। আমার তো দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। আগামী কালকে গান শেষ হওয়ার পর ধুলোট বলে একটা অনুষ্ঠান হয়। সকলে মিলে আবীর নিয়ে বাজনা নিয়ে সারা পাড়ায় ঘুরতে বের হয়। এই দৃশ্যগুলি আমি কখনোই শহরে থাকতে দেখিনি। কিন্তু যতদিন বিয়ে হয়েছে আমি প্রত্যেক বছরই এই অনুষ্ঠানটির সম্পূর্ণ মুহূর্ত নিজের চোখে দেখি। আমার ও ভীষণ ভালো লাগে।
অষ্টম প্রহর মানে তিন দিন ধরে ২৪ টা প্রহর ধরে কীর্তন হবে। এক একটা দল প্রায় সাত থেকে আট ঘন্টা একটানা কীর্তন করে যাই। এরপর অন্য দল এসে আবারো যোগ দেয়। একেক জায়গা থেকে একেক দলকে আনা হয় সুন্দর সুন্দর কীর্তন করার জন্য। এখনকার দিনে কীর্তনের সাথে সাথে গান ও গাওয়া হয়। এবছরের যেহেতু যাওয়া হয়নি ।তাই এ বছরের কোন ছবি আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পারলাম না। গত বছরের কিছু ছবি আমার কাছে রয়েছে সেগুলোই আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম।
আজ এই পর্যন্তই। আবার অন্য কোন পোস্ট নিয়ে হাজির হব আগামীকাল।