বৌদির সাথে কেনাকাটা

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। গতকাল আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করেছিলাম মৌসুমী বৌদির জন্মদিন সেলিব্রেশন। গতকাল বৌদির জন্মদিন সত্যিই অনেক সুন্দর হয়েছে। ছোটখাটো আয়োজন হলেও, মুহূর্তগুলো স্মৃতিতে ধরে রাখার মত।

যাইহোক আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি বৌদির জন্মদিন সেলিব্রেশন এর আগের দিন। আমি গতকালকেই বলেছিলাম যে আজকে সেটা শেয়ার করব। গতকাল ৩০ তারিখ বৌদির জন্মদিন ছিল, ২৯ তারিখে হঠাৎ করেই আমাদের ভীষণ সুন্দর সময় কাটে। বেশ ভালই ঘোরাঘুরি আর শপিং হয়।

সেদিন সকাল বেলা থেকে ক্রমাগত বৃষ্টি পড়ছে। বৃষ্টির মধ্যে কেউ বার হতে চায় না বাড়ি থেকে। আর আমি তার উল্টো। বৃষ্টি হলে বরঞ্চ ভিজতে ভালো লাগে। ভালো লাগে বৃষ্টির দিনগুলোতে বের হতে। আর বের হয়ে পছন্দের খাবারগুলোকে খেতে। যখন বারোটা বাজে দুপুর, হঠাৎ করে এই বৌদির সাথে আমার প্ল্যান হয় বেরোনোর। বৌদির নিজেরও কাজ ছিল। আর আমারও বৌদিকে গিফট কিনে দিতে হবে। সেই সূত্রে বেরোনো হলো।

আমরা বাড়ি থেকে প্ল্যান করেছিলাম একেবারে চলে যাব আমাদের কৃষ্ণনগরে সেন্ট্রাম শপিং মলে। সেখানে zudio ওপেন হয়েছে। ওপেন হওয়ার পর থেকে বৌদি একবারও সেখানে যায়নি। তাই বৌদিরও খুব যাওয়ার ইচ্ছা ছিল। বৌদি জন্মদিনে যে জামাটা করবে বলে অর্ডার দিয়েছিল ফ্লিপকার্টে। সেটা আসতে লেট হতে পারে। তাই আমরা ঠিক করছিলাম যদি ওখান থেকে কোন ড্রেস পছন্দ হয়ে যায় বা শপিংমলের অন্য কোন দোকান থেকে, তবে ফ্লিপকার্টের এই অর্ডারটা ক্যান্সেল করে দেব।

যাইহোক আমরা সেই প্লান মাফিক ওই বৃষ্টির মধ্যে ছাতা নিয়ে টোটো ধরলাম। আমাদের বাড়ি থেকে বিগ বাজারে যেতে টোটো ভাড়া লাগলো ৬০ টাকা। বেশ অনেকটা রাস্তা। তার ওপর বৃষ্টি পড়ছে। কুড়ি মিনিটের মধ্যে আমরা পৌঁছে গেলাম সেখানে। এর আগেও আমি আমাদের কৃষ্ণনগরের জুডিওতে এসেছি । তাই আমার কাছে ব্যাপারটা নতুন ছিল না। তবে বৌদিকে সাথে করে নিয়ে যেতে পেরে ভালো লাগলো।

বৌদি আর আমি মিলে অনেকগুলো জামা দেখলাম। সেগুলোকে ট্রায় করলাম। তবে কোন জামাই ঠিকভাবে পছন্দ হচ্ছিল না। বৌদি, দাদার জন্য এটা ওটা দেখতে মেন সেকশনেও গেল। তারপরে আমরা যা যা কিনেছি সেগুলো হল - আমার একটা নাইট স্যুট, যেটা ৭০০ টাকা দাম নিয়েছে। এর সাথে আইলাইনার ৯৯ টাকার। সিট মাস্ক আর নেলপলিস রিমুভার। সব মিলিয়ে আমার খরচ হয়েছে 900 টাকা। অর্থাৎ ভারতীয় দামে ৭৫ steem।
ওদিকে বৌদি কিনেছে কনসিলার আর পারফিউম।

আমরা ওখান থেকে খুব হতাশ মুখে বার হলাম যেহেতু বৌদির কোন জামা কাপড় পছন্দ হচ্ছিল ছিল না। তারপর আমরা শপিংমলেরই আরেকটা দোকানে ঢুকলাম। সেটার নাম ইজি বাই। যে জামাগুলো পছন্দ হয় সেগুলো সবকটাই একেবারে স্লিভ লেস। আর বৌদি সেটা চাইছিল না। ওখানে ওখানে কোন দেখার পর ওখান থেকে বেরিয়ে আসলাম। তারপর আবার ট্রেন্ডস এ ঢুকলাম। ওখানে কোনরকমে একটা জামা যাওয়া পছন্দ হলো কিন্তু সেটার দাম প্রচুর। আরে সাথেই জামাটার আবার ফুলহাতা। একটা হয়তো আর একটা হয় না। এসব এর জন্য আমাদের বিরক্ত লেগে গেছিল।। এ কারণে আমরা ওখান থেকে আবার টোটো নিয়ে আমাদের কৃষ্ণনগর শহরের ভেতরে মার্কেটের দিকে আসলাম।

বৌদির সাথে সেন্ট্রাম মলে

প্রথমেই এসে মৌসুমী বৌদিকে জন্মদিনের উপহার কিনে দিলাম।। বৌদিকে একটা টু পিস আর শর্ট কুর্তি কিনে দিলাম। এর সাথে আমি নিজেও একটা শর্ট কুর্তি নিলাম। বৃষ্টির মধ্যে এসব কিনতে আর ঘুরতে বেশ ভালই লাগছিল। তবে আমরা কিন্তু কিছু খাওয়া দাওয়া করিনি। জামাকাপড় ঠিকঠাক ভাবে পছন্দ হচ্ছে না দেখে মন মেজাজ এমনিতেই গরম হয়ে গিয়েছিল।

কেকের দোকানে

বৌদির গিফট কেনা হয়ে গেলে চলে গেলাম কেক কিনতে। যেহেতু খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত তাই জন্মদিনের দিন বার হওয়া যাবে কিনা এ কারণেই আগের দিন কিনে রাখা। বাটারস্কচ ফ্লেভারের কেক কেনা হল ক্রিমজ থেকে। এটা অপূর্ব খেতে ছিল। এত অল্প দামে কেকটা এত সুন্দর খেতে!

আয় লায়নার

ওখানে কাজ হয়ে যাওয়ার পর আবার আমরা চলে গেলাম সোনার দোকানে। মৌসুম বৌদি নিজের জন্য সোনার কানের দুল দেখছিল। এখন সোনার দাম প্রচুর। ভারতীয় দামে প্রতি ১০ গ্রামে ৯১/৯২০০০ টাকা আপ ডাউন করছে। এত তাড়াতাড়ি সোনার দাম এরকম ভাবে বেড়ে যাবে আমরা কল্পনা করতে পারিনি।। সামান্য সামান্য সোনার জিনিসের দাম আকাশ ছোঁয়া। তার সাথে মজুরি আর জিএসটি তো রয়েছে। বৌদি সেদিনকে কিছু কেনেনি সোনার। তবে জিনিসগুলো দেখে নিল।

আমরা যা যা শপিং করেছি

আমার মনে আছে আমরা বাড়ি থেকে বার হতে হতে দেড়টা বেজে গিয়েছিল। পৌঁছেছিলাম দুটোর সময়।। আর বাড়ি এসেছি তখন বাজে চারটে দশ। খুব একটা বেশি কিছু না কেনাকাটা হলেও ঘোরাঘুরিটা ভালোই হয়েছে।। সমস্ত ছবি তুলতে না পারলেও যে কটা তুলেছি তাই আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম।

আমার নিজের কাজের চাপে বৌদির সাথে অনেকদিন ঘুরতে বেরোনো হয় না। বৌদি ও এখন ব্যস্ত থাকে, ব্যবসার কাজে, এই কারণে ওরো অসুবিধা হয়।। একটা সময় আমি আর বৌদি মিলে প্রচুর ঘুরতাম। গত পরশু অনেকদিন পর ওর সাথে ঘুরতে বেরিয়ে আমার সত্যিই অনেক ভালো লেগেছে।