মন খারাপের মাঝে একটি দিন যে ভাবে কাটলো।
আসসালামু আলাইকুম আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ সৃষ্টিকর্তা যে ভাবে রেখেছি,তাতে হাজার শুকরিয়া আদায় করি,, তবে আজকের দিনটা যে এই ভাবে কাটবে সত্যি ভাবিনি ,, প্রতিদিনের মতো ঘুম থেকে উঠেছিলাম এরপরে হাতমুখ ধুয়ে সবাই মিলে নাস্তা করেছি এবং যে যার মত কাজ করতেছিলাম।
হাজবেন্ড অফিসে চলে গিয়েছে, মেয়ে আরবি টিচারের কাছে পড়তে গিয়েছে। শাশুড়ি আম্মা খানিক টা সংসারের কাজে করছিল কোটা বাছা দুপুরে রান্নার জন্য, আর আমি বাবুকে পাশে শুয়ে রেখে একটু বই পড়ছিলাম পাশেও খেলছিলো,
কিন্তু ভিতরে ভিতরে একটা টেনশন কাজ করছিলো, সেটা হলো আমাদের বাসা মেয়াত এই মাসের ৩০ তারিখে শেষ হাজব্যান্ড গত মাসে নতুন করে এপ্লাই করেছে বাসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য, আমাদের দুজনেরই ইচ্ছা আছে যদি আর তিন থেকে চারটা মাস এখানে থাকা যায় ততদিনে বাবু ও বড় হয়ে যাবে একটু তার পাশাপাশি শাশুড়ি আম্মার চোখে ডাক্তার দেখানোটা ও কমপ্লিট হবে।।এই আশায় নতুন করে আবার থাকার ইচ্ছা।।
এছাড়াও আমি ভাবছিলাম এখানে যদি আর কয়েক টা দিন বেশি থাকা যায় তাহলেই ভালো ততদিনে আমার পরীক্ষাটাও হয়ে যাবে এরপরে এসে আস্তে ধীরে বাড়িতে যাওয়া যাবে, কারণ আমার মাথায় বড় একটা টেনশন কিভাবে বাড়িতে যেয়ে আমি সবকিছু করবো বাজার করা থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ দায়িত্ব আমার উপরে থাকবে তাছাড়া এত বড় বাড়িতে কিভাবে আমি এবং আমার শাশুড়ি আম্মা থাকবো এটা ভাবতেই আমার মাথাটা ঘুরে যায়,,। কি দিয়ে যে কি করব তাই কোন ভাবে বুঝে উঠতে পারছি না ,, আর তাই এসব চিন্তাভাবনা করে আবার নতুন করে এখানে কিছুদিন থাকার ইচ্ছা।
কিন্তুু তা আর হলো না,দুপুর বেলা হাজবেন্ড অফিস থেকে এসে বললো,বাসার মেয়াদ আর বাড়ানো হবে না,, অনেকে এই বাসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য এপ্লাই করেছিলো তবে, বাসা পর্যাপ্ত না থাকার কারণে কারো বাসায় বাড়িয়ে দেয়নি। তবে কারো যদি গুরুতর সমস্যা হয় অসুস্থ হয় তাহলে বাড়িয়ে দেয় আমাদের বাবু ছোট এ কথা উল্লেখ করা হয়েছিলো তবুও কি জানি দিলো না।
হাজব্যান্ড বাসায় আসার পরে তার মুখের থেকে এই কথাটা শুনে এত বেশি মন খারাপ লাগছিলো তার মুখে দেখে তো আমি তাকাতে এই পারছিলাম না, পুরুষ মানুষ তাদের কষ্টটা খুব সহজেই বুকের ভিতরে চেপে রাখতে পারে। কিন্তু মেয়ে মানুষ তা কম পারে আমার তো এই কথাটা শুনে সত্যি একদম চোখে পানি এসে গিয়েছিল।
এই মানুষটার সাথে এতদিন এক সাথে থাকা, আমার বিয়ের পরে আমার ২০২৪ সাল থেকে শুরু করে এই পর্যন্ত সবচেয়ে দীর্ঘ সময় তার সাথে কাটানো, এই একটা বছর তার সাথে থাকা সময় কষ্টের চেয়ে সুখের পরিমাণটা আমার কাছে বেশি ছিলো।একটা মেয়ে বিয়ের পরে তার সবচেয়ে শান্তির জায়গা টা হচ্ছে স্বামীর কাছে থাকা,,। কারণ আমার কাছে তো মনে হয় মাথার উপরে সব সময় যেন একটা ছায়া দাঁড়িয়ে আছে সব বিষয়ে।।
এই খবরটা শুনে মনটা এত বেশি খারাপ হয়ে গিয়েছিলো,, কি আর বলবো কথায় আছে না বুক ফাঁটে তো মুখ ফোটে না তো আমার অবস্থা হয়েছিল ঠিক এইরকম, বেশ অনেক টা সময় নিজেকে নিয়ে চিন্তা করলাম এক জায়গায় বসেই ছিলাম আমি আবার খুব একটা পেশার নিতে পারি না। কোন কিছু নিয়ে ভাবতেও পারিনা তাহলে শুরু হয়েছে মাথা যন্ত্রণা।
দুপুরে খাবার আমি আগে খেয়ে নিয়েছিলাম তাই কি খবর শোনার পরে চুপচাপ শুয়ে ছিলাম। এরপর হাজব্যান্ড একটু সান্ত্বনা দিলো,বললো যে নিয়ম তো তোমার আর আমার মতে চলে না এটা মেনে নিতে হবে। এর পরে তার কথা শুনে আমিও মেনে নিলাম,,। সত্যি বলতেই হবে মানুষটা আমাকে সব সময় বুঝিয়ে রাখে। যত খারাপ পরিস্থিতি হোক না কেন আমাকে সামলে নেয় খুব সহজে।।।
কিন্তু সত্যি কথা বলতে মন কে কেন যেন বুঝতেই পারছিলাম না, এভাবে আজ সারাদিন টা আমার মন খারাপ করতে করতে গিয়েছে, সেই সাথে পিছনের কিছুদিনের কথা যেন ভুলতে পারছিলাম না।।যাইহোক আজ এখানে বিদায় নিচ্ছি জীবনে এক ভাবে চলে না, তাই হয়তো আগামী দিন মন ভালো করে আবার হাজির হবো আপনাদের মাঝে।
