বাড়ির কাজ প্রায় শেষের পথে
নমস্কার বন্ধুরা।আশা করছি আপনারা সকলে সুস্থ আছেন। আগামী কাল পরীক্ষা আর গতকাল বাড়িতে একটা বড় অনুষ্ঠান ছিল ,সব মিলিয়ে এত ব্যস্ততার মধ্যে কিছুতেই পোস্ট লিখে উঠতে পারিনি। তাই আমি দুঃখিত। আজকে তাই সকাল সকাল পোষ্ট লিখতে বসে গিয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সকলের সাথে শেয়ার করতে চলেছি একটু অন্যরকম পোস্ট।
একটা মানুষের বিভিন্ন ধরনের শখ থাকে। শখগুলো সকলেরই যে সমান হয়, তা নয়। তবে মানুষ ভিত্তিক ভিন্নতা পেয়ে থাকে ।ছোটবেলা থেকে আমার ভীষণ শখ ছিল নিজের ঘর নিজের জায়গাটাকে নিজের মতন করে গোছানো। কিন্তু সম্ভব হয়ে ওঠেনি কখনোই, কারণ বাড়ি ভর্তি মানুষ জন ।প্রচুর লোকজন ,জয়েন্ট ফ্যামিলি। সব সেই সময় সবার ছিল। আমার বলতে কিংবা নিজের বলতে কিছু ছিল না কারোরই।
আস্তে আস্তে যে যার কাজে ব্যস্ত হয়ে যেতে থাকলো, যে যার মতন সরে গেল ।জয়েন্ট ফ্যামিলি ভেঙ্গে ভেঙ্গে খানখান হয়ে গেল। ওই সময়ের মধ্যে যে অফুরন্ত মজা ছিল ,তা যে আজ নেই ,সেটা আমি বলতে পারব না। কারণ আমার বাড়িতে এখনো সেই একই রকম পরিবেশ আছে। সকলে একত্র ভাবে জড়ো হই আমরা যখন ,তখন একই রকম মজাটা পাই।
কিন্তু এই নিজের বাড়ি করার একটা শখ সবার থাকে ।আমাদের যে বাড়িটা সেটা আমার দাদুর বাড়ি। দাদুর ভিটে। বাবা কখনো এই ভিটে ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চায়নি ।এই ভিটে থেকে আলাদা হয়ে অন্য কোথাও যাওয়ার কথা আমিও কল্পনা করিনি। শুধু কল্পনা করেছিলাম ছোট থেকে যে ওপরে চাইলে আমরা আরো বাড়াবো অর্থাৎ বিল্ডিংটা একটু বড় হবে।
তবে বাড়ি করা যে একটা বীভৎস টাকা-পয়সা খরচ করা ,সেটা আমরা আগে থেকেই জানতাম। ফালতু ফালতু বাড়ি তে কাজ করে কোন লাভ নেই, ওর থেকে ওই টাকা নিজের জন্য ফিক্স করে রাখা ভালো। অথবা ভবিষ্যতের জন্য আলাদা করে রাখা ভালো। কিন্তু বাড়ি করার শখ একটা অদ্ভুত শখ ।আমার মায়ের প্রথম থেকেই ছিল। আর আমি যখন একটু বড় হলাম তখন নিজের জন্য আলাদা করে একটা ঘর নিজের মন মতো করে কিছু কিছু জায়গাকে সাজিয়ে তোলা ,একটা আলাদাই শখ জাগলো।
তাই বাবা বাড়ির কাজে হাত দিয়েছিল। দেখতে দেখতে বাড়িটা কিভাবে তৈরি হয়ে গেল। আস্তে আস্তে সমস্ত কাজ ফিনিশ হয়ে যেতে থাকলো। এই ওপরের ঘর গুলোর প্রত্যেকটা রং প্রত্যেকটা টাইলস প্রত্যেকটা কোণ কিভাবে হবে, তা পুরোপুরি আমি আর আমার মা আর বাবা মিলে প্ল্যানিং করে নিয়েছিলাম।। বেশিরভাগ প্ল্যানটা কিন্তু আমার। আমার নিজের ঘরটা দেখলে আমি অবাক হয়ে যাই।
আজকের যে ছবিগুলি পোস্ট করছি, সেগুলো এক সপ্তাহ আগের। এক সপ্তাহ আগেও বাড়িতে তখন কাজ হচ্ছে। প্রায় দু তিন ঘণ্টা ধরে বাড়ির কি রং ভাবতে সময় চলে গেছে। এদিকে রংয়ের মিস্ত্রীরা চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। ওরা রোজে কাজ করে। তাই বিরক্ত হয়ে বলতেই লাগলো, কাকা তোমরা তাড়াতাড়ি কর, না হলে তো সময় চলে যাচ্ছে, আর বেলা যেতেই তো আমাদের টাকা নিয়ে বাড়ি যাবো আমরা।
আসলে বাড়িটায় কি রং হবে,এটা কিন্তু সত্যিই একটা বড় ডিসিশন। কারণ এই জিনিসগুলো মন মত না হলে সত্যিই সকলের ভেতরে একটা খুঁতখুঁতে ব্যাপার কাজ করে। অবশেষে অনেক চিন্তা ভাবনা করার পর এরকম একটা রং পছন্দ করা হয়েছিল। রং পছন্দ করার পর সেই রং ঠিকভাবে আনতে গিয়েও অনেকক্ষণ লেগে গেছে।
বাড়ির কাজ গুলো আস্তে আস্তে ফিনিশ যখন হতে থাকলো তখন মনে যে কি আনন্দ হচ্ছিল ,আর মনে হচ্ছিল কত তাড়াতাড়ি এই বাড়ীর কাজ ফিনিশ হবে আর ওপরে আমরা পুজো দিয়ে উঠতে পারব।।
কিন্তু আমাদের মনের মধ্যে ফুর্তি হলেও যারা কাজ করছে তাদের যে কি কষ্ট হচ্ছিল ,তা বুঝতে পারছিলাম । এই প্রচন্ড তাপ গরম চারিদিকে, একেবারে রুক্ষ সুক্ষ অবস্থা। তার ওপর একদম বৃষ্টি নেই। যে মানুষ একটু শান্তিতে কাজ করবে। এই রোদের মধ্যে এই টানা রোদের মধ্যে মাচা করে করে অত উঁচুতে উঠে এরা আমাদের বাড়ির রং করছে। আর আমরা এসি ঘরে আরাম করে বসে আছি।। এ দৃশ্য সত্যিই খারাপ লাগে। তাই যতটা পারা যায় সবসময় চেষ্টা করেছি যারা বাড়িতে কাজ করছে তাদেরকে সাহায্য করার।
প্রত্যেকদিন রীতিমতো শরবত, ঠান্ডা ঠান্ডা দই, সকাল-বিকেল ওদের স্বাদমতো চা, কখনো কখনো ওদের পছন্দের খাবার। সমস্ত কিছু দিয়েই ওদেরকে একটু হলেও সাহায্য করার।
আর আমার বাবা আর একরকম মানুষ। ওরা কষ্ট করে রোদের মধ্যে কাজ করে বলে ,বাবা ওদের পেছন পেছন থাকে। ওরা রং করছে, রং তুলছে, তাও বাবা টানা রোদের মধ্যে ওদের সাথে দাঁড়িয়ে থাকতো। এই বাড়ির কাজ যবে থেকে শুরু হয়েছে ,আমার বাবা নিজের কাজ বন্ধ করে রেখেছে। স্বাভাবিকভাবে বাড়িতে কাজ চললে কাউকে না কাউকে থাকতে হয়। আর বাবা ছাড়া কে থাকবে এখন।
যাইহোক, মোটামুটি বাড়ির কাজ ফিনিশ ।আজ এখানেই শেষ করছি। সকলে ভালো থাকবেন।
একটা বাড়ি তৈরি হওয়া মানে তার কি রং হবে? কোথায় কি হবে খুবই চিন্তার বিষয়। যাই হোক তোমাদের বাড়িটা বেশ অনেকদিন পর পুরো কমপ্লিট হল। আমারও দেখে ভীষণ ভালো লাগছে। গাড়ির সমস্যা কিছুই খুব ভালোভাবে সুসম্পন্ন করেছ দেখতেও অসাধারণ লাগছে। বাড়ি গৃহপ্রবেশ হয়ে গেল খুব ভালোভাবে। সবকিছুই খুব সুন্দর হয়েছে।