রহিম মিয়ার সততা🤝 (সত্য ঘটনা)
০৩মাঘ , ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
১৭জানুয়ারী , ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
২৩জমাদিউল সানি, , ১৪৪৪ হিজরী
মঙ্গলবার।
শীতকাল।
আসসালামু আলাইকুম,আমি মোঃআলী, আমার ইউজার নাম @litonali।আমি বাংলাদেশ থেকে। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি [আমার বাংলা ব্লগ] এর সবাইকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়ে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি
আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকলের সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ু কামনা করে আমার আজকের পোস্ট শুরু করছি। আজকের পোষ্টটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব রহিম মিয়ার জীবনী নিয়ে কিছু কথা। আমি চেষ্টা করেছি ওনার জীবনের গল্প শুনে কিছুটা হলেও ও অনুশোচনা প্রকাশ করার জন্য। আসলে সময় এবং নদীর স্রোত যেমন থেমে থাকে না তেমনি জীবনেও গতিশীল। আগামী দিনগুলোতে আমাদের জন্য কি অপেক্ষা করছে আমরা কিন্তু কেউ জানিনা এমন কি কেউ এটা নিয়ে কোন কল্পনাও করতে পারিনা। যদিও কল্পনা করি তাহলে সেটা কি বাস্তবে রূপ নেয় মোটেও না একটা ভাবলে অন্যটা হয়। যা হোক চলুন আজ শুরু করি রহিম মিয়ার জীবনের কিছু কথা।
জীব মাত্রই মরণশীল। এর মানে জন্মালে মৃত্যুবরণ করতে হবে এর থেকে পৃথিবীর বুকে বড় সত্য কথা আর কিছু হতে পারে না। আমরা যে বিশ্বাস করি মৃত্যুর পরে আমাদের হিসাব-নিকাশ হবে বিচার হবে কিন্তু আমরা সেই বিচার দিনের জন্য কি গুছিয়ে নিয়ে যাচ্ছি পৃথিবী থেকে একটু ভাবুন তো। মরতে তো হবেই আর শেষ বিচারের দিন আমাদেরকে সবাই একত্র হতে হবে সেদিন আমাদের পালনকর্তা আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন পৃথিবীতে দেওয়া আমাদের প্রত্যেকটা সময়ের কথা। হিসাব দিতে হবে আমাদের প্রত্যেকটা জিনিসের কত আয় করেছি কত ব্যয় করেছি আর কোন পথে ব্যয় করেছি। আসলে এসব কথা ভাবতে গেলে সবকিছু বাদ দিয়ে ইচ্ছা জাগে সৃষ্টি কর্তার ধ্যানে দিন অতিবাহিত করি। এরপরেও সমাজে আমরা এমন কিছু মানুষ দেখতে পাই যাদের জীবন থেকে আমরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারি। আর তেমনি একজন ব্যক্তির জীবন নিয়ে আজ আলোচনা করব আমি চেষ্টা করেছি সব সময় তার জীবন থেকে কিছু শিক্ষা গ্রহণ করে নিজের জীবনে তার প্রতিফলন ঘটানোর।
নাম রহিম মিয়া বয়স ৯০ এর ঘরে। ছোটবেলা থেকেই শুনেছি তার জীবনের অনেক ছোট বড় গল্প। এক কথায় বলতে গেলে আমাদের এলাকার সবাই তাকে এক নামে চেনে সত্যবাদী ব্যক্তি বলে। কখনো কারো সাথে ঝগড়া ফ্যাসাদ বা কারো অন্যায় হবে এমন কোন কাজে তিনি কখনোই লিপ্ত হন না। বয়স ৯০ এর ঘরে হলেও সে এখনো নিজের কাজকর্ম নিজে করেই তার জীবিকা নির্বাহ করেন। যদিও তার রয়েছে দুইটা ছেলে এবং একটা মেয়ে। দুইটা ছেলে কৃষিকাজ করে কিন্তু দুইটা ছেলে এই সুদি কারবারের সাথে যুক্ত থাকায় তিনি কখনোই তাদের ছেলেদের সাথে মিশে জীবন ধারণ করেন না। শত কষ্টের মাঝেও চেষ্টা করেন নিজে জাহা জোগাড় করেন তাহাই খেয়ে দিন পার করার।
তার জীবনের ছোট্ট একটা ঘটনা এখন আপনাদের মাঝে শেয়ার করব। দুই সপ্তাহ আগে রহিম মিয়া মাগরিবের সালাত আদায় করে বাসায় ফিরছিল। এমন সময় রাস্তার মাঝে একটা ব্যাগ কুড়িয়ে পায়। এবং ব্যাগটা নিয়ে ওখানে প্রায় ৩০ মিনিট মতো বসে থাকে। যদি পথ চলতেই কারো হয়ে থাকে তাহলে সেটি তাকে দিয়ে দেবে। এরই মধ্যে আমি সেখানে এসে উপস্থিত হই সে আমাকে এই ব্যক্তির কথা বলে। এবং ব্যক্তি আমাকে দেয় পরবর্তীতে আমি সেই ব্যাগটি খুলি এবং খুলে দেখি তার মধ্যে প্রায় ৫০০০০ প্লাস টাকা রয়েছে। তিনি আমাকে বলছেন টাকাটা নিয়ে এখানে দাঁড়িয়ে থাকো যার টাকা হয় তাকে বুঝিয়ে দেবে। আমিতো মুরুব্বির কথা শুনে হতবাগ ।কেননা আমি নিজে হলে কি করতাম সেটা জানি না ।তবে এত কষ্টের মাঝে থেকেও অন্যের টাকার প্রতি তার বিন্দুমাত্র লোভ নেই। হয়তো তিনি বাদে অন্য কারো হাতে এই টাকা পেলে সে ভাবতো এই টাকা দিয়ে আমার অনেক উপকার হবে আমি টাকাটা কাউকে দেবো না এটা নিয়ে বাসায় চলে যায়।
ওখানে অনেকক্ষণ থাকার পরে যখন টাকার মালিকের কোন সন্ধান পেলাম না তখন টাকাটা নিয়ে বাড়ি চলে যেতে বললাম। সে বলল আমি পরের টাকা নিয়ে বাড়ি যাব না টাকাগুলো তুমি নিয়ে যাও। পরবর্তীতে ওই টাকা নিয়ে আমি বাড়ি আসলাম এবং অনেক মানুষের কাছেই বললাম আমি কিছু টাকা কুড়িয়ে পেয়েছি সঠিক তথ্য প্রমাণ দিলে টাকাগুলো ফেরত দেওয়া হবে। পরবর্তী দুদিন পার হয়ে যাওয়ার পরে এক ব্যক্তির সন্ধান পেলাম এবং সঠিক তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তার টাকা তার হাতে বুঝিয়ে দিলাম। সেই সময় ওই ব্যক্তি আমাকে কিছু দিয়ে খুশি করতে চাইলে আমি বললাম এটা আমাকে নয় রহিম মিয়া আপনার এই টাকাটি কুড়িয়ে পেয়েছে এবং আমার কাছে রেখেছে আমি যেন সঠিক ব্যক্তিকে টাকাটা ফেরত দেই। যদি কোন উপহার খুশি মনে দিতে চান তাহলে তাকে দিলেই ভালো হবে। পরবর্তীতে ওনাদেরকে নিয়ে তার বাসায় গেলাম উনি কিছু উপহার তাকে দিতে চাইলেন তিনি তো নাছোড়বান্দা কিছুতেই নিলেন না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি কিছু ফলমূল এবং শীতের পোশাক নিয়ে এসে একটু বুঝিয়ে পড়িয়ে তাকে দিয়ে গেল। আসলে এখনো পৃথিবীতে ভালো মানুষের অবস্থান আছে যার জন্যই পৃথিবীটা এখনো টিকে আছে এবং এত সুন্দর ভাবে চলছে। এক কথায় আমি রহিম মিয়া সততা দেখে এতটাই মুগ্ধ হয়েছি যে কি লিখবো আমারেই লিখনির মাঝে তাকে নিয়ে আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এই পৃথিবীতে রহিম মিয়ার মত আরও অনেক মানুষই এখনো আছে যারা আসলে কখনোই নিজের স্বার্থকে নিয়ে ভাবে না। অন্যকে কখনো ক্ষতি করতে চাই না তারা চায় সবাই সুখে থাক।
আমাদের সমাজ কি দিতে পেরেছে রহিম মিয়াদের মত ভালো মানুষের যথাযথ সম্মান। আমরা কি পেরেছি তাদের সাহায্য সহযোগিতা করতে। তাদের বিপদের সময় তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে। আসলে আমরা তো কখনো এমন মানুষের কথা কখনো কল্পনাও করি না। শুধুই ব্যস্ত থাকি নিজেকে নিয়ে। যাহোক রোহিম মিয়ার জীবন থেকে আজ ছোট একটি গল্প তুলে ধরলাম পরবর্তীতে আরো কিছু কথা শেয়ার করব অন্য দিন।
ডিভাইসঃ Redmi Note 5
VOTE @bangla.witness as witness OR
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
ধন্যবাদ
Thank you, friend!


I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
@tipu curate
Upvoted 👌 (Mana: 4/7) Get profit votes with @tipU :)
রহিম মিয়ার সততা দেখে মুগ্ধ হলাম। নিজের এরকম অবস্থা সত্বেও অন্যের টাকা কিছুতেই নিজে নিতে রাজি হলো না। অন্য কেউ হলে তো এত টাকা পেলে নিজেরা নিয়ে নিতো। রহিম মিয়ার মতো এরকম মানুষ এখন তো দেখা যায় না। এখন তো মানুষ কাকে মেরে কেক হবে সে চিন্তা থাকে।
আসলে মানুষ যেমন সততার কাছে হেরে যায় আবার মানুষ সততার কাছে জিতেও যায়। রহিম চাচাকে না দেখলে হয়তো আমি বুঝতেই পারতাম না।
আসলে ভাইয়া আমাদের সমাজে এখনো কিছু সৎ মানুষ রয়েছেন যারা শত দারিদ্রতার মধ্যেও নিজের সততাকে বিসর্জন দেয় না। তেমনি একজন লোক আপনার গল্পের এই রহিম মিয়া। সত্যি তার সততা দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। এত অভাব অনটনের মাঝেও তিনি নিজের সততাকে বিক্রি করেননি ।সত্যি অনেক উদার মনের মানুষ একজন ।আল্লাহ উনার মঙ্গল করুক এই কামনাই করি। ধন্যবাদ।
আসলে আপু ঠিকই বলেছেন এ সমস্ত সৎ মানুষের জন্য দারিদ্রতাও তাদের কাছে হার মেনে যায়।। নিজের সততা টিকিয়ে রাখার জন্য উদারতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।
আমাদের সমাজে এখনো ভালো কিছু মানুষ আছে যার জন্য পৃথিবীটা টিকে আছে। রহিম মিয়ার সততা দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। অন্যের টাকা নিজের কাছে রাখতে কিছুতেই রাজি হয়নি। অন্য কোন মানুষ হলে দেখা যেত নিজে আত্মসাৎ করে নিয়েছে। উনার মত উদার সৎ মানুষ খুব কমই আছে। আল্লাহ পাক মঙ্গল কামনা করুক সেই প্রত্যাশা করি।
একথা অবশ্য আপনি একদম ঠিক বলেছেন যদি অসৎ ব্যক্তি হত তাহলে এই টাকাগুলো নিজেই রেখে দিত কেউ জানতেই পারতো না যে টাকাগুলো কে পেয়েছে।।
রহিম মিয়ার মত এরকম মানুষ এখন তো এত বেশি দেখাই যায় না। ওনার এই সততা দেখে আমি একেবারেই মুক্ত এবং সে সাথে অবাকও হলাম। চাইলে কিন্তু উনি এই টাকাগুলো নিয়ে যেতে পারতেন কিন্তু ওনার সততা উনাকে বাঁধা দিয়েছে। এর মাধ্যমে রহিম মিয়া তার সততার পরিচয় দিয়েছে। আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা বেশ ভালো একটি ধারণা পেলাম। এরকম একটি সততামূলক পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
আসলে আপু সততার কাছে হার মেনে গেছে তার দারিদ্রতা। অনেক ভালো লাগলো আপনার গোছানো মন্তব্যটি পড়ে ধন্যবাদ