School based activity - Morning assembly
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন ।আমি আজকে আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি আমাদের ট্রেনিং পিরিয়ডে হওয়া কিছু প্রকল্পের কথা। আপনারা অনেকেই জানেন আমি বিএড এর ট্রেনিং করছি। এই টিচিং ট্রেনিং চলাকালীন তৃতীয় সেমিস্টারে আমাদের স্কুলের ট্রেনিং পড়ে। মোটামুটি তিন মাসের জন্য আমাদের স্কুলে গিয়ে বাচ্চাদের পড়ানো থেকে শুরু করে যাবতীয় সমস্ত কাজ দেখভাল করতে হয়। এই সুযোগে অনেক কিছু শেখাও যায় ,আর সেই সম্পর্কিত অনেক জ্ঞান অর্জন করা যায়।
অনেকদিন আগে পোস্টে আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করেছিলাম যে আমার ট্রেনিং আমার নিজের স্কুলে পড়েছে অর্থাৎ যে স্কুলে আমি পড়াশোনা করেছি সেখানে। নিজের স্কুলে ট্রেনিং পড়াতে যেটা সুবিধা হয়, টিচারদের সাথে পরিচয় আগে থেকেই থাকায় ,অনেক কাজে সাহায্য পাওয়া যায়। যেহেতু এটা গার্লস স্কুল ,তাই সত্যি বলতে অনেকটাই সুবিধা পাওয়া গেছে ।আমাদের বান্ধবীদের যাদের বয়েজ স্কুলে পড়েছে ,তাদের অনেক কিছুর সম্মুখীন হতে হয়েছে, যাক সেসব নিয়ে পরের দিন আলোচনা করব।
আজ আপনাদের একটা প্রকল্পের কথা শেয়ার করি ।আমাদের তৃতীয় সেমিস্টারে একটি প্রকল্প রয়েছে ,যার নাম হলো স্কুল বেসড একটিভিটি। এই প্রকল্পের আন্ডারে তিনটে এক্টিভিটি রয়েছে।
নং | এক্টিভিটির নাম |
---|---|
১ | মর্নিং অ্যাসেম্বলি |
২ | মিড ডে মিল |
৩ | অ্যাটেন্ডেন্স রেজিস্টার |
মর্নিং অ্যাসেম্বলি
আজকে প্রথমেই আপনাদের সাথে মর্নিং অ্যাসেম্বলি নিয়ে শেয়ার করছি। কাজটা করে যেটুকু বুঝতে পেরেছি, মর্নিং অ্যাসেম্বলি একটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় একটা বিদ্যালয় এ। এবং সাধারণত প্রত্যেক বিদ্যালয় মর্নিং অ্যাসেম্বলি হয়ে থাকে। সমস্ত বিদ্যালয়ের কার্য শুরু হওয়ার আগে একটা নির্দিষ্ট স্থানে শিক্ষার্থীরা এবং শিক্ষিকারা সমবেত থেকে খুব সুন্দরভাবে শৃঙ্খলা বজায় রেখে একটা পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করে। যেখানে প্রার্থনা সংগীত থেকে শুরু করে ,মনীষীদের বাণী, প্রত্যেকদিনের তারিখের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা করা হয়।
মর্নিং অ্যাসেম্বলির উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলাবদ্ধ করে তোলা, তারা যাতে দলগতভাবে কাজ করতে পারে,সে বিষয়ে তাদের সহযোগিতা করা। এর সাথে দিনের পড়াশোনা শুরু করার আগে নিজের মনকে স্থির করতে পারার জন্য আমার মনে হয় মর্নিং অ্যাসেম্বলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই একটিভিটিটা সম্পূর্ণ করার জন্য আমি যা যা করেছি |
---|
প্রথমেই স্কুলের প্রধানা শিক্ষিকা প্রত্যুষা দে ম্যাম এর কাছ থেকে আমরা অনুমতি নিয়ে নিয়েছিলাম। তারপরে একটা দিন নির্বাচন করে সেইমতো আমরা কাজ করেছি। সকাল ১০. ২৫ এর সময় এসেম্বলির ঘন্টা পড়ে। তার আগেই সকলকে ক্লাস থেকে এনে অ্যাসেম্বলির জন্য প্রস্তুত করানো হয়েছে।
প্রথম থেকেই আমাদের স্কুলে এসেম্বলি হয় তেতুলতলায়। স্কুলের মাঠের বাদিক ঘেঁষে একটা বড় তেঁতুল গাছ রয়েছে। সেখানে সুন্দর করে চাতাল করা রয়েছে। জায়গাটা আমার বরাবর ই পছন্দের।
এখানে বসে বসে আমার বন্ধুদের সাথে আমি কত যে আড্ডা দিয়েছি তার নেই ঠিক। তবে বৃষ্টি হলে অ্যাসেম্বলি হলঘরে হয়ে থাকে।
যাইহোক সেখানে লাইন করে সকলকে দাঁড় করানো হয়েছে। এই স্কুলে ক্লাস থ্রি থেকে টুয়েলভ এর ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনা করে। সকলকে লাইনে ঠিক ভাবে দাঁড় করিয়ে শুরু হয়েছে মর্নিং অ্যাসেম্বলি । প্রথমেই শিক্ষার্থীরা প্রার্থনা সংগীত গেয়েছে। আমরা তাদের সাহায্য করেছি। তারপর সেদিন নীতি শিক্ষামূলক বাণী পাঠ করতে দুজন ছাত্রীকে সাহায্য করা হয়েছে। এর সাথে সেদিনকার গুরুত্ব অর্থাৎ সেই দিন কোনো মহান ব্যক্তি জন্মগ্রহণ করেছিলেন কিনা, এছাড়াও সেদিনের কোন তাৎপর্য আছে কিনা, সেই নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এরপর সকল ছাত্র-ছাত্রীদের আবার লাইন করে শ্রেণিকক্ষের দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ওরা যখন লাইন করে যাচ্ছিল তখন আমরা ওদের সমস্ত কিছু চেক করছিলাম। অর্থাৎ ওরা ঠিকঠাকভাবে স্কুলের ড্রেস পড়ে এসেছে কিনা, স্কুলের ফুল ইউনিফর্ম ওরা মেন্টেন করেছে কিনা। আই কার্ড ,ব্যাচ থেকে শুরু করে ড্রেস পরিস্কার আছে কিনা, জুতো জামা এবং নখ থেকে শুরু করে ঠিকঠাকভাবে চুল বেঁধে এসেছে কিনা, সেটাও আমরা লক্ষ্য করছিলাম। সাথে যে জায়গা গুলো তাদের ভুল ছিল সেগুলো আমরা ধরিয়ে দিচ্ছিলাম।
সকাল ১০. ২৫ এর পর স্কুলের যারা ঢোকে তাদের আমরা লেটলাইনে দাঁড় করিয়ে থাকি। আমাদের সময় আমরাও তাই করতাম। তাই যারা লেট করে এসেছে তাদের দেরি করার কারণ আমরা জিজ্ঞাসা করেছি, সাথে সময় সংক্রান্ত ব্যাপারে তারা যাতে আরো সংযত হতে পারে, তা নিয়ে তাদের সাথে কথা বলেছি।
আর এই ভাবেই প্রধানা শিক্ষিকার সহায়তায় এবং ছাত্র ছাত্রীদের সহযোগিতায় এই প্রকল্পটির প্রথম এক্টিভিটি সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। যখন আমরা সমস্ত কাজ করছিলাম, প্রজেক্ট এর খাতায় যেহেতু লাগবে ,সে কারণে আমরা ছবি তুলে রেখেছিলাম।। সেই ছবিগুলোই আপনাদের সাথে শেয়ার করলাম।
আজকে এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী পোস্টে পরবর্তী অ্যাক্টিভিটি নিয়ে আলোচনা করব।
আপনি যেহেতু শিক্ষিকা হওয়ার জন্য পরীক্ষা দিয়েছেন এবং আপনার ট্রেনিং আপনার নিজের স্কুলে পড়েছে সেটা জানতে পেরে তো আসলে বেশ খুশি হয়েছে কেননা এখানকার সব মানুষ আপনার পরিচিত এই আঙ্গিনা আপনার ছোটবেলার খেলার সাথে এই আঙ্গিনায় আপনি আপনার ট্রেনিং সম্পূর্ণ করেছেন এবং এসেম্বলি করার সময় আপনারা কি কি করেছেন সেই বিষয়টা আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।