মানব পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যে নাজেহাল মানুষ

কেমন আছেন বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


পত্রিকার পাতায় একটা খবর দেখে খুব খারাপ লাগলো। খবরটা আমাদের এলাকারই। মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়ে আমাদের জেলার এক তরুণ লিবিয়ায় বন্দী দশায় জীবন কাটাচ্ছে। মানব পাচারকারীরা তাকে নির্যাতন করে সেই ভিডিও তার বাড়ির লোকজনের কাছে পাঠিয়েছে আরো টাকার জন্য। এই ধরনের খবর এখন প্রায়ই দেখতে পাই। শাকিল মিয়া নামের সেই তরুণ স্থানীয় এক লোকের মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করেছিলো। সে সেই লোককে সে ১২ লক্ষ টাকাও দিয়েছিলো ইতালি যাওয়ার জন্য। সেই পাচারকারী দলের সদস্য তাকে ইতালির কথা বলে লিবিয়ায় পাঠিয়ে দেয়। সেখানে গিয়ে শাকিল মিয়া আরেক দল মানব পাচারকারীর খপ্পরে পড়েন।

Black and Gold Fancy New Year Card_20240415_234851_0000.png

তবে এই গ্রুপ আরো ভয়ংকর। তাদের কাজ হচ্ছে অবৈধভাবে বিদেশগামীদেরকে আটক করে তাদেরকে নির্যাতন করে তাদের পরিবারের কাছ থেকে আরো টাকা আদায় করা। এইভাবে আমাদের দেশের বহু পরিবার সর্বশান্ত হচ্ছে। বহু মানুষ তাদের জীবন হারাচ্ছে। অনেকে আছে সময় মতো টাকা পাঠাতে না পারার কারণে তাদের সন্তানকে হারাচ্ছে। অবৈধভাবে বিদেশ যেতে গিয়ে প্রতিবছর আমাদের দেশের এমন বহু মানুষ সর্বশান্ত হচ্ছে। যদিও এখন দেশের মানুষ জন এই মানব পাচারকারীদের সম্বন্ধে মোটামুটি ভালোভাবেই জানে। তার পরেও অনেকেই লোভের বশবর্তী হয়ে এদের কথা বিশ্বাস করে ফেলে। আর এই মানব পাচারকারীরা বিভিন্ন মানুষকে বিভিন্ন রকমের লোভ দেখায়। তাদেরকে উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন দেখায়। এই স্বপ্ন দেখিয়ে সে দেশের যুবক তরুণদেরকে বিভ্রান্ত করে। তাদেরকে বিদেশ যাওয়ার জন্য রাজি করায়। এই সমস্যাটা দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের দেশে চলে আসছে। কিন্তু এটার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া দেখলাম না। এসব মানব পাচারকারীরা প্রায়ই পুলিশের কাছে গ্রেপ্তার হয়। পরে পুলিশকে ঘুষ দিয়ে তারা আবার বাইরে চলে আসে। জেল থেকে বের হয়ে তারা আবার একই কাজে লিপ্ত হয়।

অথচ এদেরকে যদি কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে এদের দৌরাত্ম অনেকটাই কমে যেতো। কিন্তু পুলিশের এবং বিচার বিভাগের দুর্নীতির কারণে এই মানব পাচারকারী চক্রের মূল হোতারা সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায়। মূল হোতাদের কথা তো বাদই দিলাম। এমনকি মাঠ পর্যায়ের মানব পাচারকারীরাও তেমন কোন সমস্যা সম্মুখীন হয় না। কারণ তাদের নামে মামলা হলে তারা পুলিশকে টাকা দিয়ে সেই মামলা থেকে বেঁচে যায়। যার ফলে এই ধরনের কর্মকাণ্ড তারা বন্ধ করে না। এরফলে ভোগান্তিতে পড়ছে দেশের সাধারণ মানুষ। এই সমস্যা থেকে আমাদের বাঁচতে হলে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। প্রশাসনকে আরো করা নজরদারি করতে হবে। এই মানব পাচারকারীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলেই এই রকমের ক্ষয়ক্ষতি থেকে দেশের যুবসমাজ ও তাদের পরিবার বাঁচতে পারবে।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



ধন্যবাদ

Sort:  
 last year 

আসলে সঠিকভাবে তদন্ত করতে গেলে দেখা যায়, মানব পাচারকারীদের সাথে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতম কর্মকর্তাদের সাথেই ভালো সম্পর্ক রয়েছে। যার ফলে তাদেরকে আইনের আওত আনা যাচ্ছে না। তারা সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। মানুষ স্বপ্ন নিয়ে বের হয় ভালো একটা দেশে যাবে, পরিবারের অভাব অনটন দূর করবে। অথচ আদম ব্যবসায়ীরা তাদেরকে অন্য জায়গা হস্তান্তর করে আর সেখান থেকেই আবার তাদেরকে জিম্মি করে মানব পাচারকারী দল, দাবি করে মোটা অঙ্কের টাকা। এদেরকে প্রশাসন শক্ত হাতে দমন করা উচিত।

 last year 

এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই শোনা হচ্ছে। মানব পাচারকারীরা খুবই ডেঞ্জারাস। তারা টাকার জন্য মিনিটের মধ্যেই মানুষ খুন করে ফেলতে পারে। আমাদের এলাকার প্রায় ৭/৮ জন লিবিয়া থেকে ইতালি গিয়েছে ৩/৪ বছর আগে। ২/৩ জন ইতিমধ্যেই গ্রীন কার্ড পেয়ে বাংলাদেশে ছুটিতে এসেছে। তাদের ভাগ্য আসলেই খুব ভালো। যাইহোক সরকারের উচিত মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা। তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।