পাবদা মাছের ঝাল রেসিপি
নমস্কার বন্ধুরা, সকলে কেমন আছেন ?আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আজকে নতুন একটা রেসিপি নিয়ে হাজির হয়েছি আপনাদের মাঝে। আশা করি সকলেরই খুব ভালো লাগবে।
বাঙ্গালীদের প্রধান খাবার হল মাছের ঝোল। মাছ ছাড়া আমরা এক মুহূর্ত চলতে পারি না। সেটা যে কোন ধরনের মাছ হতে পারে। সকলের পছন্দ এক হয় না। একেক জন একেক রকম মাছ খেতে পছন্দ করে। তবে মাছের ঝোল যেভাবেই রান্না করা হয় সেভাবেই খেতে খুবই ভালো লাগে। নদীর মাছ ,পুকুরের মাছ বা সমুদ্রের মাছ সকল প্রকার মাছ খেতে আমরা পছন্দ করি। আমি তো মাছ ছাড়া ভাত একদমই খেতে পারি না। আমাদের বাড়ির সকলের মাছ ভীষণ প্রিয়। তবে আমাদের এখানে পাবদা মাছের দাম টা একটু বেশি। অন্যান্য সকল মাছের থেকে বেশি। প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়। তবে ইলিশ মাছের থেকে কম। আসলে এরকম মাছ সচরাচর বাড়িতে রান্না করা হয় না। দামের জন্য সব সময় খাওয়াও সম্ভব হয় না।আমার মামা যেহেতু মাছের আরতে থাকেন ।তাই যেদিন ভালো টাটকা মাছ ওঠে। সেদিন আরত থেকে আমার মামা মাছ এনে দেয়। তবে মামা এনে দিলে সবসময়ই মাছের দামটা একটু কমই নেয়।মাছ দিয়ে বিভিন্ন রকমের রেসিপি তৈরি করা যায় আজ আপনাদের মাঝে শেয়ার করব পাবদা মাছের ঝাল।
নং | সামগ্রী | পরিমাণ |
---|---|---|
১ | পাবদা মাছ | ৬০০ গ্ৰাম |
২ | মাঝারি সাইজের আলু | ৩ টে |
৩ | বেগুন | ২ টো |
৪ | সাদা তেল | ৭৫ গ্ৰাম |
৫ | কালো জিরে | ১ চামচ |
৬ | শুকনো লঙ্কা | ২ টো |
৭ | কাঁচা লঙ্কা | ২০ টা |
৮ | সাদা সরষে | ২ চামচ |
৯ | পোস্ত | ৩ চামচ |
১০ | গোটা জিরে | ১ চামচ |
১১ | লবণ | ২ চামচ |
১২ | হলুদ | ১ চামচ |
প্রথম ধাপ
প্রথমেই পরিমাণ মতো আলু, বেগুন সাইজ করে কেটে রেখে দিয়েছি।
দ্বিতীয় ধাপ
এরপরে পাবদা মাছগুলো ভালো করে কেটে ধুয়ে নিয়েছি। ভালো করে পরিষ্কার করে ধুতে হবে।
তৃতীয় ধাপ
এবারে পাবদা মাছ গুলো ভালো করে লবণ ,হলুদ মাখিয়ে রেখে দিতে হবে।
চতুর্থ ধাপ
এবারে আমি গ্যাস অন করে একটা কড়াই বসিয়ে দিয়েছি। কড়াই গরম হলে কড়াইতে পরিমাণ মতো সাদা তেল দিয়ে দিতে হবে।
পঞ্চম ধাপ
কড়াইয়ের তেল গরম হলে একটা একটা করে মাছ তেলে দিতে হবে। গরম তেলে মাছ দেওয়ার সময় সবসময় ঢেকে দিতে হবে। না হলে মাছের তেল ছিটকাতে পারে। পাবদা মাছ তেলে দিলেই তেল ছিটকায়। তাই আমি মাছ ঢাকা দিয়ে ভেজে নিয়েছি। মাছ ভাজা হয়ে গেলে সমস্ত ভাজা মাছগুলো একটা পাত্রে তুলে রাখতে হবে।
ষষ্ঠ ধাপ
এরপরে ওই তেলের মধ্যে শুকনো লঙ্কা আর কালো জিরে দিয়ে দিয়েছি। এবারে প্রথমে বেগুন গুলোকে হালকা করে ভেজে নিয়েছি। বেগুন ভাজার আগেই আমি সামান্য পরিমাণে লবণ ,হলুদ দিয়ে বেগুনগুলো মাখিয়ে রেখেছিলাম। বেগুন ভাজা হয়ে গেলে আলু গুলোকে ভেজে নিতে হবে। ভাজার সময় আমি সামান্য পরিমাণে লবণ ,হলুদ ব্যবহার করেছি।
সপ্তম ধাপ
সমস্ত কিছু ভাজা হয়ে গেলে এবারে আলুর মধ্যে পেস্ট করে রাখা সমস্ত মসলা দিয়ে দিতে হবে। মসলার মধ্যে আমি এখানে ব্যবহার করেছি কাঁচা লঙ্কা ,সাদা সরষে, পোস্ত ,গোটা জিরে সমস্ত কিছুই পেস্ট করে নিয়েছিলাম।
অষ্টম ধাপ
এবারে সমস্ত মসলা দিয়ে আলু গুলোকে ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে। কষিয়ে নেওয়া হয়ে গেলে পরিমাণ মতো জল দিয়ে দিতে হবে।
নবম ধাপ
এরপর ঝোলটা ভালোভাবে ফুটে উঠলে ঝোলের মধ্যে ভেজে রাখা মাছগুলো একটা একটা করে দিয়ে দিতে হবে।
দশম ধাপ
মাছ দেওয়ার খানিকক্ষণ পর ভেজে রাখা বেগুনগুলো ঝোলের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে।
তৈরি
এইভাবে খানিকক্ষণ ফুটিয়ে নামিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে বেগুন দিয়ে পাবদা মাছের ঝাল।
খেতে সত্যি খুব অসাধারণ লাগে। আমার তো মনে হয় কোন অনুষ্ঠান বাড়ি স্টাইলে রান্না করার থেকে এইরকম ঘরোয়া ভাবে বাড়িতে তৈরি করে খাওয়া শরীরের পক্ষে অনেক উপকারী। তবে আপনারা চাইলে শুধু পাবদা মাছের ঝাল রান্না করতে পারেন। আমি সাধারণত বাড়িতে তরকারি হিসেবে রান্না গুলো করি। তাই আলু বেগুন সবকিছুর পরিমাণ একটু বেশি। আপনারা সবকিছুই আপনাদের পরিমাণ অনুযায়ী ব্যবহার করবেন। বিশেষ করে ঝালটা আপনাদের স্বাদ অনুযায়ী ব্যবহার করবেন ।আমাদের বাড়িতে সকলেই একটু বেশি ঝাল খায়। তাই আমি এই লঙ্কার পরিমাণটা একটু বেশিই নিয়েছিলাম। এইভাবে খুব সহজেই তৈরি হয়ে যাবে বেগুন দিয়ে পাবদা মাছের ঝাল। এভাবে আপনারা বাড়িতে তৈরি করে ফেলুন নিজেরা খান এমনকি সকলকে রান্না করে খাওয়ান। রান্না করতে আশা করি কোন ঝামেলাই নেই। নিয়মিত আমরা যেভাবে বাড়িতে রান্না করে খাই এই ভাবেই আমি রেসিপিটি শেয়ার করেছি।
আজ এইখানেই শেষ করছি ।আবার নতুন কোন রেসিপি নিয়ে হাজির হব আপনাদের মাঝে।
মাছ আমার একেবারেই প্রিয় নয়, পাবদা মাছের স্বাদ কেমন হয় সেটা আমি জানিও না। তবে যারা মাছ খেতে পছন্দ করে, তারা বলে পাবদা মাছ অনেক বেশি সুস্বাদু। আমাদের বাড়িতে বেশিরভাগ সময় পাবদা মাছ সরষে পোস্ত দিয়ে রান্না করা হয়। তবে আপনি আজ আলু ও বেগুন দিয়ে ঝোল রান্না করেছেন। আশাকরি এই রেসিপিটি খেতেও মন্দ হয় না। পরের দিন পাবদা মাছ আনলে শাশুড়ি মা কে বলবো এভাবে রান্না করে খেয়ে দেখতে। ছবি দেখে মনে হচ্ছে বেশ সুস্বাদু হবে। রেসিপিটির প্রতিটি ধাপ ও উপকরণের বর্ণনা খুব ভালো ভাবে লিখেছেন এই পোস্টে। যেটা দেখে খুব সহজে রেসিপিটি তৈরি করা সম্ভব। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটা রেসিপি শেয়ার করার জন্য। ভালো থাকবেন।