শেষ হলো ইনকোর্স পরিক্ষা।।

in আমার বাংলা ব্লগ7 days ago

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
পরম করুনাময় অসীম দয়াল মহান সৃষ্টিকর্তার নামে শুরু করিতেছি

photo_2_2024-09-22_15-25-02.jpg

হ্যালো আমার প্রিয় বাংলা ব্লকবাসি বন্ধুরা। আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আপনারা সবাই অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায়, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ কৃপায়, ভালো আছি এবং সুস্থ আছি, আলহামদুলিল্লাহ। আজকে আমি আপনাদের সাথে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়েছি। আজকে আমি আপনাদের সাথে ইনকোর্স পরিক্ষা দেওয়ার অনুভূতি শেয়ার করবো।

আমি ১২ই সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসি ইনকোর্স পরিক্ষা দেওয়ার জন্য। আমাদের বাংলা বিভাগের ইনকোর্স পরিক্ষা শুরু হয়েছিল ১৫ই সেপ্টেম্বর থেকে। আমি ঢাকাতে থাকার কারনে বই কেনা হয়নি, আর তেমন পড়াশোনাও করি নাই। ব্রাহ্মণবাড়িয়া এসে বই কিনে কয়েকদিন পড়ে মোটামুটি ভাবে ইনকোর্স পরিক্ষার প্রস্তুুতি নিয়েছিলাম। ১৫ তারিখ রবিবারে সকাল দশটা থেকে আমাদের পরিক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। আমি সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে সম্ভাব্য কিছু চ্যাপটার পড়ে নেয়। তারপর নয়টার দিকে নাস্তা করে ফ্রেশ হয়ে পরিক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য প্রস্তুুতি নিলাম।

আপনারা জানেন যে, আমার একটি ছোট মেয়ে বাবু আছে। তার বয়স মাত্র আট মাস চলতেছে। তাকে বাড়িতে রেখে পরিক্ষা কেন্দ্রে যাওয়া সম্ভব না। কারন আমাকে কিছুক্ষন পরে না দেখলেই কান্নাকাটি শুরু করে দিবে। খাবার না হয় বিভিন্ন ফল ফ্রুট, নুডুলস, খিচুড়ি খাওয়ানো যাবে। তবে আমাকে না দেখলে প্রচুর কান্নাকাটি করে। সেই জন্য পরিক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যেতেই হবে। এখন তাকে নিয়ে তো আর পরিক্ষা দেওয়া যাবে না। তবে তাকে পরিক্ষা কেন্দ্রে বাহিরে কোলে নিয়ে বসে থাকার জন্য আমার ছোট বোনকে সাথে নিয়ে গেলাম। আমি বাসার সামনে থেকে রিকশা নিয়ে সোজা কলেজে চলে গেলাম। সাড়ে নয়টার দিকে আমি কলেজে পৌছালাম। পরিক্ষার আগে আনুসঙ্গিক কিছু কাজ করে দশটার সময় পরিক্ষা কেন্দ্রে বসলাম।

photo_2024-09-22_15-26-33.jpg

photo_2024-09-22_15-26-37.jpg

প্রশ্ন পেয়ে আধা ঘন্টার মত খাতায় লিখেছি, এমনি আমার মেয়ের কান্নার আওয়াজ শুনলাম। বাবুর কান্নার আওয়াজ শুনে আর কি লেখা যায়। পরিক্ষা কেন্দ্রে থেকে বাহির হয়ে বাবুর কাছে গেলাম। তার কান্না থামানো গেলেও তাকে আর আমার ছোট বোনের কোলে দেওয়া যাচ্ছে না। অনেক জোড়াজুড়ি করেও আর কারো কোলে দেওয়া গেলো না। এমনটি কলেজের কয়েকজন মেডামও চেষ্টা করেছে, বাবুকে কোলে নিতে। কিন্তুু সে কারো কোলে যাবে না। অবশেষে আমাদের ডিপার্টমেন্টের প্রধান হেড স্যারের কাছে অনুমতি নিয়ে আমাকে পরিক্ষার খাতাটা দিয়ে দিলেন। আর বললেন বাড়িতে প্রশ্নর উত্তর লিখে পরের দিন দশটার আগে যেন জমা দিয়ে যায়।

স্যারের এমন সহানুভতি পেয়ে আমি অনেক খুশি হলাম। আমি প্রথম দিন খাতা ও প্রশ্ন নিয়ে বাসায় চলে আসলাম। বাসায় এসে বাবুকে গোসল করিয়ে খাওয়া দাওয়া করিয়ে ঘুম পাড়িয়ে প্রশ্নের উত্তর গুলো লেখার চেষ্টা করলাম। বাবু কি আর ঘুমায়। গরমে অবস্থা খারাপ। বড় মানুষই গরম সহ্য করতে পারছে না। সেই জাগায় বাচ্ছাদের অবস্থা কেমন হবে, চিন্তা করা যায় না। অবশেষে একটু ঘুম পাড়িয়ে একটু উত্তর লিখি। এভাবে প্রথম দিনের পরিক্ষার প্রশ্নের উত্তর লিখে ফেললাম। পরের দিন পবিত্র মিলাদুন্নবীর জন্য কলেজ বন্ধ ছিল। সতের তারিখ সকাল দশটার আগেই স্যারের কাছে খাতাটা জমা দেওয়ার পরে স্যার আবার আরেকটি খাতা ও প্রশ্ন দিলেন। আর বললেন তিনি হেড স্যারের সাথে আমার ব্যাপার কথা বলেছেন। হেড স্যার বলেছে এভাবে সব গুলো পরিক্ষা দিতে।

photo_2024-09-22_15-26-40.jpg

অবশেষে একটু কষ্ট হলেও ধীরে ধীরে আমি পরিক্ষা গুলো দিয়ে শেষ করলাম। পরিক্ষা কেন্দ্রে যাওয়ার আগে বাবু যে আমাকে না দেখে এভাবে কান্না করবে, সেটা বুঝতে পারি নাই। আর স্যার যে এভাবে সহযোগিতা করবে সেটাও বুঝতে পারি নাই। আসলে সবাই তো মানুষ। আমরা যদি মানুষ হিসাবে একজন অপরজনের সমস্যাটা না দেখি, না বুঝি তাহলে তো আমরা মানুষ হিসাবে পরিচয় দিতে পারি না। বাবু যদি কান্না না করতো, তাহলে আমি তো পরিক্ষা কেন্দ্রে বসেই পরিক্ষা গুলো দিতে পারতাম। যায় হোক স্যার আমার সমস্যা টি অনুধাবন করে আমাকে পরিক্ষা গুলো দেওয়ার সুযোগ প্রধানের জন্য স্যারকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জানায়।

বন্ধুরা এই হলো আমার আজকের ব্লগ। আশা করি ব্লগটি সবার কাছেই ভালো লাগবে। আবার আগামীকাল নতুন কোন ব্লগ নিয়ে আপনাদের সাথে হাজির হবো ইনশাআল্লাহ। সবাই ভালো থাকবেন, সবাই সবার জন্য দোয়া করবেন। আমিও সবার জন্য দোয়া করি।

সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ,আল্লাহ হাফেজ।।

ফটোগ্রাফির বিবরণ:

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSj1ATxRsaEvyH89EyziiK3D1ksn1tTDvDwLCveqrhctVcDnDqtNbsqFMtuqD1RetzrgjG.png

ডিভাইসমোবাইল
মডেলরেডমি নোট-৮
শিরোনামশেষ হলো ইনকোর্স পরিক্ষা।
স্থানব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা,বাংলাদেশ।
তারিখ১৫-০৯-২০২৪
কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@titash

2gsjgna1uruv8X2R8t7XDv5HGXyHWCCu4rKmbB5pmEzjYSfQKFP87GjNCaLdCLKkYFWdxRmYuKurkfDpnYWoUUypXiwgziwKKNP24nNC65i32Am8Fp.png

JvFFVmatwWHRfvmtd53nmEJ94xpKydwmbSC5H5svBACH7xbS7ungTbMjNMsQ7fPnm8uUBT2bU8Azf8zCDQrq3tkzHjjCFyraxJQeY79tPTN45w8XxU9wtvaFmWRaLhgHSy5GYKQ6bg.png

আমার পরিচিতি

আমি মোছাঃ মুসলিমা আক্তার নীলা। স্টিমিট প্লাটফর্মে আমি @titash নামে পরিচিত। আমার জন্মস্থান চট্রাগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ভাদুঘর গ্রামে। আমি বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে বাংলা বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি। আমি বিবাহিত,আমার একটি কন্যা সন্তান আছে। আমি আমার হাসবেন্ডের সাথে ঢাকা বিভাগের অন্তর্গত নারায়নগঞ্জ জেলায় বসবাস করছি। আমি আমার হাসবেন্ডের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্ম সম্পর্কে জানতে পারি। প্লাটফর্মটার বিষয়ে জেনে আমি এখানে কাজ করার আগ্রাহ প্রকাশ করি। তারপর ২০২৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারী মাসে আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমে স্টিমিট প্লাটফর্মে যুক্ত হয়। আমি ভ্রমন করতে,মজার মজার রেসিপি করতে,বই পড়তে, নতুন নতুন বিষয় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করতে ও সৃজনশীল জিনিষ তৈরী করতে ভালোবাসি। আমি বাঙ্গালী জাতি হিসাবে ও আমার বাংলা ব্লগের সদস্য হতে পেরে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করি।

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9uuNWjCEgJj5LnknUa3pWA9yop6dT9GDfEUZtz2oDgA9ocMHrCEtkFpngXowo13q8Mn1YvzEMh5bSRg1SNaKSZwbsLwb3YA.png

mCz6aUXpYgcE9hndDxJeFHNCvijWNENnxm5KqcEUM3o1siCoMX3by8iWdE4qYzWA7pZHzh4KthdoHPj2eEciPaXhHTdxhx5dKApkU8hxE3mUrybeUbtQCvbs4JC247APSjksrR6prneL2GBtrunMiz4r5CiYySVGKj1e3nT19qBCX5ekz5F.png

5QqP4NVdsPNcDeePyfoZLTLv8efTACU5P6GADTBgMgfXR7uJx5fN91AE46tFfFA7GwMq22wjUwwY5XDyUBMksyZSJGUEyK1Re6UWVZ1PqVR2ntgu73qAW8iDh6yPt8YVsiJ7enc87gmY874JVVHPQo6hSZvUs47FymTjqs43bSUF1Wvtd8T.jpg

4gZTTLyoV1msFb1u1BdB14ZHSP5sNg8hbP9cbJyTmUqfzL1as2zt5nA5iP9iEBmXtJKZZD3SHGtdFKZ13Up5EmSAxpDYtwYvvxyhsR48F5wdZ6ZhgEKtW9w1csKVawJHrqc3fgSkcpz8WsTY1MvhswZsey8zNe3vkwTdKjCivA3Z6dpaPre.png

image.png

image.png

Sort:  
 7 days ago 

অবশেষে আপনার পরীক্ষা শেষ হলো আপু জানতে পেরে ভালো লাগলো। আসলে পরীক্ষা চলাকালীন একটা টেনশন কাজ করে। কেননা পরীক্ষা মানেই টেনশন এর একটা অন্যরকম রাস্তা। যাইহোক অবশেষে পরীক্ষা শেষ করে আশা করছি এখন একটু ভালো আছেন। তাছাড়া পরীক্ষা চলাকালীন খুব চাপে থাকতে হয়। তবে আপনার জন্য শুভকামনা রইল।