জন্মদিনের সকাল বেলা
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন?আশা করছি সকলেই ভালো আছেন ।আজকে আবারও নতুন একটা পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে।
আজ ৩০ মে। আমার জীবনের বিশেষ একটি দিন। আমার সাথে সাথে আমার পরিবারে সমস্ত কাছের মানুষের আনন্দের দিন। আমি আমার মা-বাবার প্রথম কন্যা সন্তান। আমরা চার বোন। এছাড়া দুই মামার দুটো মেয়ে রয়েছে।মোট ছটা বোন।কথায় আছে বাড়ির বড় সকলের থেকে প্রিয় হয়। এমনকি আদর একটু বেশি হয়। আমারও ঠিক সেই রকম আমাকে আমার মামারা এমনকি আমার মা বাবা এত ভালোবাসে যে আমার বোনেরা হিংসে করে। আমার বাবা প্রথমে বিদেশে কাজ করতেন ।আমি যখন হয়েছিলাম মায়ের মুখে শুনেছি বাবা প্রথম খবর শুনেছিল তার কন্যা সন্তান হয়েছে অমনি বাবা কাজের জায়গা থেকে ছুটে এসেছিল আমাকে দেখার জন্য। বাপের বাড়ির দিক থেকে আর মামার বাড়ি দুই দিক থেকে আমি বড়ো মেয়ে।জীবনের অনেকটা সময় পেরিয়ে এসেছি। আমারও সংসার হয়েছে আমি যেমন আমার পরিবারের সকলকে আমি ভীষণ ভালোবাসি। শ্বশুর শাশুড়িকে ভীষণ ভালো বাসি।
অনেক বাড়িতে মেয়েদের জন্মদিন পালন করে না। মেয়ে বলে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। অবহেলার চোখে দেখা হয়। কিন্তু আমরা সমস্ত সুযোগ সুবিধা পেয়েছিলাম। ছোটবেলায় সেভাবে জন্মদিন পালন করা হতো না। কিন্তু যেই মাসে জন্মে ছিলাম সেই মাসে দিদা পায়েস রান্না করে খাওয়াতো। ছোটবেলায় আমার নিজেরই জন্মের তারিখ মনে থাকতো না। এখনকার দিনে ছেলে মেয়েদের জন্মদিন মনে করাতে হয় না। তারা নিজেদের জন্মদিন নিজেরাই মনে রাখে।কিন্তু বড় হওয়ার পর থেকে দেখি মামারা জন্মদিন খুব ধুমধাম করে পালন করত। সেই থেকেই চলে আসছে এই রীতি, বিয়ের পর শ্বশুর বাড়িতে যতটা না সময় কাটিয়েছি, তার বেশি এই জন্মদিনের দিনটি দিদার বাড়িতে সময় কাটানো হয়। আগে থেকেই মামা দিদা সকলে ফোন করতে থাকে। অনেক মেয়েদেরই হয়ত সংসারে চাপে পড়ে জন্মদিনটি সকলেই ভুলে যাই। কিন্তু আমার সাথে এখনো এমনটা হয়নি। জানিনা আজীবন চলবে কিনা।
তবে যতদিন পারবো এইভাবে আনন্দ করে যেতে চাই। গতকাল ছিল আমার জন্মদিন ।বেশ কিছুদিন ধরেই আমি মামার বাড়িতেই রয়েছি। তাই শাশুড়ি মা কে আর ঝামেলায় ফেলতে চায়নি। দিদার বাড়িতে সমস্ত আয়োজন করেছিল। গতকালকে একটু অন্যরকমই প্ল্যান করেছিলাম। কিন্তু সকাল বেলায় বৃষ্টির জন্য কোন প্ল্যানই ঠিকঠাক সাকসেস হয়নি। গতকাল সকাল বেলায় ঘুম ভাঙতে একটু দেরি হয়ে গিয়েছিল ।ঘুম ভাঙতে না ভাঙতেই দিদা ,মামা, বুনু সকলেই মিলে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করেছিল। বিছানায় শুয়ে শুয়ে দিদা দেখি আমাকে আশীর্বাদ করছে। এরপর বিছানা থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নিয়েছিলাম। স্নান করে চলে গিয়েছিলাম আমার মামার বাড়ির সামনে শিব মন্দিরে পুজো দিতে। খুব ছোট থেকেই আমি শিব ভক্ত। তাই যে কোন শুভ কাজে আমি শিব পূজা করি। তারপরে যেকোনো শুভ কাজ শুরু করি।
গতকাল জন্মদিনটা আমার শিবের পূজা করেই শুরু হয়েছিল। এরপর বড়দের সকলকে প্রণাম করে নিয়েছিলাম। কিছুক্ষণ পরেই দেখি মা এসে হাজির ।মা মেয়ের জন্য ৬০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে সকাল ১০ টার মধ্যে হাজির।সব মেয়েদেরই মা-বাবাকে দেখে আনন্দ আত্মহারা হয়ে ওঠে, আমিও ঠিক এইরকম মাকে দেখে ভীষণ খুশি হয়েছিলাম। এদিকে ছোট মামা বড় মামা সমস্ত বাজার দোকান করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যাই হোক মামাদের এতো ভালোবাসা আদর যত্ন পেয়ে বড় হয়েছি ।সেটা হয়তো বলে বোঝানো যাবে। সেই ভালোবাসা এখনো চলে আসছে। তাদেরও একটা করে কন্যা সন্তান রয়েছে। তবুও আমার ভালবাসায় কোন খামতি নেই। কথায় আছে মেয়েরা শুধু বাবার রাজকন্যা হয় কিন্তু আমার ক্ষেত্রে উল্টোটা আমার তিন মামাদের কাছে আমি রাজকন্যা।
গতকালের সকাল থেকেই শুরু হয়েছে আমার আনন্দ গতকাল প্রচন্ড ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছি। তাই কোন রকম পোস্ট আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পারিনি। আজকে জন্মদিনের সকাল বেলাটা আপনাদের মাঝে শেয়ার করলাম। বাকি সমস্ত মুহূর্তই আপনাদের মাঝে শেয়ার করে নেব।
আজ এই পর্যন্তই। সকলে ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। আবারো নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।