বাড়িতে পুজোর দিন - ষষ্ঠ পর্ব
নমস্কার বন্ধুরা, আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আজকেও আমি আপনাদের সকলের সাথে আবারও আমার বাড়ির পুজোর দিনের গল্প শেয়ার করতে চলেছি। কাল যেখান থেকে শেষ করেছিলাম, তারপর থেকেই শুরু করছি।
চেয়ার টেবিল উঠানো নামানো এই সমস্ত ঝামেলা হয়ে যাওয়ার পর, সকলকে এক জায়গায় করা অনেক মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছিল ।কারণ রীতিমতো তখন এক এক করে লোকজন আসা শুরু হয়ে গেছে। আর ভালই লোকজন চলে এসেছে।
এইবার সবথেকে আনন্দের বিষয় হলো সেদিনকে আমার পার্টনার এবং ওর পরিবারও এসেছিল। আমার পার্টনার আমাকে দুপুরবেলা থেকে বারবার বলছিল যে, ও আসবে না। আমার সাথে মজা করে রাগারাগিও করেছে। এমন বাজে ছেলে ! পুজোর দিন বিকেল বেলায় আমার মুডটা অফ করে রেখেছিল এই কারণে।
আমি সত্যি ভেবেছি ও হয়তো আসবে না। এই নিয়ে আমার সাথে সন্ধ্যেবেলা থেকেও ঝামেলা করছিল ।পরে যখন দেখি এসছে ,আমি সত্যিই অনেক সারপ্রাইজ হয়ে গেছি ।আর স্বাভাবিকভাবেই অনেক আনন্দ হয়েছে।। ও আসার পরে আমি আমার পিসতুতো দাদার বউ অর্থাৎ আমার বৌদি আর ও মিলে কিছু ছবি তুললাম। তারপর ওরা সকলেই প্রসাদ খেলো।
এরপর ঈশানের জন্য যে কেক দুটো আনা হয়েছিল ,সেই দুটো কেক এবার কাটতে হবে। তাই সব বাচ্চাদের এক জায়গায় করার চেষ্টা করতে লাগলাম। বাড়িতে কে কোথায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, ডেকে ডেকে কূলকিনারা পাওয়া যায় না।। সকলে যে যার কাজে ব্যস্ত। অত লোকজনের মধ্যে আমি একবার ওপর একবার নিচ করে বেড়াচ্ছি ,সবাইকে ডাকছি।
এর সাথে আমার মা-বাবা তো সেদিনকে মনে হচ্ছে আমাকে চেনেই না। কতবার যে মা আর বাবাকে ডাকছি ঈশানের পাশে এসে দাঁড়ানোর জন্য। আমার বাবা তো পাত্তাই দিচ্ছিল না। আসলে বাড়িতে সকলে এসেছে তাই সকলের সাথে কথা বলতে ব্যস্ত ছিল। আমার মাকে একটু রাগারাগি করতেই মা চুপ করে এসে ঈশানের পাশে দাঁড়ালো।
সেদিনকে ঈশানের বন্ধুরাও এসেছিল। ওর স্কুলের একটা বন্ধু অভিরূপ এসেছিল। আর বাকি আমার বাবার বন্ধুদের ছেলেরাও ওর বন্ধু হয়, তো ওরাও ছিল। ঈশানের কেক দুটো দেখে আমি সত্যি অনেক খুশি হয়েছি। সোমদত্তা সুন্দর করে কেক দুটো বানিয়েছে, যেমনভাবে ভাই চেয়েছিল। Bmw কেকটা, ওর সবথেকে বেশি পছন্দ।
ওই কেকটা আমি ভ্যানিলা ফ্লেভার এর করতে বলেছিলাম। খুব সুন্দর ভাবে চাবির রিং এর গায়ে ঈশানের নাম লিখে কেকটা ভালোভাবে ডিজাইন করেছে । আর এর সাথে স্পাইডারম্যানের কেকটাও অসাধারণ বানিয়েছিল ,ওটা চকলেট কেক ছিল।
এই দুটো কেক পরপর সাজিয়ে রেখে সকলকে কোনরকম ভাবে এক জায়গায় করে কেক কাটিং হলো। এদিকে ছবিতে দেখতেই পাবেন আমাদের নিলয় দাদা কিভাবে কান্নাকাটি করছে, ঈশান যখন কেক কাটছে। আমি তো অত কিছু ফলোই করিনি হুটোপাটার মধ্যে। পরে যখন ভিডিওটা দেখতে বসলাম ,তখন দেখছি নিলয় কাঁদছে।
পরে বুঝলাম ভিডিওটা দেখার পর আসলে নিলয় কেক খাওয়ার জন্য ভীষণ পরিমাণে কান্নাকাটি করছিল প্রথম থেকে।। এর ওপর ওর কেক কাটতেও ভালো লাগে। ও চাইছিল ঈশান কাকা ,একদম ঠিক ঈশান ওর কাকা হয় সম্পর্কে। এত ছোট কাকা ভাবা যায়!!! যাইহোক ও চাইছিল ওকেও মাঝখানে দাঁড় করিয়ে রেখে কেক কাটা হোক। কিন্তু এসব তো মাথাতেই ছিল না।।
ওই জন্য প্রচন্ড পরিমাণে কান্নাকাটি করছিল। ভিডিওতে দেখলাম যখন কেক কাটার পরে ওকে কেক দেওয়া হল তখন গিয়ে ও চুপ হয়েছে। আমার ওর কান্না কাটি করা মুখটা দেখে সত্যিই খারাপ লাগছে বারবার। বাচ্চারা এই ছোট ছোট ম্যাটারগুলো খুব ক্যাচ করে। আর ওদের মনে খুব আঘাত পায়। আমি যদি ঠিকভাবে দেখতাম, সত্যিই আমি ওকে মাঝখানে দাঁড় করিয়ে রাখতাম ,আমার সত্যিই অনেক ভুল হয়ে গেছে।
যাইহোক আজকে এখানেই শেষ করছি পোস্ট। পুজোর দিনের শেষ পর্ব আগামীকাল শেয়ার করব।