নীলিমা - স্বরচিত কবিতা

in Incredible India4 days ago

নমস্কার বন্ধুরা। আশা করছি সকলে সুস্থ আছেন। গত কালকে রাতে এই পোস্টটা করার কথা ছিল। ভেবেছিলাম কবিতাটা লিখে পোস্ট করে ফেলব। কবিতাটা হঠাৎ করেই মাথাতে আসে গতকাল। রাতের বেলায় লিখতে লিখতে অনেকটা সময় চলে গেছে। কবিতাটা লেখা শুরু করলেও শেষের দিকে এসে কিছুতেই আমি নিজের মনকে ভরাতে পারছিলাম না। অনেকবার কাটাকুটি করেছি। তবে গিয়ে এত সুন্দর একটা কবিতা শেষ হয়েছে।

1000230358.jpg
নীলিমা

আমি জারুল বনে
জারুল সেজে থাকি ।
নীলমণি লতায় বিলীন করে শরীর
তোমার আদলে
নিজেকে বাঁচিয়ে রাখি।

গ্রীষ্মের ঝড়ে উড়িয়ে দিয়ে সময়
ময়ূরের মেঘে বসন্তের হাসি ডাকে ।
ফুলের পাপড়ি সোনালী রোদের আলোয়
আমার মতন আহ্লাদে মেখে থাকে।

কবি পরিচিতি এখনও আছে বাকী ।
তোমার গন্ধে বিশ্বাসটুকু পাই।
নিঃশ্বাসে যার হারিয়ে গেছে মায়া,
সেও তো তোমায় আমার মতন চায়।

শেষ দেখাটা মনে পড়ে কী তোমার?
সোহাগী ফুলের বৃষ্টি নামলো যবে,
নীল কৃষ্ণচূড়ায় সময় বন্দি হলে,
তোমার সাথে কী আবার দেখা হবে?

1000230360.jpg

গত পরশু যখন কলেজ যাচ্ছি তার আগে একবার স্কুলে যেতে হয়েছিল। স্কুলে অর্থাৎ যেখানে আমার বিএডে ট্রেনিং পড়েছে যেখানে আমি বিএড এর থার্ড সেমিস্টারের টিচিং করছি তবে নিজের শরীরের সমস্যার কারণে এবং হাতের সমস্যার জন্য মোটামুটি বেশ অনেকদিন আমি রেস্টে ছিলাম। সেই সংক্রান্ত ব্যাপারেই এইচএম এর সাথে কথা বলতে আমাকে স্কুলে যেতে হয়েছিল।

আমার স্কুল গাছপালায় ভরপুর। কৃষ্ণনগরের হাফ অক্সিজেন বোধহয় আমাদের স্কুল থেকেই আসে। স্কুলে এত পরিমাণে গাছ আছে, যে মন ভরে যায়। আমাদের এখন এইচএম যিনি আছেন অর্থাৎ প্রত্যুষাধি স্কুল টাকে আরো সুন্দর করে সুন্দর সুন্দর গাছ দিয়ে রংবাহারি ফুলের চারা কিনে নিয়ে আসে আরও সুন্দর করে তুলছেন।

স্কুলে প্রচুর গাছ । কিন্তু কিছু কিছু গাছ সেই একই রকম ভাবে ঠাই দাঁড়িয়ে আছে। যবে আমি স্কুল থেকে বেরিয়ে ছিলাম তখনো এদেরকে দেখেছি। আবার এখন যখন স্কুলে যায় তখন ও এদের সাথে দেখা হয়। এদের সাথে আমার বহু পুরনো সম্পর্ক। সম্পর্কগুলো মাঝেমধ্যে নাড়া দিয়ে ওঠে। অদ্ভুতভাবে কিছু আদব কায়দায় এরা বুঝিয়ে দেয় আমাদের জীবনে এদের কতটা অস্তিত্ব আছে।

প্রত্যেকদিনের ব্যস্ততায় বইপত্রের ব্যাগ হাতে স্কুলের মধ্যে ঢুকি আবার স্কুল থেকে বেরিয়ে যাই ,কখনো কখনো মন ভরে চারিপাশটা দেখি, কখনো কখনো দেখার সময়টা থাকে না।

গত পরশুর গল্প বলি। স্কুলে যখন আমি ঢুকলাম। তখন বেশ তাড়াহুড়োর মধ্যে ছিলাম। কাজের কাজ কিছু না হলেও স্কুল থেকেই আমার কলেজে যাওয়ার ছিল। তাই আবার ধীরেসুস্থে বেরিয়ে আসলাম। স্কুলের বিল্ডিং থেকে স্কুলের মেন গেট অব্দি একটা লম্বা রাস্তা আছে।। রাস্তার দুই পাশে গাছেদের রাজত্ব। কিছুটা চলতে চলতে আসছি, কানে হেডফোনে গান শুনছিলাম, হালকা হাওয়া দিচ্ছিল। আর রোদের তাপটাও বেশ অল্প ছিল।

কিছুটা এগিয়ে আসার পরেই দেখলাম আমার গায়ের উপর ফুলের পাপড়ি ঝরে পড়তে লাগলো। বেগুনি রংয়ের পাপড়ি গুলো উড়তে উড়তে আমার গায়ের উপর পড়ছিল। ওই সময় আমার ভেতরের অনুভূতি আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না। উপরের দিকে তাকিয়ে দেখি একটা বিরাট বড় গাছ। ওর দিকে তাকিয়ে মনে পড়ল ওকে তো আমি এর আগেও দেখেছি। কিন্তু তখন ওর ফুল ছিলনা। গাছের প্রত্যেকটা ডালে থোকা থোকা হয়ে বেগুনি রংয়ের নীল কৃষ্ণচূড়া ফুটে আছে। আর হালকা হাওয়াতে নিজেকে বিলীন করে দিয়ে ওরা হাওয়ার তালে তালেই মাটিতে ঝরে পড়ছে। আর ফুলের বৃষ্টি হচ্ছে।

আমি খুব আনন্দ পেয়ে গেলাম। নিচের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, রাস্তা জুড়ে বেগুনি রংয়ের ফুলের পাপড়ি গুলো এমন ভাবে পড়েছে যে রাস্তাটা ভরে গেছে। সাথে সাথে গাছটার একটা ছবি তুলে নিলাম। তখনই ভেবেছিলাম ওকে নিয়ে কিছু একটা লিখব।

গতকালকে রাতের বেলায় হঠাৎ করে ওর কথা মনে পড়ল। মন প্রাণ দিয়ে লিখতে বসে গেলাম। আপনাআপনিই লেখা বেরতে লাগলো। Google লেন্সে অনেকক্ষণ ধরে সার্চ করার পর, জানতে পারলাম এই গাছটার নাম নীল কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়াও নীল হয়! সত্যিই আমার জানা ছিল না। একি অদ্ভুত অনুভূতি আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না।

ওই সুন্দর রাস্তাটা পার করেই আমার সাথে আমার ভদ্রলোকের দেখা। সে আমাকে নিতে এসেছিল। সব মিলিয়ে নিজের সমস্ত অনুভূতি কবিতায় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।

1000230359.jpg

আপনাদের সাথে শুধু মুহূর্তটা বর্ণনা করলাম। নীল কৃষ্ণচূড়ার সাথে আমার ঠিকঠাক ভাবে পরিচয় হলো সেদিন। আমার অনুভূতিগুলো সব কবিতা জুড়ে আছে। আজ এখানেই শেষ করছি। কবিতাটা আপনাদের ভালো লাগলে। অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।

Sort:  

Thank you for sharing on steem! I'm witness fuli, and I've given you a free upvote. If you'd like to support me, please consider voting at https://steemitwallet.com/~witnesses 🌟

Loading...
Loading...